নারিন ঝড়ে চট্টগ্রামের স্বপ্ন শেষ-ফাইনালে খুলনা
খেলাধুলা ডেস্ক : অষ্টম বঙ্গবন্ধু বিপিএলের দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ম্যাচে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে মাত্র ১৩ বলে ফিফটি করে বিপিএল ইতিহাসে দ্রুততম হাফ সেঞ্চুরির রেকর্ড সৃষ্টি করলেন ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডার সুনিল নারিন।
ইনিংসে ৪টি চার আর ৬টি ছক্কায় ৩৫৬ স্ট্রাইকরেটে ১৬ বলে ৫৭ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন তিনি। আর তার ঝড়ো ব্যাটিংয়ে স্বপ্ন শেষ হয়ে গেছে এবারের বিপিএলের তারণ্য নির্ভর দল চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স এর।
চট্টগ্রামের দেওয়া ১৪৯ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ৪৩ বল এবং ৭ উইকেট হাতে রেখে জয় তুলে নেয় কুমিল্লা। চট্টগ্রামকে নাস্তনাবুধ করে উঠে গেছে বিপিএল অষ্টম আসরের ফাইনালে।
আগামী শুক্রবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে বিপিএলের ফাইনালে মাঠে নামবে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।
বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট সেটডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো করেছিল চট্টগ্রাম। তবে চতুর্থ ওভারে এসে ছন্দ পতন চ্যালেঞ্জার্সের। শহিদুল ইসলামের করা ওই ওভারেই উইল জ্যাকস ৯ বলে ১৬ রান করে ফেরেন।
৩১ রানে প্রথম উইকেটের পতন ঘটে চট্টগ্রামের। এরপর তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে চট্টগ্রামের ব্যাটিং লাইনআপ। পঞ্চম ওভারে চ্যাডউইক ওয়াল্টনকে তুলে নেন তানভির ইসলাম। এরপর এক ওভারে দুই উইকেট শিকার করেন মঈন আলী।
ওয়াল্টন ৩ বলে ২ রান করে ফেরেন দলীয় ৩৯ রানে। এরপর ষষ্ঠ ওভারে মঈন আলী তুলে নেন জাকির হাসান এবং শামিম হোসেনকে। জাকির ১৯ বলে ২০ আর শামিম ফেরেন রানের খাতা খোলার আগেই।
এরপর অধিনায়ক আফিফ হোসেন ১০ বলে ১০ রান করে যখন ফিরলেন তখন ৮ ওভারে চট্টগ্রামের রান সংখ্যা ৫০। এরপরেই পাল্টে যায় দৃশ্যপট। মেহেদি হাসান মিরাজ এবং আকবর আলীর ব্যাটে ভর করে ম্যাচে ফিরতে থাকে চট্টগ্রাম।
১৫তম ওভারে আকবর যখন ২০ বলে ৩৩ রান করে ফিরছেন তখন স্কোরবোর্ডে চট্টগ্রামের রান সংখ্যা ১১১। পরের ওভারেই বেনি হাওয়েল ৫ বলে ৩ রান করে ফেরেন। আর ১৯ তম ওভারে অর্ধশতক থেকে মাত্র ৬ রান দূরে থাকতে মিরাজ ফেরেন শহিদুলে ইসলামের বলে।
শেষ দিকে মৃত্যঞ্জয় ৯ বলে ১৫ রান করলেও চট্টগ্রাম ১৯.১ ওভারে ১৪৮ রানে অলআউট হয়। চট্টগ্রামের ১৪৮ রানের জবাব দিতে নেমে ব্যাটিং আর্ডারে উলট-পালট এনেছে কুমিল্লা। মাহমুদুল হাসান জয়ের বদলে ওপেনিংয়ে লিটন দাসের সঙ্গে নারিনকে পাঠায় দলটি।
পাওয়ার প্লে’তে প্রতিপক্ষের বোলিং আক্রমণকে গুড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যেই যে নারিনকে টপ অর্ডারে পাঠানো হয়েছিল সেটা বুঝাই যাচ্ছিল। ক্যারিবিয়ান তারকা সেটা করেও দেখালেন নিদারূনভাবে।
ইনিংসের প্রথম বলেই লিটন ফিরলেও পরিকল্পনায় অটুট থেকেছেন নারিন। তিনে নামা ইমরুল কায়েসকে নিয়ে অপরপ্রান্ত থেকে চট্টগ্রামের বোলিং ডিপার্টমেন্টকে স্রেফ কচুকাটা করতে চেয়েছেন ক্যারিবিয়ান তারকা।
১৩তম বলে মৃত্যুুঞ্জয় চৌধুরীকে গ্যালারিতে আছড়ে ফেলে ফিফটি পূর্ণ করতে ছক্কা মেরেছেন ৬টি, আর চার হাঁকিয়েছেন ৪টি। অর্থাৎ ফিফটি পর্যন্ত দৌড়ে রান নেননি ক্যারিবিয়ান তারকা। শেষ পর্যন্ত ফিরেছেন ১৬ বলে ৫৭ রান করে।
নারিন যখন ফিরছেন তখন কুমিল্লার স্কোরবোর্ডে ৫.৪ ওভারে ৭৯ রান। এরপর ফাফ ডু প্লেসিসকে সঙ্গে নিয়ে বেশিদূর এগোতে পারেননি ইমরুল কায়েস।
২৪ বলে ২২ রান করে ইমরুল ফিরলে উইকেটে আসেন মঈন আলী। ইমরুল যখন ফিরছেন তখনও জয়ের জন্য কুমিল্লার দরকার ৫৪ রান। উইকেটে তখন ফাফ ডু প্লেসিস এবং মঈন আলী। বাকি কাজটা এই দুই ব্যাটার করলেন অনায়াসে।
মঈন আলী ১৩ বলে ৩০ রান আর ডু প্লেসিস ২৩ বলে ৩০ রান করে দলকে জয় এনে দিয়েই মাঠ ছাড়েন। ১২.৫ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ১৪৯ রান তুলে ফেলে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। চট্টগ্রামের হয়ে একটি করে উইকেট নেন শরিফুল ইসলাম, মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী এবং বেনি হাওয়েল।
চখ/আর এস