chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

করোনা বাড়লেও, মাস্ক তৈরিতে অনীহা পোশাক কারখানার

নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রামে লাগামহীনভাবে বেড়ে চলছে করোনা সংক্রমণের হার। এমন দৃশ্যপটে গেল দু বছরে মাস্ক উৎপাদন ও রপ্তানি করেই কোটি কোটি টাকা বৈদিশিক মুদ্রা অজর্ন করেছে দেশের পোশাক কারখানাগুলো। তবে চলতি বছরেও করোনার ভয়াবহ রেশ থাকলেও, মাস্ক উৎপাদনে আগ্রহী নন অধিকাংশ কারখানার মালিকরা।

এর পেছনে রপ্তানি হওয়া দেশগুলোতে করোনা ভ্যাকসিনের আওতায় আনার যুক্তি দেখাচ্ছেন পোশাক কারখানার মালিকরা। এ কারণেই সুরক্ষা সামগ্রীর বদলে অন্যান্য অর্ডারের কার্যাদেশ নিচ্ছেন তারা।

গেল বছরে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে বিজিএমইএর এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছিল, বর্তমানে বিজিএমই এর সদস্যভুক্ত ৬৯৭ টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বন্ধ রয়েছে ৩৮৯ টি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে ৩০৮ টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মাত্র ১৯০ টি প্রতিষ্ঠান আমদানি-রপ্তানিতে সম্পৃক্ত রয়েছেন। করোনা মহামারির কারণে ২০২০ সালের মার্চ থেকে আগস্ট মাসের মধ্যে ঢাকায় ২৮১ টি এবং চট্টগ্রামে ৩০ টি পোশাক শিল্প প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে পড়ে। চালু থাকা এসব প্রতিষ্ঠানের গুটি কয়েক মাস্ক উৎপাদনে বিনিয়োগ করেছেন।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো তথ্য বলছে, ২০২০ সালে মার্চ থেকে জুলাই মাসে ২ কোটি ৬৯ লাখ ডলারের (২২৯ কোটি টাকা) মাস্ক রপ্তানি হয়েছে। এর আগের বছরের একই সময়ে রপ্তানি হয়েছিল ২৭ লাখ ডলারের (২৩ কোটি টাকা) মাস্ক। সর্বমোট গেল দুই বছরে ২ কোটি ৩০ লাখ ডলারের মাস্ক বাংলাদেশ রপ্তানি করেছে।

এসব সুরক্ষা সামগ্রীর মধ্যে পিপিই গাউন ও মাস্ক রপ্তানির বড় সম্ভাবনা দেখা দেয়। পিপিই গাউনে দু-একটি প্রতিষ্ঠান বাইরে অন্যরা তেমন সুবিধা করতে পারেনি। এমনকি উদ্যোক্তাদের সঠিক সিদ্ধান্তের অভাবে সুরক্ষা সামগ্রীর বড় বাজারে দখলে নেয় চীন, শ্রীলঙ্কা, ভিয়েতনামের মতো দেশ। তবে মধ্যপাচ্যের সংযুক্ত আরব আমিরাত সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হয়েছে।

দেশটিতে সর্বোচ্চ ৩ কোটি ১৭ লাখ ডলারের (প্রায় ২৮৫ কোটি) ফেস কভার, ওভেন ও সার্জিক্যাল মাস্ক রপ্তানি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিজিএমইর প্রথম সভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, আলহামদুলিল্লাহ করোনা প্রকোপ বাড়লেও চট্টগ্রামের প্রতিটি কারখানা ধারণ ক্ষমতার চেয়ে বেশি পোশাক রপ্তানির অর্ডার পাচ্ছেন। কিন্তু ইউরোপের অধিকাংশ দেশগুলোতে মাস্কসহ অন্যান্য সুরক্ষা সামগ্রীর ব্যবহার কমে এসেছে। বুস্টার ডোজসহ পুরো করোনা ভ্যাকসিনের আওতায় এসেছে। মাঝখানে করোনা পরিস্থিতি অনেকটা ভালো হয়ে গিয়েছিল। উদ্যোক্তারা সেভাবে প্রস্তুত ছিল না। আর কিছু কারখানা তৈরি করলেও বড় আকারে না। দেশীয় চাহিদা মেটাতে মাস্ক প্রস্তুত করছে। এরপরও আমরা সার্বিক বিষয়ে চিন্তা করে কার্যাদেশ নেওয়ার চেষ্টা করছি।

আর চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাহবুবুল আলম প্রতিযোগিতামূলক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে পোশাক কারখানার মালিকদের উদ্যোগী হওয়ার তাগিদ দিয়েছেন।

এদিকে চট্টগ্রামের করোনা পরিস্থিতি দিনকে দিন নাজুক হচ্ছে। আক্রান্তের সংখ্যা ওঠা নামা করলেও বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যা। বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য মতে, সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ১২১ জন করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন। এছাড়া করোনায় আক্রান্ত হয়ে উপজেলায় ২ জন মারা গিয়েছেন। এর আগে গত বুধবার ২৪ ঘণ্টায় ১ হাজার ৪৫৫ জন করোনায় আক্রান্ত হন। একই সঙ্গে শহর ও উপজেলায় মারা যান দুই জন।

আরকে/নচ/চখ

এই বিভাগের আরও খবর