৫ টাকার জন্য বাস থেকে ফেলে দেয়া হয় ওই শিক্ষককে
মাদকাসক্ত ছিলেন চালক-হেলপার
নিজস্ব প্রতিবেদক : বাসে ৫ টাকা বাড়তি ভাড়া আদায় করছিলেন কন্ডাক্টর। এর প্রতিবাদ করায় স্কুল শিক্ষক রহমত উল্লাহকে প্রথমে গালমন্দ করে, পরে মারধর করে চলন্ত বাস থেকে ধাক্কা মেরে ফেল দেন ওই কন্ডাক্টর ও হেলপার। তখন ওই স্কুল শিক্ষক পড়ে গিয়ে আহত হলে বাসের চালক তার উপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে যেতে চেয়েছিল বলে জানিয়েছে র্যাব।
বাসের চালক, কন্ডাক্টর ও হেলপার তিনজনই মাদকাসক্ত ছিল বলে প্রাথমিকভাবে জানিয়েছে র্যাব। আটক তিনজন হলেন- বাসের চালক মো. লিটন (৩২), কন্ডাক্টর মো. হোসেন ও হেলপার কিশোর মো. মহিন (১৩)।
আজ মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে র্যাব-৭ এর চান্দগাঁও ক্যাম্পে এক সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানিয়েছেন র্যাব-৭ এর অধিনায়ক লে. কর্ণেল এম এ ইউসুফ।
তিনি বলেন, গত ২৭ নভেম্বর দুপুরে স্টেশন রোড এলাকায় স্কুল শিক্ষককে চলন্ত বাস থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে হত্যাচেষ্টার মূল ৩ আসামিকে আটক করেছি। মো. মহিনকে নগরীর বায়েজিদ থেকে আটক করা হয় গতকাল দুপুরে। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে চালক লিটনকে কোতোয়ালী এলাকা থেকে আটক করা হয়। পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে অভিযুক্ত প্রধান আসামি বাসের কন্ডাক্টর হোসেনকে বায়েজিদ এলাকা থেকে আটক করা হয়।
তিনি বলেন, আটক আসামিরা স্কুল শিক্ষককে বাস থেকে ফেলে দেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। তারা বলেছেন, ওই স্কুল শিক্ষকের কাছে ৫ টাকা ভাড়া বেশি চাওয়ায় স্কুল শিক্ষক প্রতিবাদ করেন। পরে যখন বাসে যাত্রী কমে যায়, তখন স্কুল শিক্ষককে প্রথমে হেলপার মাহিন পেছনের শার্টের কলার দিয়ে ধরে ফেলে। এরপর বাসের গ্লাস ভেঙেছে বলে অপবাদ দিয়ে গালমন্দ করে। পরে মারধর করে ধাক্কা দিয়ে বাস থেকে ফেলে দেওয়া হয়।
বাস থেকে পড়ে গেলে চালক তার উপর দিয় বাস চালিয়ে দিয়ে চলে যেতে চায়। কিন্তু ঘটনাস্থলে মানুষ তাদের গাড়ি আটক করাতে তারা বাস রেখে পালিয়ে যায়। ঘটনার পরপর তারা তিনজন মোবাইল ফোন বন্ধ করে আত্মগোপনে থাকে। প্রধান অভিযুক্ত মো. হোসেন চকরিয়ায় পালিয়ে যায়। ঘটনা একটু ঠান্ডা হলে পরে চট্টগ্রামে আসে।
এ ঘটনায় ভিকটিমের ছোট ভাই মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিয়েছেন। আসামিদের কোতোয়ালী থানায় হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানান র্যাব-৭ এর অধিনায়ক লে. কর্ণেল এম এ ইউসুফ।
এর আগে গত শনিবার (২৭ নভেম্বর) সকালে নগরীর কোতোয়ালী থানার পুরাতন রেলস্টেশন এলাকায় বাড়তি ভাড়া নেওয়ার প্রতিবাদ করায় রহমত উল্লাহ নামে এক স্কুলশিক্ষককে চলন্ত বাস থেকে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া যায়। আহত রহমত উল্লাহ নগরীর পাঁচলাইশ এলাকার হাবিবউল্লাহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
জানা গেছে, অক্সিজেন এলাকা থেকে সদরঘাটের পিটিআই যাওয়ার জন্য ওই বাসে উঠেন রহমত উল্লাহ। হেলপার ও চালক অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছিলেন। এ ঘটনার প্রতিবাদ করেন স্কুলশিক্ষক। এ নিয়ে চালক ও হেলপারের সঙ্গে তার কথা কাটাকাটি হয়। তিনি স্টেশন রোডের বটতলী এলাকায় নেমে যেতে চাইলে তাকে সেখানে না নামিয়ে কিছুটা সামনে নিয়ে পুরাতন রেলস্টেশন এলাকায় চলন্ত গাড়ি থেকে ফেলে দেয় বাসের হেলপার। এতে তিনি পায়ে ও মুখে আঘাত পান।
এসএএস/এমআই