chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

মিতু হত্যা: তদন্ত সংস্থা পরিবর্তনে শুনানি ১৯ জানুয়ারি

নিজস্ব প্রতিবেদক : চট্টগ্রামের আলোচিত মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলায় তার স্বামী সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের করা মামলার তদন্তকারী সংস্থা পরিবর্তনের আবেদনের শুনানি পিছিয়েছে।

রবিবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আবদুল হালিমের আদালত এ আদেশ দেন।

এ ব্যাপারে বাবুল আক্তারের আইনজীবী শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী বলেন, মিতু হত্যা মামলার বর্তমান তদন্ত সংস্থা পরিবর্তন করে মামলাটি সিআইডি বা র্যাব অথবা অন্য যেকোনও সংস্থাকে দেওয়ার আবেদনের শুনানির জন্য আজ (রবিবার) দিন ধার্য ছিল। আদালত আগামী ১৯ জানুয়ারি পরবর্তী শুনানির জন্য তারিখ রেখেছেন।

এর আগে বাবুলের করা মামলাটি অধিকতর তদন্ত করতে আগের তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দেন আদালত। যদিও এ মামলায় পিবিআইয়ের দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদনটি আদালত গ্রহণ করেননি।

২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি মোড়ে ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় খুন হন চট্টগ্রামে বিভিন্ন জঙ্গিবিরোধী অভিযানের নেতৃত্ব দেওয়া পুলিশ কর্মকর্তা বাবুল আক্তারের স্ত্রী মিতু।

ওইদিন সকাল ৭টায় জিইসি মোড়ের ওয়েল ফুড শোরুমের সামনে মিতুকে ছুরিকাঘাতের পর গুলি করে হত্যা করে পালিয়ে যায় তিন মোটরসাইকেল আরোহী। হত্যাকাণ্ডের তিন সপ্তাহ পর মো. ওয়াসিম ও মো. আনোয়ার নামে দুই আসামিকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

তারা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। দুই জন জবানবন্দিতে বলেন, কামরুল শিকদার ওরফে মুসার নেতৃত্বে হত্যাকাণ্ডে তারা সাত-আট জন অংশ নেন।

বাবুল চট্টগ্রামে দায়িত্ব পালনের সময় মুছা তার ঘনিষ্ঠ সোর্স হিসেবে কাজ করতেন। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজেও তাদের হত্যাকাণ্ডে অংশ নিতে দেখা যায়। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায় মুছা, কালু, ওয়াসিম, আনোয়ার ও নবী সরাসরি কিলিং মিশনে অংশ নিয়েছেন।

হত্যাকাণ্ডের পর বাবুল আক্তার বাদী হয়ে অজ্ঞাত তিন জনকে আসামি করে পাঁচলাইশ থানায় মামলা করেন। বাবুল তখন চট্টগ্রাম থেকে বদলি হয়ে ঢাকায় পুলিশ সদর দফতরে এসপি (পুলিশ সুপার) পদে সংযুক্ত ছিলেন।

মাহমুদা হত্যাকাণ্ডের মোড় ঘুরতে শুরু করে ২০১৬ সালের ২৪ জুন ডিবি কার্যালয়ে বাবুল আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদের পর। এ সময় হত্যাকাণ্ডে বাবুল আক্তারের সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে খবর ছড়িয়ে পড়ে।

এরপর ওই বছরের ৬ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, বাবুলের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে চাকরিচ্যুত করা হলো।

এর আগে একই বছরের ১১ জুন নগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক কাজী রকিবউদ্দিনকে সরিয়ে নগর গোয়েন্দা পুলিশের তৎকালীন সহকারী কমিশনার মো. কামরুজ্জামানকে নতুন তদন্ত কর্মকর্তা নিযুক্ত করা হয়।

এরপর চার বছর পার হলেও চাঞ্চল্যকর এই মামলার কোনও কূল-কিনারা করতে পারেনি তারা। মো. কামরুজ্জামান এ মামলার চার্জশিট দিতে ব্যর্থ হওয়ায় ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে আদালতের নির্দেশে তদন্তভার পায় পিবিআই।

ওই মামলা তদন্ত করতে গিয়ে বাবুল আক্তারের সম্পৃক্তা পায় পিবিআই। গত ১২ মে পিবিআই এই মামলায় ৫৭৫ পৃষ্ঠার চূড়ান্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দেয়। প্রতিবেদনে পিবিআই বলছে, মিতু হত্যা ছিল কন্ট্র্যাক্ট কিলিং।

বাবুল আক্তারের পরিকল্পনায় এটি সংঘটিত হয়। মিতুকে হত্যার জন্য তিন লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে বলে তারা জানান। এরপর একই দিন নগরীর পাঁচলাইশ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন মিতুর বাবা মোশারফ হোসেন।

এসএএস/আর এস

এই বিভাগের আরও খবর