chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

চবির হলে হলে ‘ঈদের আনন্দ’

মুখে মাস্ক, কাঁধে ব্যাগ নিয়ে হলে ফিরছেন শিক্ষার্থীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক: সাদিয়া খানম। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) সমাজতত্ত্ব বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। করোনা পরিস্থিতির কারণে ১৯ মাস আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেলে বাধ্য হয়ে বাড়ির পথ ধরতে হয় এই শিক্ষার্থীকে।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হলেও সাদিয়ার মন পড়ে থাকতো বিশ্ববিদ্যালয়ের সহপাঠী, বন্ধু ও শিক্ষকদের জন্য। অপেক্ষায় ছিলেন আবারও শাটলের ক্যাম্পাসে ফেরার। স্মরণকালের দীর্ঘ ছুটির তিক্ত অভিজ্ঞতা নিয়ে মুখে মাস্ক, কাঁধে ব্যাগ ও দু’হাতে তল্পিতল্পা নিয়ে এদিন শিক্ষার্থীরা ফিরতে শুরু করেছেন হলে।

সোমবার (১৮ নভেম্বর) সকালে একে একে খুলে দেওয়া হয় নিষ্প্রভ হলের গেইটগুলো। দীর্ঘদিন পর বন্ধুদের পেয়ে সাদিয়াদের আজ ঈদের আনন্দ। ক্লাসের ফাঁকে ঝুপড়িতে আড্ডা, গান-গল্প, শাটলের হুঁইসেল, অ্যাসাইমেন্টম, ক্লাস আর গ্রুপ স্টাডি আবারও ফিরতে শুরু করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ে।

সাদিয়া খানম চট্টলার খবরকে বলেন, এমন একটা আনন্দের দিনের অপেক্ষায় ছিলাম। হলে ঢুকতেই ম্যামরা আমাদের গোলাপ ও রজনীগন্ধা ফুল, চকলেট, হ্যান্ড স্যানিটাইজার নিয়ে বরণ করে নিয়েছেন। কিছুক্ষণ পর পর রুমে এসে হলের কর্মচারীরা আমাদের খোঁজ নিচ্ছেন। আমাদেরকে পেয়ে তারাও অনেক খুশি। এমন ভালোবাসা আমাদের মুগ্ধ করেছে। ঈদ ঈদ লাগছে।

তিনি আরও বলেন, দীর্ঘদিন রুমে না থাকায় ধুলোবালিতে একাকার হয়ে গেছে। আমাদের কষ্টের কথা বিবেচনা করে হলে খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। খাবারটা আজ অমৃত মনে হয়েছে। সবাই খুশি মনে কথা বলছেন। টিকার কারণে অনেক বান্ধবীরা হলে উঠতে পারেনি। তারা ফিরলে আবারও আড্ডা, খুঁনসুটি শুরু হবে।

সাথে ব্যাগ, বস্তা আর বইপত্র নিয়ে এ এফ রহমান হলের সামনে অপেক্ষা করছিলেন মো. নাঈম। ১৯ মাস আগেও একবার হলের সামেন দাঁড়িয়েছিলন তিনি। তবে তা ছিল বন্ধের ঘোষণায় বাড়ি ফেরার লক্ষ্যে। সেবার চেহারায় একরাশ চিন্তার ছাপ থাকলেও, এবার তা উচ্ছ্বাস আর আনন্দের।

তিনি বলেন, বন্ধ হওয়ার পর মনে হয়েছিল কিছুদিন পর আবারও আসব। কিন্তু ফেরা হয়নি। দীর্ঘদিন পর এভাবে হলে ফিরতে পেরে প্রথম বর্ষের মতো অনুভূতি হচ্ছে। তবে মহামারির দিনে সবকিছুই অন্য রকম।

করোনাভাইরাসের অন্তত এক ডোজ টিকা নেওয়ার কার্ড ও হলের পরিচয় পত্র দেখালেই শিক্ষার্থীদের হলে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়েছে। হলের প্রাধ্যক্ষরা তাদের রজনীগন্ধা, গোলাপ ফুল, চকলেট, স্যানিটাইজার দিয়ে বরণ করে নিয়েছেন। হলের মুখে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার ও উপউপাচার্য, অধ্যাপক বেনু কুমার দেসহ প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা হলগুলো পরিদর্শন করেছেন।

হলের সার্বিক পরিবেশ ঘুরে দেখার পর উপাচার্য সাংবাদিকদের বলেন, আজকে আমাদের জন্য আনন্দের দিন। প্রতিটি হলে আনন্দমুখর পরিবেশে শিক্ষার্থীদের বরণ করে নেওয়া হয়েছে। এই হল, এই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের। তাদের পেয়ে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। দীর্ঘদিনের স্থবিরতার কেটে গেছে।

তিনি এসময় শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে এবং দীর্ঘদিনের পাঠদানের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পড়ালেখায় মনোনিবেশ করার আহ্বান জানান।

আরকে/এমআই

এই বিভাগের আরও খবর