chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

নার্সারিতে লকডাউনের প্রভাব, বর্ষায়ও চাঙা হয়নি ব্যবসা

ইফতেখার নিলয়: বেকারত্ব হ্রাসে যে নার্সারি ব্যবসা রাখতো মুখ্য ভূমিকা সেই নার্সারি ব্যবসাই এখন থমকে আছে করোনার থাবায়। বছর দেড়েক ধরেই করোনার প্রকোপে দফায় দফায় চলা লকডাউনে মুখ থুবড়ে পড়েছে চট্টগ্রামের নার্সারি ব্যবসা। বর্ষার সময়কে ব্যবসার মূল সময় ধরা হলেও এই মৌসুমেও চাঙা হয়নি ব্যবসা।

নগরীর বিভিন্ন নার্সারিতে ঘুরে নার্সারি পরিচালনার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের দেখা যায় অলস সময় পার করতে। কেউ সময় পার করছেন পত্রিকা পড়ে, কেউবা রঙ দিয়ে টবকে আকর্ষণীয় করার চেষ্টা করছেন। কিন্তু কোথাও পাওয়া যায়নি ক্রেতার দেখা। ব্যবসার মন্দা পরিস্থিতির জন্য সবাই দায়ী করছেন লকডাউনকে।

নার্সারিতে লকডাউনের প্রভাব, বর্ষায়ও চাঙা হয়নি ব্যবসা

সাধারণত বর্ষার মৌসুম এলে সারাদেশের ন্যায় চট্টগ্রামেও বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি ও বৃক্ষমেলা অনুষ্ঠিত হয়। তবে গতবছর ও চলতি বছর বর্ষার মৌসুমে করোনার ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণে জনসমাগম নিষিদ্ধ ও লকডাউনের কারণে একবারও তা অনুষ্ঠিত হয়নি।

বহদ্দারহাটের কসমো নার্সারির পরিচালক আনোয়ারুল ইসলাম হতাশা প্রকাশ করে বলেন, ‘বর্ষায় ব্যবসার অপেক্ষায় থাকি, এখন লকডাউনে কোনো সুবিধা করা যাচ্ছে না। আগে মানুষ বাগান বা ছাদ কৃষি করার জন্যেও চুক্তি করতো কিন্তু এখন অর্থের অভাব ও খাদ্য সংকটেই বেশিরভাগ পরিবার বিপদে আছে। আগে তো নিজে খেয়ে বাঁচা লাগবে, তারপর মানুষ শখের দাম দিবে। বাসা-বাড়িতে গাছ তো মানুষ শখের বশেই লাগায়।‘

নার্সারিতে লকডাউনের প্রভাব, বর্ষায়ও চাঙা হয়নি ব্যবসা

আরএনজে নার্সারির মালিক প্রবাল সেন বাপ্পা বলেন, ‘নাসিরাবাদ স্কুলের সামনে নার্সারি করার কারণ হলো স্কুলের শিক্ষার্থীদের সাথে অভিভাবকরা এলে ঘরের বারান্দার শোভাবর্ধনের গাছ তথা ফুলের গাছ কিনে নেয়, এখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবক কেউই আসে না। আমাদের ব্যবসার অবস্থাও তাই ভালো না। এ ছাড়াও বিভিন্ন অফিসে মানিপ্ল্যান ও ক্যাকটাস গাছ নিতো আগে, এখন কোনো অফিস সেভাবে নিচ্ছে না।‘

শিল্পকলার মোড়ে অবস্থিত নিষ্ঠা নার্সারির পরিচালক মোহাম্মদ সুমন চট্টলার খবরকে জানান, ‘বৃষ্টিতে গাছ নষ্ট হয়, বিক্রি হলে তো আর কোনো অসুবিধা ছিলো না। এখন আমাদের বেতন দিতেই মালিকের কষ্ট হয়। কোনো মেলাও হয় না, বিক্রি কীভাবে হবে ? আগের চেয়ে অর্ধেকে নেমে গেছে বিক্রি। লকডাউন মানেই ব্যবসায় ক্ষতি।‘

নার্সারিতে লকডাউনের প্রভাব, বর্ষায়ও চাঙা হয়নি ব্যবসা

নগরীর অভ্যন্তরে বেশিরভাগ নার্সারির আয়ের অবস্থা এখন শোচনীয়। আয়ে খরা নেমেছে ব্যাপক হারে। যারা সম্পূর্ণভাবে এই নার্সারির আয়ের উপর নির্ভরশীল তারা পড়েছেন সীমাহীন বিপদে।

এ বিষয়ে ফোনে যোগাযোগ করা হলে চট্টগ্রাম নার্সারি মালিক সমিতির সভাপতি শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আপাতত মন্দা চলছে আমাদের সবার। কোনো লক্ষ্যমাত্রাই অর্জন করা সম্ভব হয়নি, জনসমাগম নিষিদ্ধ হওয়ায় কোনো মেলাও হয়নি। মানুষ আগে নিজের খাবার জোগাড় করবে তারপর চিন্তা করবে শৌখিনতাকে প্রাধান্য দেওয়ার ব্যাপারে, এর আগে তো না। চলমান করোনা পরিস্থিতিতে আগে বেঁচে থাকাটাই মুখ্য তারপর বাকি সব। এসবের মধ্য দিয়েই যাচ্ছি, রোজগারের অবস্থা কারোরই ভালো না।‘

ইনি/এমআই

এই বিভাগের আরও খবর