chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রও আজ হুমকির সম্মুখীন- তথ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক : যাদের দেশে নির্বাচনের ফলাফলকে ভণ্ডুল করার জন্য সংসদে হামলা হয়, সেখানে ঘেরাও করে পুলিশ অফিসারসহ কয়েকজনকে হত্যা করা হয়, তাদের স্পিকারের চেয়ারে বসে ছবি তোলা হয়। যাদের দেশে এই ধরণের ঘটনায় গণতন্ত্র হুমকির সম্মুখীন তাদের অন্য দেশকে গণতন্ত্রের ছবক দেয়ার অধিকার রাখে কিনা এমন প্রশ্ন রেখেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

তিনি বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ক’দিন আগে গণতন্ত্র সম্মেলন হয়েছিল, গণতন্ত্র সম্মেলনে পাকিস্তানসহ অনেককে দাওয়াত করা হলো, কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রও আজ হুমকির সম্মুখীন। কারণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংসদে যেভাবে হামলা ও কয়েকজনকে হত্যা করা হয়েছিল এমন ঘটনা কখনো বাংলাদেশে হয়নি।

বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী ও মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এম এ সালামের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সম্পাদক জসিম উদ্দিন শাহ’র সঞ্চালনায় চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন সহ-সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক মুহাম্মদ মঈনুদ্দিন, আবুল কালাম আজাদ, আবুল কাশেম চিশতি, এটিএম পিয়ারুল ইসলাম প্রমুখ।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আমাদের বন্ধুপ্রতীম রাষ্ট্র, তাদের সাথে আমাদের বহুমাত্রিক সম্পর্ক রয়েছে। জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ দমনেও তাদের সাথে আমাদের সহযোগিতা রয়েছে। তাই আমাদের বন্ধুপ্রতীম রাষ্ট্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধ জানাবো যারা এদেশের স্বাধীনতা চায়নি, এদেশের উন্নয়ন সমৃদ্ধি নিয়ে ঈর্ষান্বিত তাদের কথায় যেন তারা প্রভাবিত ও বিভ্রান্ত না হয়। সেটিই থাকবে আমাদের স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরে এসে মুজিববর্ষে আমাদের পত্যাশা।

তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশ অনেক উন্নত রাষ্ট্রের চেয়েও জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস দমনে সফলতার সাথে মোকাবেলা করতে সক্ষম হয়েছি। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনী, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, পুলিশ র্যাব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আজকে তাদের কয়েকজনের বিরুদ্ধে যেই নিষেধাজ্ঞা এটি আসলে জঙ্গিবাদ সন্ত্রাসবাদকে উস্কে দিচ্ছে, উৎসাহিত করছে।

হাছান মাহমুদ বলেন, আজকে বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণের পথে অদম্য গতিতে এগিয়ে চলেছে। এই অগ্রগতি অনেকের পছন্দ হয় না। আজকে বাংলাদেশ একটি গর্বিত দেশ, স্বাধীনতার পঞ্চাশতম বর্ষে বঙ্গবন্ধুর দেশ রচনা ও শেখ হাসিনার স্বার্থকতা সেখানে, আজকে পাকিস্তান আমাদের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে।

তিনি বলেন, যেই পাকিস্তান স্বাধীনতা অর্জনের পর বলেছিল, বোকা বাঙালি চলে গেছে, ভাল হয়েছে। আমাদের খাটো করে তারা অহংকার করেছে, সেই পাকিস্তান সংশয়ে ছিল আদৌ বাংলাদেশ টিকে থাকতে পারবে কিনা, সেই পাকিস্তান আজ দীর্ঘশ্বাস ফেলে। কারণ সবসূচকে পাকিস্তানকে আমরা পিছনে ফেলেছি।

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শুধু বাংলাদেশ রচনা করে যাননি, বাংলাদেশকে একটি উন্নত সমৃদ্ধ রাষ্ট্রে রূপান্তর করার জন্য চেষ্টা করে গেছেন, কিন্তু তাকে সেই সময় দেয়া হয়নি। তাঁকে যখন হত্যা করা হয়, ১৯৭৪-৭৫ সালে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ছিল ৯.৫৪ শতাংশ। আজ পর্যন্ত আমরা সেই রেকর্ড ভাঙতে পারিনি। আমরা ৮ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছি, কিন্তু ৯ শতাংশের বেশি পারিনি। সেই হারে যদি প্রবৃদ্ধি অর্জন অব্যাহত থাকতো, স্বাধীনতা অর্জনের পর বঙ্গবন্ধু যদি বেঁচে থাকতেন তবে ১০/১৫ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ হতো একটি উন্নত দেশ।

তিনি আরো বলেন, পাকিস্তানের প্রথম স্বাধীনতা দিবস ছিল ১৯৪৮ সালের ১৪ আগস্ট। সেই সময় পাকিস্তানের প্রথম স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে ১২ আগস্ট বঙ্গবন্ধু মুজিব একটি বিবৃতি দিয়েছিলেন। সেই বিবৃতিতে তিনি লিখেছিলেন ১৪ আগস্ট আনন্দ উল্লাসের দিন নয়। বরং উৎপীড়নের নাগপাশ থেকে মুক্তি পাওয়ার শপথ নেওয়ার দিন হিসেবে পালন করার আহবান জানিয়েছিলেন তিনি। কারণ বঙ্গবন্ধু অনুধাবণ করতে পেরেছিলেন, এই পাকিস্তান রাষ্ট্র ব্যবস্থার মধ্যে বাঙালিদের মুক্তি নিহিত নয়।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, মানুষের কাছে সবচেয়ে প্রিয় হচ্ছে তার প্রাণ। বঙ্গবন্ধু বাঙালিকে এমনভাবে উদ্দীপ্ত করেছিলেন মানুষ নিজের প্রাণকে হাতের মুঠোয় নিয়ে দেশের তরে যুদ্ধে গেছেন। জয়বাংলা স্লোগান দিয়ে দেশের জন্য জীবন দিয়েছেন। এটি শুধু ভারতীয় ইতিহাসে নয়, এরকম নেতা বিশ্ব ইতিহাসে বিরল। বঙ্গবন্ধু একটি জনগোষ্ঠিকে এমনভাবে সংগঠিত করতে পেরেছেন, স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনার জন্য মানুষ জীবন দিয়েছে তা বিশ্ব ইতিহাসে বিরল।

এসএএস/জেএইচ/চখ

এই বিভাগের আরও খবর