chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

সেই মিনুর সন্তাদের পাশে কেএসআরএম, দিল ৫ লাখ টাকা

চট্টলা ডেস্ক:অন্যের হয়ে জেল খাটার পর সড়ক দুর্ঘটনায় মর্মান্তিক মৃত্যুর শিকার মিনুর অসহায় পরিবারের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন  দেশের অন্যতম ইস্পাত নির্মাণ শিল্প প্রতিষ্ঠান কেএসআরএম। তার সন্তানদের ভরণপোষণের জন্য প্রতিষ্ঠানটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমানের হাতে পাঁচ লাখ টাকার হস্তান্তর করেছেন।

কেএসআরমের পক্ষে প্রতিষ্ঠানটির গণমাধ্যম উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম এই চেক হস্তান্তর করে। এসময় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) সুমনী আক্তার।

হস্তান্তরের  চেক পেয়ে ভূয়সী প্রশংসা করে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান বলেন, কেএসআরএমের এই মহত্ত্ব অনুকরণীয়। মিনুর সন্তানদের তেমন কোনো অভিভাবক নেই। মামা থাকলেও ভরসা পাওয়া যাচ্ছিল না। তারা যেন কোনো সুবিধা থেকে বঞ্চিত না হয়। এই টাকা তাদের নামে ফিক্সড ডিপোজিট করে রাখা হবে।

এডিএম সুমনী আক্তার বলেন, ‘দুই শিশুকে এসওএস শিশু পল্লীতে ভর্তি করানোর প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।  সেখানে অনাথ শিশুদের পড়ালেখা ও ভরণপোষণে টাকার প্রয়োজন হয় না। তাই কেএসআরএম থেকে দেওয়া অর্থ ওই শিশুদের নামে ব্যাংকে রাখা হবে।

কেএসআরএমের গণমাধ্যম উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম বলেন, ‘বিভিন্ন গণমাধ্যমে হতভাগ্য মিনু ও তার সন্তানদের দুর্দশা ও ভাগ্য বিড়ম্বনার কথা জেনে প্রতিষ্ঠানের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার জাহান রাহাত আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন তাদের ভরণপোষণের দায়িত্ব নেওয়ার। সেই হিসেবে জেলা প্রশাসকের কাছে দুই সন্তানের জন্য অনুদানের চেক হস্তান্তর করা হয়েছে।

 

জানা যায়, হতভাগ্য মিনু আক্তার তার তিন সন্তানের ভরণপোষণের আশ্বাসে অন্যের হয়ে কারাগারে যান। কথা ছিল অল্পদিনের মধ্যে মুক্তি পাবেন। কিন্তু প্রায় তিন বছর অতিবাহিত হলে বিষয়টি জানাজানি হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আইনজীবীসহ কিছু মহানুভব মানুষের প্রচেষ্টায় দীর্ঘ আইনী প্রক্রিয়া শেষে মিনু গত বছরের ১৬ জুন কারাগার থেকে মুক্তি পান।

এর মধ্যে মারা যায় মিনুর কন্যা সন্তান জান্নাত। কারামুক্তির ১৩ দিনের মাথায় রহস্যজনক সড়ক দুর্ঘটনায় জীবন থেকে মুক্তি পান মিনু। গেল ২৮ জুন দিবাগত রাতে চট্টগ্রাম নগরের বায়েজিদ বোস্তামী ফৌজদারহাট সংযোগ সড়কের আরেফিন নগর এলাকায় মিনুকে গাড়ি চাপা দেওয়া হয়। এতে গুরুতর আহত হন তিনি।

খবর পেয়ে পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান। সেখানে ২৯ জুন ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মিনু। কোনো পরিচয় না পাওয়ায় এক দিন পরে অজ্ঞাত হিসেবে তাঁর লাশ দাফন করে আঞ্জুমান মফিদুল ইসলাম।  পরে পুলিশ ও পরিবার নিশ্চিত হয় যে অজ্ঞাত হিসেবে দাফন করা লাশটি মিনুর।

 

এরই মধ্যে মিনুর বড় ছেলে অর্থাভাবে চাকুরি নেয় ষোলশহর চায়ের দোকানে। মিনুর মৃত্যুর পর রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয় বড় ছেলে ইয়াসিন। বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে ফলাও করে সংবাদ প্রকাশ হলে টনক নড়ে প্রশাসনের। পুলিশের তৎপরতায় খোঁজ মেলে নারায়নগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ শিশু কিশোর সংশোধনাগারে।

আরকে/চখ

এই বিভাগের আরও খবর