পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ক্ষমা চাইতে বললেন সনাতনী সংগঠনের নেতারা
নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশে সাম্প্রদায়ীক হামলা, লুটপাট ও সহিংসতার ঘটনায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. এ কে আব্দুল মোমনের বক্তব্যকে উদ্দেশ্যপ্রণোদীত, মিথ্যাচার ও বিভ্রান্তমূলক বলে দাবি করেছেন সম্মীলিত সনাতনী শীর্ষস্থানীয় সংগঠনের নেতারা। মন্ত্রীর বক্তব্য হামলাকারীদের উৎসাহিত করেছে উল্লেখ করে নেতারা এসব ঘটনায় ক্ষমা চাইতে বলেছেন। অন্যতায় কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার হুঁশিয়ারী দিয়েছেন।
মঙ্গলবার (৯ নভেম্বর) বিকেল ৪টায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ বাংলাদেশ, ইসকন, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদসহ বিভিন্ন সনাতনী সংগঠনের নেতাকর্মীরা সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান ইসকন বিভাগীয় সম্পাদক শ্রীপাদ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী। তিনি বলেন, গত ১৩ অক্টোবর কথিত ধর্মঅবমাননার অভিযোগ তুলে কুমিল্লার নানুয়ার দিঘীর পাড় এলাকায় শারদীয় পূজামন্ডপে হামলা করা হয়। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রদায়ীক হামলা হয়। নোয়াখালীর চৌমুহনীতে ১৯৭১ সালের চেয়েও ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক হামলা হয়। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার পর যখন অভিযুক্তদের খুঁজছে তখন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বিবৃতি সহিংসতাকারী ও অপরাধীদের উৎসাহিত করছে। সারাবিশে সমস্ত অসাম্প্রদায়িক ও শুভবুদ্ধিসম্পন্ন প্রতিটি জাতি গোষ্ঠির লোক এই ঘটনার নিন্দা করছে, সেখানে মন্ত্রী তা স্বীকারই করলেন না। সমবেদনার পরিবর্তে তিনি কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা দিয়ে এদেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতি একটি বিশেষ ইংগিত দিয়েছেন। আমরা অত্যন্ত শংকিত ও নিরাপত্তাহীনতা অনুভব করছি।
সংবাদ সম্মেলনে সাম্প্রদায়ীক হামলায় জড়িত দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে শাস্তি, রাষ্ট্রীয় অর্থায়নে ক্ষতিগ্রস্থ ও ধ্বংসপ্রাপ্ত মঠ-মন্দির, আশ্রম, বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, দেবালয়সমূহ পুনঃনির্মাণ ও ক্ষতিপূরণ, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য প্রত্যাহার করে ক্ষমা প্রার্থনা ও সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন কমিশন ও মন্ত্রণালয়ের দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলন উপস্থিত ছিলেন জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সুকুমার চৌধুরী, ইসকন প্রবর্তক শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরের অধ্যক্ষ লীলারাজ গৌর দাস ব্রহ্মচারী, চট্টগ্রাম মহানগর পূজা পরিষদের সভাপতি লায়ন আশীষ ভট্টাচার্য্য, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদ মহানগরের সহসভাপতি দীপংকর চৌধুরী কাজল, পূজা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হিল্লোল সেন উজ্জ্বল, নন্দনকানন রাধামাধব ও গৌরনিতাই মন্দিরের অধ্যক্ষ পন্ডিত গদাধর দাস ব্রহ্মচারী, দারুব্রহ্ম দাস ব্রহ্মচারী, তারণ নিত্যানন্দ দাস ব্রহ্মচারী, মুকুন্দ ভক্তি দাস ব্রহ্মচারী, প্রবর্তক মন্দিরের সদস্য স্বতন্ত্র গৌরাঙ্গ দাস ব্রহ্মচারী, দিব্যনিমাই দাস ব্রহ্মচারী, অশোক চক্রবর্তী ও বিপ্লব পার্থ।
আরকে/নচ