chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

বিস্ফোরণ নিয়ে ধোঁয়াশা, বড়সড়ো তদন্ত চাইলেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা

নিজস্ব প্রতিবেদক: নগরের বায়েজিদ থানার বালুছড়ার কাশেম কলোনীতে পাইপলাইনের গ্যাস বিস্ফোরণ নিয়ে এলাকাবাসী ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তাদের মধ্যে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনাটিকে ‘ব্যতিক্রম’ দাবি করে বড়সড়ো তদন্তের দাবি জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা। তবে পুলিশ বলছে, গ্যাসের চুলায় দীর্ঘদিনের লিকেজের কারণে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে।

বাড়িটিতে বিস্ফোরক দ্রব্য তৈরির আশঙ্কা করা হলেও, সেটিও নাকচ করে দিয়েছে পুলিশ। তবে জনসাধারণের চলাচল নিষিদ্ধ করতে কক্ষটি লাল কাপড়ের ফিতা দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। বিছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে গ্যাস ও বিদ্যুতের সংযোগ।

রোববার (১৭ অক্টোবর) ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, গ্যাস বিস্ফোরণে ওই কক্ষের সামনের ও পার্শ্ববর্তী কক্ষের দেয়াল ভেঙে টুকরো হয়ে রাস্তায় পড়ে আছে। কক্ষের ভেতরের মালামাল এদিক-সেদিক পড়ে আছে। বিস্ফোরণের আশঙ্কায় পাশের দুইটি ঘরের বাসিন্দারের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। কিছুক্ষণ পর পর বিধ্বস্ত বাড়িটি দেখতে জটলা করছে এলাকাবাসী।
চারতলার ভবনের নিচ তলায় সেমিপাকা বেশ কয়েকটি কক্ষ ব্যাচেলর ও কয়েকটি কক্ষে পরিবারসহ ভাড়া দেওয়া হয়েছে। দুই তলায় রয়েছে একটি মসজিদ।

বিস্ফোরণের পর ওই রাস্তা দিয়ে যাওয়ার পথে দগ্ধ হয়ে মারা যান রাজমিস্ত্রী মো. ফারুক (২৩)। হাপসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ওই কক্ষের ভাড়াটিয়া রাজমিস্ত্রী মো. ফোরকান (৫৫) ও মো. কালাম (৩০)। এরমধ্যে ফোরকানের ৬০ শতাংশ ও কালামের ৪৫ শতাংশ শরীর দগ্ধ হয়েছে। পুড়ে গেছে শ্বাসনালী।

কাশেম কলোনীর বাসিন্দা নুরজাহান বেগম চট্টলার খবরকে বলেন, এ কলোনীতে সবাই পাইপলাইনের গ্যাস ব্যবহার করে। গ্যাস সিলিন্ডার কেউ ব্যবহার করে না। এখানে কোনো দিন গ্যাস বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু কীভাবে এত বড় ঘটনা ঘটেছে কেউ বলতে পারে না।

আরেক বাসিন্দা নুর আলম বেশ কিছুক্ষণ উঁকি দিয়ে বিস্ফোরণের কক্ষটি দেখছিলেন। তিনি বলেন, আগুন লেগেছে এটা সবাই বলছে। অনেকে দেখেছেন, কিন্তু কীভাবে আগুন লেগেছে সেটাও কেউ জানে না।

এদিকে বিস্ফোরণের পর ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন আগ্রাবাদ ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক মো. ফরিদ আহমদ। তিনি চট্টলার খবরকে বলেন, কীভাবে বিস্ফোরণ হয়েছে, কী হয়েছিল আমরা কিন্তু কিছুই বুঝতে পারিনি। সারারাত গ্যাসের চুলা চালানোর পর পুরো কক্ষ গরম হয়ে থাকলে এমনভাবে আগুন লাগতে পারে। কিন্তু ওই কক্ষের ভেতরে এমন কোনো কিছুই আমরা দেখতে পাইনি। শুধু কক্ষের ভেতরে ও বাইরে দেয়াল ভেঙে গেছে। ওই কক্ষে দগ্ধ থাকা ব্যক্তিদের খাটেও আগুনের কোনো চিহ্ন নেই। সেখানে বোমা ফুটেছে বা বিস্ফোরক দ্রব্য তৈরি করা হচ্ছে তেমন আলামত ছিল না।

এক প্রশ্নের উত্তরে এই কর্মকর্তা বলেন, কক্ষের ভেতরের চুলাগুলো অনেকদিন আগের। কিন্তু এমন ঘটনা ব্যতিক্রম ধরনের। বিশেষজ্ঞদের নিয়ে বড়সড়ো তদন্ত করে এর কারণ বের করা উচিত।

এদিকে বায়েজিদ বোস্তামি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামান চট্টলার খবরকে বলেন, ঘটনার পর ফায়ার সার্ভিস, বোম ডিজপোজাল টিম ও গ্যাস কর্তৃপক্ষ ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়েছেন। তারা বলছেন গ্যাসের চুলা দীর্ঘদিনের লিকেজের কারণে বিস্ফোরণ ঘটেছে। সেখানে বিস্ফোরক দ্রব্যের আলামত পাওয়া যায়নি। আপাতত ওই কক্ষটি লাল ফিতা দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। পরে সরিয়ে নেওয়া হবে।

আরকে/এমআই

এই বিভাগের আরও খবর