chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

বাঁশখালীতে রাস্তার পাশেই চলছে গরু জবাই, দূর্গন্ধে অতিষ্ট স্থানীয়রা

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাঁশখালী উপজেলার টাইম বাজারে রাস্তার পাশেই প্রতিনিয়ত চলছে গরু জবাই, বর্জ্য অপসারণের ব্যবস্থা না থাকায় দিনের পর দিন পরে থাকছে নাড়িভুঁড়ি ও রক্ত। নোংরা আবর্জনা পচা দূর্গন্ধে দুষিত হয় পরিবেশ। ফলে রোগ জীবাণু ছড়িয়ে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা।

 

অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে রাস্তার পাশে পশু জবাই চলছে প্রতিনিয়ত। পশু জবাইয়ের জন্য কসাইখানা থাকলেও কসাইরা সেখানে জবাই না করে, যত্রতত্র রাস্তার দুই পাশে পশু জবাই করছে। ফলে জনস্বাস্থ্য হুমকির মুখে পড়লেও প্রশাসন নিরব ভূমিকায় রয়েছে। প্রতিদিন সকলে জবাই করা গরুর মলমূত্র, নাড়িভূঁড়ি যত্রতত্র ফেলে রাখার ফলে নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তাদের পছন্দমত স্থানে কসাইরা গরুর মহিশ জবাই করলেও এদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন ধরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না। খোলা আকাশের নিচে যত্রতত্র পশু জবাইয়ের কারণে দূষিত হয়ে পড়েছে এলাকার পরিবেশ। অথচ সরকারিভাবে নিয়ম রয়েছে মাংস বিক্রির জন্য পশু জবাই এর আগে সম্পূর্ণ রোগমুক্ত এবং খাবার উপযুক্ত কিনা তা পশু ডাক্তার দ্বারা পরীক্ষা করে নিতে হবে। পশুটি খাওয়ার ও জবাই এর উপযোগী বিবেচিত হলে তা সরকার নির্ধারিত কসাইখানায় নিয়ে জবাই করতে হবে। এরপর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিয়ম মোতাবেক মাংসের উপর সীল মেরে তা বাজারে বিক্রির অনুমতি দেয়ার পরই শুধু মাংস বিক্রি করা যাবে। পশু জবাই ও মাংস কাটার যাবতীয় সরঞ্জাম ব্যবহারের আগে জীবাণুমুক্ত করা, খোলা মাংস বিক্রি না করা, মাংসের দোকানে প্রয়োজনীয় পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার বিধান থাকলেও তা মানা হচ্ছেনা কোনভাবে। ভোরে জবাই করা পশুর মাংস সারাদিন উন্মুক্ত স্থানে নোংরা পরিবেশে ঝুলিয়ে বিক্রি হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এসব বিষয় তদারকি করার জন্য বিভিন্ন উপজেলায় পশু ডাক্তার, সেনিটারি ইন্সপেক্টর থাকলেও এসব দেখার জন্য কেন কেউ নেই বললেই চলে। তাছাড়া অভিযোগ রয়েছে-মহিষ জবাই করে গরুর মাংস হিসেবে এবং ভেড়া জবাই করে ছাগলের মাংস হিসেবে বিক্রয় করে প্রতারিত করছে কসাইরা। এর শিকার হচ্ছে সাধারণ ক্রেতারা। যত্রতত্র রোগাক্রান্ত গবাদি পশু অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে জবাই এর ফলে পশুর মলমূত্র, নাড়িভুঁড়ি ও রক্তের পঁচা গন্ধে বিপন্ন হয়ে পড়েছে এলাকার পরিবেশ।

সরেজমিনে আজ সকালে কসাইরা শীলকূপ টাইমবাজার (আনোয়ারা-বাঁশখালী-পেকুয়া) পিএবি প্রধান সড়কের পাশ দখল করে নোংরা এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে কোন রকম ডাক্তারী পরীক্ষা ছাড়াই প্রতিনিয়ত ১০ থেকে ১২ টি গরু জবাই করতে দেখা যায়। সেখানে রাস্তার উপর গরু জবাই করে মাংস বানানো হচ্ছে। তারা গরু জবাই করে চামড়া ছাড়ানোর কাজ করছে। জবাই করার পরে নোংরা হয়ে যাওয়া জায়গাতেই আবারও চলছে পশু জবাই। অপরিষ্কার করার ফলে একের পর এক পশু জবাই করায় জমে উঠছে বর্জ্যর স্তুপ। এতে বর্জ্যরে দুর্গন্ধে আশপাশের মানুষ ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক দুর্বিষহ জীবন কাটাচ্ছে। এ সকল পশুর মাংস টাইম বাজার সহ বিভিন্ন হাট-বাজারে বিক্রি করছে অবাধে।
ওই এলাকার স্থানীয়রা জানান, টাইম বাজার রাস্তার উপরে প্রতি সপ্তাহে রবিবার, মঙ্গলবার ও বৃহস্পতিবার কসাইরা গরু জবাই করছে। গরুর বর্জ্যরে গন্ধে এলাকাবাসীরা বাড়ি থেকে বের হতে পারছে না। ওই বাজারে গেলে সাধারণ পথচারী ও যাত্রীদের নাক-মুখ চেপে ধরে যেতে হয়। দূর্গন্ধে অতিষ্ট হয়ে পড়েছে এলাকাবাসী, পথচারী ও সাধারণ যাত্রীরা। মানুষজনকে চলাচল করতে হয় দুর্গন্ধময় নোংরা পরিবেশে। দুর্গন্ধময় এই বাজারে ব্যবসায়ী, এলাকাবাসীরা সবাই মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছেন বলেও তারা জানান। ইউনিয়ন পরিষদ কিংবা বাজার কমিটি কর্তৃপক্ষের কোন ভ্রুক্ষেপ নেই। উপজেলার প্রধান সড়কের দুই ধারে গরু জবাই করে মাংস বিক্রয় করে অবাধে, কেউ দেখভাল করার মত কেউ নেই। পচা দুর্গন্ধে জনজীবন অতিষ্ট হয়ে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসীর দাবী নিধারিত স্থানে পশু জবাই করা হোক। স্থানীয় কয়েকজন মাংস বিক্রেতা বলেন, সপ্তাহে ৩ দিন বাজার বসে। তার মধ্যে প্রতিদিন এখানে অন্তত ১০ থেকে ১২টি গরু জবাই করা হয়।পশ্চিম পাশে একটি জায়গায় গর্ত করে রাখা হয়।হয়তো ওইখান থেকে দূর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।
এ ব্যাপারে টাইম বাজার ব্যবসায়ী কমিটির সভাপতি মুহাম্মদ সুলতানের সাথে বেশ কয়েকবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেস্টা করা হলে ও তাকে পাওয়া যায়নি।
শীলকূপ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ মহসিন জানান, টাইম বাজারে সরকারী কোন খাস জমি না থাকায় পরিষদের পক্ষ থেকে আমি টেনসেড একটি ঘর করে দিয়েছি। সেখানে তো গরু জবাই করার কথা। রাস্তায় গরু জবাই করে এ বিষয়ে আমি অবগত না। তবে আমি আজকেই তাদের সর্তক করে দিব।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সমরঞ্জন বড়ুয়া বলেন, নির্ধারিত স্থান ছাড়া এভাবে রাস্তার উপরে পশু জবাই করা হলে পরিবেশ নষ্ট হয় এবং তা আইনত অপরাধ।

এসএএস/নচ

এই বিভাগের আরও খবর