ধর্মঘটে অসহায় অফিসগামী-শিক্ষার্থীরা, ভোগান্তি চরমে
চট্টগ্রাম বন্দরে অচলাবস্থা
নিজস্ব প্রতিবেদক : ডিজেলের দাম বাড়ার প্রতিবাদে এবং ভাড়া বাড়ানোর দাবিতে ডাকা পরিবহন ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিনেও জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। স্থবির হয়ে পড়েছে চট্টগ্রাম বন্দর। সব পণ্য আনা-নেওয়া বন্ধ রেখেছেন পরিবহন মালিকরা। ধর্মঘটের কারণে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরে বন্ধ রয়েছে পণ্য ডেলিভারির কাজ।
তবে পণ্য ডেলিভারি না হলেও জাহাজ থেকে পণ্য উঠানামা চলমান আছে। নগরীতে গণপরিবহন চলছে না। এতে চরম দুর্ভোগে কর্মজীবী মানুষ। সকালে যানবাহনের অপেক্ষায় লোকজনকে রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।
নগরীর আগ্রাবাদ, ইপিজেড, টাইগারপাস, লালখান বাজার, জিইসি, মুরাদপুর, বহদ্দারহাট, স্টেশন রোডসহ বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে ছিলো অফিসগামীদের ভিড়। ধর্মঘটের কারণে তাদের দুর্ভোগে পড়তে হয়। অনেকে কয়েক গুণ বেশি ভাড়া দিয়ে রিকশা কিংবা অটোরিকশায় কর্মস্থলে যেতে বাধ্য হন। কেউ আবার হেঁটে রওনা দেন। বাস বন্ধ থাকায় রিকশা অটোরিকশায় অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে। দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। বন্ধ ভারী যানবাহন চলাচলও। শুক্রবার সকাল থেকে শুরু এ ধর্মঘটে অচল বৃহত্তর চট্টগ্রাম।
গত বুধবার রাতে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে ১৫ টাকা বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়া হয়। নতুন দাম ভোক্তা পর্যায়ে ৬৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৮০ টাকা করা হয়। যা কার্যকর হয় ওইদিন রাত ১২টা থেকে। এ নিয়ে গত বৃহস্পতিবার পরিবহন খাতের বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে শুক্রবার সকাল ছয়টা থেকে সারাদেশে ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়। ডিজেল-কেরোসিনের বর্ধিত দাম প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত ধর্মঘট চলবে বলেও জানান তারা।
এদিকে অফিসগামীরা বলেছেন, হঠাৎ করে এ ধরনের পরিবহন ধর্মঘট দিয়ে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করা হচ্ছে। এতে সাধারণ চাকরীজীবীরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে।
বহদ্দারহাটে সুমন নামে এক ব্যক্তি বলেন, হঠাৎ করে পরিবহন ধর্মঘট দেওয়ার কোন মানে হয় না। সকাল ৮টা থেকে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছি। অফিসে দেরি হওয়াতে বাধ্য হয়ে সকাল ১০টায় অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে রিক্সায় করে অফিসে আসতে হয়েছে।
নাজিম উদ্দিন নামে আরেক ব্যক্তি বলেন, কালুরঘাট থেকে দেওয়ানহাট আসতে ৫টা গাড়ি পরিবর্তন করতে হয়েছে। ১২ টাকার ভাড়ার স্থলে গুনতে হয়েছে ১০০ টাকার বেশি। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে রিক্সা ও অটোরিক্সা সিএনজির চালকরা।
চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরের ভেতরে সব কাজ স্বাভাবিকভাবেই চলছে। তবে বাইরের কোনো গাড়ি চট্টগ্রাম বন্দরের ভেতরে আসছে না। বন্দর থেকে পণ্য নিয়েও কোনো গাড়ি বের হচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, আজ শনিবারও গাড়ি প্রবেশ করতে পারছে না। তবে ধর্মঘট চলমান থাকলে বন্দরের ওপর এর প্রভাব পড়বে।
চট্টগ্রাম প্রাইম মুভার ট্রেইলার শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মাঈন উদ্দিন বলেন, গাড়ির মালিক পক্ষ আমাদের গাড়ি চলাতে না করেছে, তাই আমরা গাড়ি চালাচ্ছি না। আমাদের দাবি তেলের দাম হয় কমানো হোক না হয় গাড়ি ভাড়া বাড়ানো হোক। তেলের যা দাম বেড়েছে তা দিয়ে গাড়ি চালানো সম্ভব হচ্ছে না । আমরা আশা করছি সরকার মালিক পক্ষের সঙ্গে বসে এ সমস্যার সমাধান করবে।
এসএএস/এমআই/চখ