chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

চবির সাত ছাত্রলীগ কর্মীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার

নিজস্ব প্রতিবেদক : সংঘর্ষ ও বিশৃঙ্খলায় জড়িত থাকার দায়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শাখা ছাত্রলীগের বহিষ্কার হওয়া ১২ ছাত্রলীগ কর্মীর মধ্যে সাতজনের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

চবি প্রশাসন বলছে, ‘মানবিক দিক’ বিবেচনায় তাদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে।

তবে এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বিশ্ববিদ্যালয়ের বহিষ্কারাদেশ দেয়া হেলথ, রেসিডেন্স অ্যান্ড ডিসিপ্লিনারি কমিটির একাধিক সদস্য। তারা জানান, বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের বিষয়ে কোনো বৈঠক হয়নি এবং এ বিষয়ে তারা কিছুই জানেন না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর শহীদুল ইসলাম সাত ছাত্রলীগ কর্মীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার হওয়া সাত ছাত্রলীগ কর্মী হলেন, পরিসংখ্যান বিভাগের ১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের অমিত হাসান আকিব (আকিব জাভেদ), আইন বিভাগের ১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের খালেদ মসুদ, রসায়ন বিভাগের ১৬-১৮ শিক্ষাবর্ষের আশরাফুল আলম নায়েম, অর্থনীতি বিভাগের ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের ইসহাক মিয়া (ফরহাদ), ভাষাবিজ্ঞান বিভাগের ১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের মোহাম্মদ নাইম, সমাজতত্ত্ব বিভাগের ১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম, বাংলা বিভাগের ১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের সাইফুল ইসলাম।

এদের মধ্যে আশরাফুল আলম নায়েমকে এক বছর এবং বাকিদের ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছিল।

এর আগে গত ১৭ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের হেলথ, রেসিডেন্স অ্যান্ড ডিসিপ্লিনারি কমিটির এক সভায় শাখা ছাত্রলীগের দুই পক্ষ ‘সিক্সটি-নাইন’ ও ‘সিএফসির’ ১২ কর্মীকে বহিষ্কার করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

এদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন টিপুর নেতৃত্বাধীন ‘সিক্সটি নাইন’ গ্রুপের ছয়জন এবং বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি রেজাউল হক রুবেলের নেতৃত্বাধীন ‘সিএফসি’ গ্রুপের ছয় কর্মী রয়েছেন।

‘সিক্সটি নাইন’ গ্রুপের বহিষ্কৃতরা হলেন ভাষাবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের মো. নাঈম, একই শিক্ষাবর্ষের বাংলা বিভাগের সাইফুল ইসলাম, রসায়ন বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের আশরাফুল আলম নায়েম, পরিসংখ্যান বিভাগের আকিব জাভেদ, ইতিহাস বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের জুনায়েদ হোসেন জয় ও অর্থনীতি বিভাগের ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের ফরহাদ।

এদের মধ্যে আশরাফুল আলম নায়েমকে এক বছর ও বাকিদের ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছিল।

‘সিএফসি’ গ্রুপের বহিষ্কৃতরা হলেন আইন বিভাগের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের মির্জা খবির সাদাফ, একই বিভাগের ১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের খালেদ মাসুদ, লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের অহিদুজামান সরকার, সমাজতত্ত্ব বিভাগের ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের আরিফুল ইসলাম, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের তানজিল হোসেন ও আরবি বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের তৌহিদ ইসলাম।

তাদের মধ্যে সাদাফকে এক বছর ও বাকিদের ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়।

বহিষ্কারাদেশের চিঠিতে বলা হয়েছে, ক্ষমা চেয়ে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মানবিক দিক বিবেচনায় গত ১৭ অক্টোবর বহিষ্কার হওয়া শিক্ষার্থীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হলো। এর পর থেকে স্বাভাবিক নিয়মে পরীক্ষা ও একাডেমিক কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবেন।

এতে আরও বলা হয়, ভবিষ্যতে বিভাগের একাডেমিক বা পরীক্ষা কার্যক্রমে আপনি (বহিষ্কৃত শিক্ষার্থী) বা আপনার পক্ষের কেউ বিঘ্ন ঘটালে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো প্রকার শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে কোনো প্রকার কারণ দর্শানো ছাড়াই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

১৫ ডিসেম্বর ইস্যু হওয়া সেই চিঠিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও হেলথ, রেসিডেন্স অ্যান্ড ডিসিপ্লিনারি কমিটির সদস্য সচিব ড. রবিউল হাসান ভুঁইয়ার সই ছিল।

হেলথ, রেসিডেন্স অ্যান্ড ডিসিপ্লিনারি কমিটির সদস্য ও খালেদা জিয়া হলের প্রভোস্ট ড. মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম সোহেল এবং প্রকৌশল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. রাশেদ মোস্তফার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের বিষয়ে কোনো বৈঠক হয়নি এবং তারা এ বিষয়ে কিছুই জানেন না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. রবিউল হাসান ভুঁইয়া বর্তমানে দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। ভারপ্রাপ্ত প্রক্টরের দায়িত্বে থাকা শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘কয়েকজন ছাত্র তাদের বিভিন্ন সমস্যার দিক উল্লেখ করে আবেদন করেছে। ক্ষমা চাওয়ায় শর্তসাপেক্ষে তাদের পরিবার ও মানবিক দিক বিবেচনায় সাতজন ছাত্রের বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, তাদের থেকে মুচলেকা নেয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে এই ধরনের ছোট-বড় ঘটনায় জড়ালে কোনো কারণ দর্শানো ছাড়াই ব্যবস্থা নেয়া যাবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক এস এম মনিরুল হাসান বলেন, এ বিষয়ে আমার জানা নেই। এটা হয়তো প্রক্টর অফিস থেকে করা হয়েছে। তবে আমি নিশ্চিত করতে পারব না।

এসএএস/

এই বিভাগের আরও খবর