chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

১৫ শতাংশ বেড়েছে লাইটার জাহাজের ভাড়া

সব ধরনের পণ্যের দাম বৃদ্ধির শঙ্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক: এবার গণপরিবহনের পাশাপাশি বেড়েছে দেশের বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী লাইটার জাহাজের ভাড়া। আগের ভাড়ার সাথে গুনতে হবে আরো ১৫ শতাংশ বেশি ভাড়া। দাম বৃদ্ধির জেরে যাতায়াত খরচও বাড়বে বলে জানালেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। অন্যদিকে, ভাড়া বৃদ্ধির অজুহাতে পণ্যের দাম বাড়াতে পারে এ খাতের আমদানিকরা, এতে বাজারে সবধরনের পণ্যের দাম বৃদ্ধির আশঙ্কা করছেন সাধারণ ক্রেতারা।

জানা যায়, মঙ্গলবার (১৬ নভেম্বর) ঢাকায় নতুন দামের সঙ্গে লাইটারের ভাড়া বৃদ্ধি সমন্বয় করতে বৈঠকে বসেন কন্টেইনার শিপ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, কোস্টাল শিপ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ ও কার্গো ভ্যাসেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনসহ ছাড়াও বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা। সেখানে ১৫ শতাংশ হারে বাড়ানো হয় লাইটার জাহাজের ভাড়া।

লাইটার জাহাজের মাস্টার মি. মিজানুর রহমান চট্টলার খবরকে বলেন, গত সপ্তাহে ৫০ হাজার টন সিমেন্টের কাঁচামাল ঢাকায় পৌঁছে দিয়েছিলাম আমি। মাসে সাধারণত এক থেকে দুটি রুটে মালামাল নিয়ে যাই। ঢাকায় মাল দিয়ে আসতে ৪ হাজার লিটার ডিজেলের প্রয়োজন পড়ে। ভাড়া বৃদ্ধির কারণে লাইটার জাহাজের যাতায়াত খরচ বেড়ে যাবে কয়েকগুন। সেই খরচ পুষিয়ে নিতে মালামালের দাম কয়েক দফা বেড়ে যাবে। আমদানিকারকরাও এই সুযোগে কাজে লাগাবে। এতে শ্রমিকরাও বেতন বাড়ানোর দাবি জানাবেন বলে মনে করেন মি. মিজানুর রহমান।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ লাইটার জাহাজ শ্রমিক ইউনিয়নের চট্টগ্রাম বিভাগীয় নির্বাহী পরিচালক মাহবুবুল হক চট্টলার খবরকে বলেন, সরকারের আহ্বানে লাইটার জাহাজ মালিকরা গত তিন মাস ধরে ৩০ শতাংশ ভাড়া মওকুফ করে বিভিন্ন রুটে মালামাল দিয়ে এসেছে। বর্তমানে ডিজেলের দাম বৃদ্ধি করা হলেও লাইটার জাহাজগুলো আগের ভাড়ায় চলেছে। অথচ, গণপরিবহন সংগঠনের নেতারা অতিরিক্ত ভাড়ায় তাদের বাসগুলো চালাচ্ছে। আজ সব পক্ষের সাথে কথা বলে প্রতি টনে ছয় পয়সা ভাড়া বাড়ানো হয়েছে। প্রতি টনে ছয় পয়সা তো বেশি না। কিন্তু গণমাধ্যমে সেটিকে বড় করে দেখানো হয়।

আরেক লাইটার চালক চট্টলার খবরকে বলেন, ভাড়া বাড়লে আমরা পার্টির কাছ থেকে ভাড়া বাড়িয়ে নিব। কিন্তু শ্রমিকদের কোনা লাভ নেই এখানে। তারা সারাদিন কাজ করে ৫০০ টাকাই পাবে। বরং আমদানিকারকরা যাতায়াত খরচের অজুহাতে পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিবে।

নগরের সদরঘাট এলাকায় কর্ণফুলী নদীতে জেটি চালু করে পণ্য ওঠা-নামানোর কাজ করছে ভোগ্যপণ্য আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান বিএসএম গ্রুপ। তাদের জেটি থেকে ট্রাকে করে মালামাল চলে যাচ্ছে ভোগ্যপণ্যের অন্যতম বৃহত্তম বাজার খাতুনগঞ্জে।

বিএসএম গ্রুপের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে চট্টলার খবরকে বলেন, তেলের দাম বাড়ার কারণে সবাই কম বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ঘুরে ফিরে আমদানিকারকদের লাভের বিষয়টি আলোচনায় নিয়ে আসা হয়। সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে লাইটার মালিকরা ভাড়া বাড়িয়েছে। আমরা ভাড়া বাড়ানোর বিষয়ে কোনা পদক্ষেপ নেইনি। আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বাড়লে আমাদের আমদানি খরচ বেড়ে যায়। এর কারণে আমাদের খরচ বাড়িয়ে নিতে হয়।

উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম বন্দরে মাদার ভেসেলে পণ্য আসে৷ এসব পণ্য বহিনোঙরে খালাসের পর ছোট লাইটার জাহাজে করে পাঠানো হয় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। চট্টগ্রাম থেকে দেশের প্রায় ৩২টি রুটে চলাচল করে ডিজেল চালিত এসব লাইটার। একটি লাইটারে সর্বোচ্চ ৮০ হাজার ও সর্বনিন্ম ৪০ টন মালামাল বহন করা যায়।

আরকে/এমকে/চখ

এই বিভাগের আরও খবর