chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

‘দেওয়ানহাট থেকে পতেঙ্গা সড়কে দুর্ভোগে লাখো মানুষ’

নিজস্ব প্রতিবেদক: ‘প্রায় প্রতিদিনই চট্টগ্রাম মহানগরীর দুটি সড়কে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে লাখো মানুষকে। অতি গুরুত্ব ও ব্যস্ততম শেখ মুজিব সড়ক এবং বিমানবন্দর সড়ক এখন পরিপূর্ণ খানাখন্দে। সামান্য বৃষ্টি হলেই দুর্ভোগ ঠেকে চরমে।’

লাখো মানুষের ভোগান্তি কমাতে অতিসত্বর সড়ক দুটি মেরামত করে চলাচল উপযোগী করে তুলতে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি সবিনয় অনুরোধ জানিয়েছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন।

আজ সোমবার (২০ সেপ্টেম্বর) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ অনুরোধ জানান চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সুজন।

তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামের উন্নয়নের দায়িত্ব নিজ কাঁধে তুলে নেওয়ার পর থেকেই নগরীতে ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিচালিত হচ্ছে। বিভিন্ন সেবা সংস্থা নগরীতে হাজার হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিচালনা করছে।

‘উন্নয়ন কর্মকান্ড চলাকালীন সময়ে জনগনের সাময়িক কিছুটা ভোগান্তি হতে পারে। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সাথে লক্ষ্য করা যাচ্ছে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজের নামে নগরীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শেখ মুজিব সড়ক এবং বিমানবন্দর সড়কটি যান ও জনগনের চলাচলের সম্পূর্ণ অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।’

তিনি বলেন, উন্নয়ন কর্মকান্ড চলবে কিন্তু তাই বলে কি প্রকল্প সংশ্লিষ্ট রাস্তাগুলো ধ্বংসস্তুপে পরিণত হবে? অথচ প্রকল্প বাস্তবায়নকালীন সময়ে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট রাস্তাগুলো চলাচল উপযোগী করে তোলা প্রকল্প বাস্তবায়নকারী ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের কাজ। কিন্তু তারা সে কাজগুলো করছে না। মানুষের নিত্যদিনের দুর্ভোগ তাদের কর্ণকুহরে প্রবেশ করছে না।

সুজন বলেন, স্বচক্ষে দেখলে মনে হবে যেন কোন যুদ্ধবিদ্ধস্ত এলাকার ছবি এগুলো। অথচ এ এলাকায় একটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, দুইটি ইপিজেড, তেল শোধনাগার, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সার কারখানা, অফডক ডিপো, ব্যাংক, বীমা, নৌ ও বিমান বাহিনীর স্থাপনাসহ গুরুত্বপূর্ণ সব স্থাপনা অবস্থিত।

‘এ রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার গাড়ী এবং লাখো মানুষ চলাচল করে। রাস্তাঘাটের বেহাল দশায় প্রতিদিন কষ্ট পাচ্ছে পথচারি ও যানবাহনের যাত্রীগণ। ভাঙ্গা সড়কে উল্টে পড়ে, নষ্ট হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গাড়ীর যন্ত্রাংশ।’

‘অনেক যাত্রীই নির্দিষ্ট সময়ে পৌঁছতে পারে না আপন গন্তব্যে। বর্তমানে শিক্ষাপ্রতিষ্টান খোলার ফলে রাস্তাঘাটে গাড়ির চাপ পূর্বের তুলনায় আরো বেড়ে গিয়েছে। ইপিজেডে কর্মরত লাখো কর্মীদের কর্মস্থলে আসা যাওয়া করতে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তারা জানে না এর প্রতিকার কী।’

সুজন বলেন, এলাকার মানুষ এ দুঃসহ অবস্থা থেকে মুক্তি চায়। এভাবে একটি নগর চলতে পারে না। এমনিতে ঐ এলাকায় বসবাসকারী মানুষের স্বাভাবিক জীবনধারা নষ্ট হতে চলেছে।

‘সামাজিক কিংবা অন্যান্য অনুষ্ঠানে আত্নীয় স্বজনদের ঐ এলাকায় যাওয়া আসা প্রায় বন্ধ বললেই চলে। আর কোন রোগীকে যদি হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয় তাহলে সে রোগী হাসপাতালে ভর্তি পর্যন্ত জীবিত থাকবে কিনা তা একমাত্র আল্লাহই বলতে পারেন।’

সুজন বলেন, একদিকে বিমানবন্দর সড়কটির বেহাল অবস্থা, অন্যদিকে পোর্ট কানেকটিং সড়কটি চলাচল অযোগ্য, সদরঘাট-মাঝিরঘাট সড়কটিও খানাখন্দে ভরা। মূল নগরীতে প্রবেশ করা যেন দুঃসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে। এলাকাগুলো মূল নগরী থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন। ঘন্টার পর ঘন্টা ট্রাফিক জ্যামে আটকা পড়ে থাকা যেন নিত্তনৈমত্তিক ঘটনা।

‘এ অবস্থায় কোন কাজটি সিডিএ’র কোন কাজটি সিটি কর্পোরেশনের সেটি বিবেচনা করার সময় জনগনের নেই। জনগণ কিন্তু এ ভোগান্তি আর সইতে পারছে না। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম নগরী যেন আজ মৃতপ্রায়। মানুষের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম হয়েছে।’

'দেওয়ানহাট থেকে পতেঙ্গা সড়কে দুর্ভোগে লাখো মানুষ'
স্বচক্ষে দেখলে মনে হবে যেন কোন যুদ্ধবিদ্ধস্ত এলাকা। ছবিটি নগরীর বাদামতলী মোড় থেকে তোলা। আলোকচিত্রী – এম ফয়সাল এলাহী

এ মূহুর্তে কালবিলম্ব না করে সিডিএ এবং সিটি কর্পোরেশনকে মানুষের ভোগান্তি দূর করতে এগিয়ে আসতে হবে। শুধু কথার ফুলঝুড়ি নয় জনগনকে এ অবস্থা থেকে মুক্তি দিতে বাস্তবিক অর্থেই দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে নচেৎ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হাজার হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কর্মকান্ডের সুফল যদি জনগন ভোগ করতে না পারে তাহলে এর দায় সকলকে ভোগ করতে হবে।

তিনি ঐ দুইটি সড়কে প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে ১০টা এবং বিকাল ৫টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত ভারী যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করার জন্য পুলিশ প্রশাসনের প্রতি আহবান জানান।

ঐ সময়টাতে ভারী যানবাহনসমূহ নিয়ন্ত্রণ করা গেলে স্কুল, কলেজগামী শিক্ষার্থী এবং অফিস আদালতগামী কর্মজীবি নারী ও পুরুষসহ স্বাচ্ছন্দ্যে আসা যাওয়া করতে পারবে ঐ রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী যাত্রীগণ।

তাই সিডিএ, সিটি কর্পোরেশন এবং পুলিশ প্রশাসন যৌথভাবে সমন্বয়ের মাধ্যমে সহসাই রাস্তা দুটি যান এবং জনগনের চলাচলের উপযোগী করে গড়ে তোলার আহবান জানান সুজন।

আরএস/এমআই

এই বিভাগের আরও খবর