chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

চট্টগ্রামে বেড়েছে মশার উৎপাত, অতিষ্ঠ জনজীবন

নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রাম নগরীতে দিন দিন বেড়েই চলেছে মশার উৎপাত। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত মশার কামড়ে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন। এতে করে বাড়ছে মশাবাহিত ডেঙ্গুসহ নানা রোগ। বিভিন্ন জায়গায় বাঁধ দিয়ে জলাবদ্ধতা প্রকল্পের কাজ চলায় মশার উৎপাত বেড়েছে বলে দাবি সিটি করপোরেশন কর্মকর্তাদের। অন্যদিকে মশক নিধনে ব্যবহৃত ওষুধের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সচেতন মহল।

চট্টগ্রামসহ সারাদেশে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা চলমান রয়েছে। কয়েকটি স্কুলে বার্ষিক পরীক্ষাও শুরু হয়েছে। আসছে ডিসেম্বরের শুরুতে এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হবে। তাই শিক্ষার্থীরা বাসায় বসে পড়াশোনা করতে হচ্ছে। মশার কামড়ে অতিষ্ঠ হচ্ছে ছাত্র-ছাত্রীরা। এ ছাড়া অফিসে-দোকানে-গাড়িতে বসা যাচ্ছে না মশার জ্বালায়।

নগরীর অপর্নাচরণ স্কুলের শিক্ষার্থী আজমীরি আক্তার নোহা বলেন, করোনার কারণে স্কুল বন্ধ ছিল দেড় বছর। এরপর স্কুল খোলার সঙ্গে সঙ্গে ৮ম শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হয়েছে। শেষ করতে হবে পড়াশোনা। কিন্তু নির্বিঘ্নে টেবিলে বসে পড়ার কোনো উপায় নেই। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত মশার তীব্র উৎপাতে মশারির ভেতরে বসেই পড়তে হচ্ছে।

চকবাজার এলাকার বাসিন্দা মো. জিসান এবার এইচএসসি পরীক্ষায় বসবে। তারও একই কথা, মশার জ্বালায় টেবিলে বসা যাচ্ছে না। মশা দুর করতে কয়েল জ্বালালে তাতেও মশা যায় না। উল্টো শ্বাসকষ্টের সমস্যা হয় নিজের। তাই বাধ্য হয়ে খাটে মশারি টাঙ্গিয়ে পড়তে হচ্ছে। যা খুব কষ্টদায়ক।

বেসরকারি অফিসে চাকরি করেন মোহাম্মদ মাসুম। মোমিন রোডে ভাড়া বাসায় থাকেন। মাসুম বলেন, বাসা ও অফিসে সমান তালে মশার উৎপাত বাড়ছে। দিনে কিছুটা কম হলেও সন্ধ্যা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মশার জ্বালায় বাসা ও অফিসে টিকা যাচ্ছে না। শীতকালেও এত মশার উৎপাত ভাবতেই পারছি না।

মশার উৎপাতে নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডেই অতিষ্ঠ নগরবাসী। নগরীর আনাচে কানাচে, মশার প্রজননস্থল বিভিন্ন নালা-নর্দমায় ও জমে থাকা পানিতে চসিকের মশক নিধন কোনো কার্যক্রম নেই বললেই চলে। কয়েল কিংবা আগুন দিয়ে ধোঁয়ার সৃষ্টি করেও মশার কামড় থেকে রেহাই পাওয়া যাচ্ছে না।

শিশুস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. সুশান্ত বড়ুয়া বলেন, মশার কয়েলের ধোঁয়া, স্প্রে এগুলো শিশুদের জন্য ক্ষতিকর। এমনকি সহ্য করতে না পারলে বড়দের জন্যও ক্ষতিকর। শ্বাসকষ্টসহ নানা উপসর্গ দেখা দিতে পারে। শীতকালে অনেক অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয় মশার কয়েল থেকেই। মশার উপদ্রব থেকে সুরক্ষা পেতে মশারিই সবচেয়ে নিরাপদ।

চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার (রোগ ও নিয়ন্ত্রণ) ডা. মোহাম্মদ নুরুল হায়দার চট্টলার খবরকে বলেন, চট্টগ্রাম জেলায় এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন ১৭৭ জন। এ ছাড়া মৃত্যু হয়েছে ৫ জনের। এদিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এসএম হুমায়ুন কবীর বলেন, বর্তমানে চমেকে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৪৬ জন ডেঙ্গু রোগী। এ পর্যন্ত চমেকে চিকিৎসা নিয়েছেন ২৭১ জন ডেঙ্গু রোগী। তবে চট্টগ্রাম মেডিকেলে ডেঙ্গু রোগে কারো মৃত্যু হয়নি বলে জানান তিনি।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা শেখ শফিকুল মান্নান ছিদ্দিকীর সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি অসুস্থ বলে কল কেটে দেন।

চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের জলাবদ্ধতা প্রকল্পের কারণে বিভিন্ন জায়গায় বাঁধ দেয়ায় পানি জমে থাকে। এতে মশার উৎপাত বাড়ছে বলে দায় এড়ানোর চেষ্টা করেন সিটি করপোরেশনের উপ প্রধান পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা মোরশেদুল আলম চৌধুরী।

এসএএস/এমআই

এই বিভাগের আরও খবর