chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

লঞ্চে আগুন: আরও দুই চালক কারাগারে

আইন-আদালত : ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে আগুন লাগার ঘটনায় আরও দুই চালককে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

দুর্ঘটনার সময় কর্তব্যে অবহেলার অভিযোগে করা মামলায় আজ রবিবার নৌ-আদালতের বিচারক স্পেশাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জয়নাব বেগম তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এর আগে দুজনই আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। আদালত তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

কারাগারে পাঠানো দুই চালক হলেন লঞ্চের ইনচার্জ চালক মাসুম বিল্লাহ ও দ্বিতীয় চালক আবুল কালাম। রাষ্ট্রপক্ষে নৌপরিবহন অধিদফতরের প্রসিকিউটিং অফিসার বেল্লাল হোসাইন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

নৌপরিবহন অধিদফতরের প্রসিকিউটিং অফিসার বেল্লাল হোসাইন আসামিদের জামিনের বিরোধিতা করে বলেন, ইঞ্জিনরুমের সার্বিক দায়িত্ব ইঞ্জিন চালকদের ওপর বর্তায়।

তারা কেবল দায়িত্বে অবহেলাই করেনি, অগ্নিকাণ্ডের পর তাদের ভূমিকা ছিল ধৃষ্টতাপূর্ণ ও পলায়নপর। ইঞ্জিনরুম থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে প্রাথমিকভাবে জানা যায়।

তারা যদি দায়িত্বশীলতার সঙ্গে তদারকি করে সঠিকভাবে ইঞ্জিনরুম পরিচালনা করতো তাহলে হয়তো স্মরণকালের এই ভয়াবহ ট্যাজেডি ঠেকানো যেত। কিন্তু তারা অর্পিত দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেননি।

আসামিরা দুর্ঘটনা প্রতিরোধে সাধ্যমতো চেষ্টা করেও সফল হননি। এতে তাদের অবহেলা ছিল না বলে আসামিপক্ষের আইনজীবী জাহাঙ্গীর হোসেন দাবি করেন।

এর আগে ২৮ ডিসেম্বর নৌ-আদালতের বিচারক স্পেশাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জয়নাব বেগমের আদালতে লঞ্চের ইনচার্জ মাস্টার রিয়াজ সিকদার ও দ্বিতীয় মাস্টার খলিলুর রহমান আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। আদালত তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

গত ২৬ ডিসেম্বর স্পেশাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জয়নাব বেগমের নৌ-আদালতে নৌ-অধিদফতরের প্রধান পরিদর্শক শফিকুর রহমান স্পেশাল মেরিন আইনের ৫৬/৬৬ ও ৭০ ধারায় আটজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। আদালত মামলা আমলে নিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।

আসামিরা হলেন লঞ্চের মালিক প্রতিষ্ঠান মেসার্স আল আরাফ অ্যান্ড কোম্পানির চার মালিক মো. হামজালাল শেখ, মো. শামিম আহম্মেদ, মো. রাসেল আহাম্মেদ ও ফেরদৌস হাসান রাব্বি, ইনচার্জ মাস্টার মো. রিয়াজ সিকদার, ইনচার্জ চালক মো. মাসুম বিল্লাহ, দ্বিতীয় মাস্টার মো. খলিলুর রহমান এবং দ্বিতীয় চালক আবুল কালাম।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ২৩ ডিসেম্বর আনুমানিক সন্ধ্যা ৬টার দিকে সদরঘাট থেকে যাত্রী নিয়ে এমভি অভিযান-১০ বরগুনার উদ্দেশে ছেড়ে যায়।

লঞ্চটি ঝালকাঠির নলছিটি থানা এলাকা অতিক্রম করার পর রাত আনুমানিক ৩টায় ইঞ্জিনরুমে আগুন লাগে। পরে ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীর লঞ্চঘাটের আগে জাহাজে থাকা যাত্রীদের অনেকে নদীতে লাফ দেন। আগুনে কেবিনসহ সবই পুড়ে যায়।

ইনচার্জ মাস্টার, ইনচার্জ ড্রাইভার ও সেকেন্ড ড্রাইভার আগুন নিয়ন্ত্রণের পদক্ষেপ না নেওয়ায় ৪২ জন যাত্রী পুড়ে মারা যান। আনুমানিক শতাধিক যাত্রী দগ্ধ হন। তাদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। নৌযানটিতে পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র, লাইফ বয়া, বালুর বাক্স ও বালতি ছিল না।

ইঞ্জিনরুমের বাইরে অননুমোদিতভাবে অনেকগুলো ডিজেলবোঝাই ড্রাম ও রান্নায় ব্যবহৃত গ্যাস সিলিন্ডার ছিল বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।

চখ/আর এস

এই বিভাগের আরও খবর