chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

ভোজ্য তেলের দাম বাড়াতে তৎপর ব্যবসায়ীরা, ক্ষুব্ধ ক্রেতারা

নিজস্ব প্রতিবেদক: বছরের শুরুতেই ভোজ্য তেলের দাম বাড়াতে তৎপর হয়ে উঠেছেন ব্যবসায়ীরা। লিটার প্রতি ৮ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাবও করে ফেলেছেন তারা। আগামী শনিবার (৮ জানুয়ারি) থেকে নতুন দাম কার্যকর করতে চাইলেও তাতে আপাতত সাড়া দেয়নি বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন।

আজ বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারি) ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এক বৈঠকে অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের (চিনি ও ভোজ্যতেল) মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতি সংশোধন ও ব্যয় বিবরণী হালনাগাদ করণের লক্ষ্যে গঠিত কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এর আগে আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের দাম বৃদ্ধির কারণ দেখিয়ে দেশের বাজারে সয়াবিনের দাম লিটার প্রতি ৮ টাকা পর্যন্ত বাড়ানোর প্রস্তাব করেছেন বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন।

এদিকে নানা অযুহাতে দফায় দফায় তেলের দাম বাড়ায় ক্ষুব্ধ সাধারণ ক্রেতারা। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমলে সেটির কোনো প্রভাব বাংলাদেশের বাজারে পড়েনা বলে অভিযোগ ক্রেতাদের।

নগরীর ২ নং গেট, বহদ্দারহাট, মুরাদপুর, চকবাজার, কাজির দেউরি ও পাহাড়তলীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায় বর্তমানে বোতলজাত সয়াবিন তেল ব্রান্ড ভেদে লিটার প্রতি ১৫০-১৬০ টাকা। প্রতি ৫ লিটারের বোতল ৭৪০-৭৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে লিটার প্রতি ১২০-১৩৫ টাকার মধ্যে।

খুচরা বিক্রেতারা জানান, শনিবার থেকে দাম আরো বাড়তে পারে। তবে কেন দাম বাড়ছে সেটি আমরা বলতে পারবোনা। তেলের দাম বাড়ার উপর খুচরা ক্রেতাদের কোন হাত নেই।

পাইকাররা জানান, তেল আমদানিতে জাহাজ ভাড়া বৃদ্ধির অজুহাতে তেলের দাম বাড়ানো হচ্ছে। সিন্ডিকেটের কারসাজিতে বাজারদর উঠানামা করছে।

বহদ্দারহাটে বাজার করতে আসা বেসরকারি কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আদনান চট্টলা খবর’কে বলেন, নিত্য প্রয়োজনীয় সবকিছুরই দাম আকাশ ছোঁয়া। আমরা এসবে সয়ে গেছি। চাল-ডাল, চিনি, সবজি, সবকিছুই আমরা উচ্চমূল্যে কিনতে বাধ্য হচ্ছি। আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমলো শুনলাম কিন্তু এখানে কেন বাড়ানো হচ্ছে তা আমার বুঝে আসছেনা।

সরকারি চাকরিজীবী মাহমুদুল হক বাজার করতে এলেন ২ নং গেটের কর্ণফুলী মার্কেটে। জানতে চাইলে তিনি চট্টলার খবর’কে বলেন, আজ বাজার করতে এসে শুনলাম তেলের দাম আবার বাড়ছে। এভাবে একটার পর একটা জিনিসপত্রের দাম বাড়লে আয়ের তুলনায় ব্যয় বেড়ে যাবে। অল্প আয়ের সরকারি চাকরি সংসার চালাতেতো হিমশিম খেতে হবে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত বছরের জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত মোট ছয়বার বেড়েছে ভোজ্যতেলের দাম। যেখানে গত বছরের জানুয়ারিতে খুচরাতে লিটার প্রতি বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ছিল ৯০-১০০ টাকার মধ্যে। সেটি চলতি বছর জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে এসে দাড়িয়েছে ১৫০-১৬০ টাকার মধ্যে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (আমদানি অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য) এ এইচ এম শফিকুজ্জামান বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের দাম বৃদ্ধির কারণ দেখিয়ে দেশের বাজারে রিফাইনারি অ্যাসোসিয়েশন ভোজ্যতেলের দাম বাড়ানোর আবেদন করেছে। তবে সরকার এখনও ভোজ্যতেলের দাম বাড়ায়নি। যাচাই বাছাই করে এ ব্যাপারে পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

তিনি আরো বলেন,আমরা ভোজ্যতেলের দাম নির্ধারণ পদ্ধতি রিভিউ করছি। আগামী মঙ্গলবার কমিটির সদস্যরা রিফাইনারি বড় কোম্পানিগুলোর কারখানা পরিদর্শনে যাবে। সেখানে তারা আমদানি মূল্য, প্যাকেজিং খরচসহ অন্যান্য খরচ পর্যালোচনা করবে। এরপর আমরা দাম নির্ধারণ পদ্ধতি ঠিক করবো। তারপর আমরা বসে তেলের দাম ঠিক করবো।

জেএইচ/চখ

এই বিভাগের আরও খবর