chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

শত্রুর বুলেট-বোমার পরোয়া করি না আমি: প্রধানমন্ত্রী

চট্টলা ডেস্ক: দেশ ও দেশের মানুষকে ভালোবাসলে, স্বাধীনচেতা হলে অনেক বাধা আসে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি জানি অনেক বুলেট-বোমা-গ্রেনেড আমার জন্য অপেক্ষা করে আছে। আমি সেগুলো নিয়ে কখনো পরোয়া করি না।’

রোববার (২ জানুয়ারি) সকালে ‘জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ কর্তৃক বাংলাদেশকে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের স্বীকৃতি প্রদান’র আনুষ্ঠানিকভাবে উদযাপন অনুষ্ঠানে (ভার্চুয়াল) এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেন তিনি।

সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমি জানি স্বাধীনচেতা হলে অনেক বাধা আসে। আর দেশকে ভালোবেসে, শুধু দেশের মানুষের কথা চিন্তা করে যারা পথ চলে—তাদের পথচলা কখনো সহজ হয় না। অনেক বাধা অতিক্রম করতে হয়।’

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সপরিবারে নিহত হন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সে সময় দেশের বাইরে থাকায় সৌভাগ্যক্রমে প্রাণে বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। বঙ্গবন্ধু নিহত হওয়ার পর দীর্ঘদিন বিদেশে নির্বাসিত জীবন কাটানোর পর ১৯৮১ সালে দেশে ফিরে আসেন শেখ হাসিনা। পরবর্তীকালে বিভিন্ন সময় শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা চালায় দুর্বৃত্তরা। এর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা হয় ২০০৪ সালে। সেই গ্রেনেড হামলায় তিনি প্রাণে বাঁচলেও নিহত হন আওয়ামী লীগের ২৪ জন নেতাকর্মী।

সব বাধা অতিক্রম করে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘চলার পথ যত অন্ধকারাচ্ছন্ন, বন্ধুর বা কণ্টকাকীর্ণই হোক না কেন—আমরা থেমে থাকবো না। যত রক্তক্ষরণ হোক সব পদদলিত করে বাংলাদেশের জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনে এগিয়ে যাবো। এটাই হচ্ছে আমার প্রতিজ্ঞা। ’

এসময় মার্কিন কবি রবার্ট ফ্রস্টের বিখ্যাত একটি কবিতার কয়েকটি লাইন উদ্ধৃত করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমি কবির ভাষায় বলতে চাই যে, The woods are lovely, dark and deep, But I have promises to keep, And miles to go before I sleep, And miles to go before I sleep.’

সহযোগীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য কাজ করি। আর যারা সহযোগী, আমার সঙ্গে আছেন—তাদের কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাই। তারা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে কাজ করে যাচ্ছেন।’

তিনি বলেন, ‘আমার দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, আমাদের সহযোগী সংগঠন, বাংলাদেশের জনগণ এবং যারা আমার সঙ্গে আছেন; তাদের সবাইকে আমি ধন্যবাদ জানাই। উন্নয়ন সহযোগীদেরও ধন্যবাদ জানাই।’

নতুন প্রজন্ম দেশের অগ্রগতি অব্যাহত রাখবে আশা প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমার যে লক্ষ্য, যেটা আমার বাবা, আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লক্ষ্য ছিল, আমাদের সেই লক্ষ্য অর্জন করতেই হবে। সেই লক্ষ্য অর্জনের জন্য এগিয়ে যেতে হবে। নতুন প্রজন্ম এই বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। সেটাই আমাদের আশা, সেভাবেই তাদের তৈরি করতে চাই। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যেন এই চলার গতিটা ধরে রাখতে পারে।’

নতুন প্রজন্মকে দেশপ্রেমিক হওয়ার আহ্বান জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘নতুন প্রজন্মের কাছে এটাই আমাদের দাবি, অন্তত আমি তাদের এইটুকু আহ্বান করবো- দেশকে ভালোবাসবে, মানুষকে ভালোবাসবে, দেশের মানুষের জন্য কাজ করবে। সেখানেই শান্তি, সেখানেই অগ্রগতি, সেখানেই উন্নতি, সেখানেই স্বস্তি। আর বাংলাদেশের এই চলা অব্যাহত থাকুক।’

বাংলাদেশ বিশ্ব দরবারে সম্মানের সঙ্গে মাথা উঁচু করে চলবে আশা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বিজয়ী জাতি, মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন করেছি। বিশ্ব দরবারে বিজয়ী জাতি হিসেবে সম্মান নিয়ে মাথা উঁচু করে আমরা চলবো। চিরদিন কেউ বাঁচে না। কিন্তু যে কাজ আমরা করে গেলাম, সেই গতি যেন হারিয়ে না যায়। চলার গতি যেন অব্যাহত থাকে। বাংলাদেশ যেন এগিয়ে যায়। এটাই আমরা চাই।’

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে গণভবন প্রান্তে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র প্রান্তে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকসহ সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

জেএইচ/চখ

এই বিভাগের আরও খবর