ডেস্ক নিউজ: একজন সচেতন নাগরিক অনলাইনে সক্রিয় একটি কিশোর গ্যাং সম্পর্কে বাংলাদেশ পুলিশের মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন্স উইংকে অবগত করেন। গ্রুপের সাথে যুক্ত কয়েক জনের নাম পরিচয়ও উল্লেখ করেন তিনি।
পুলিশের মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন্স জানায়, উল্লিখিত কিশোর গ্যাংয়ের ফেসবুক গ্রুপটির সদস্য সংখ্যা প্রায় ষোল হাজার। সম্প্রতি ঢাকার একটি রেস্তোঁরায় তারা সমাবেশ করে। সমাবেশ শেষে গ্রুপের শতাধিক সদস্য ছেলে মেয়ে রাস্তায় নেমে যানচলাচল বন্ধ করে তাদের গ্রুপের নামে স্লোগান দিতে দিতে এগোতে থাকে। কিছুক্ষণ পর তারা সেখান থেকে সরে পড়ে।
তথ্যদাতার কাছ থেকে বার্তাটি গ্রহণ করে রমনা থানার ওসি মো: মনিরুল ইসলামকে অবগত করলে প্রাথমিক যাচাই শেষে তিনি জানান গ্রুপটি তার এলাকায় সক্রিয় নয়। এরপর বিষয়টি খিলগাঁও থানার ওসি মো: ফারুকুল আলমকে জানানো হয়। তিনিও খোঁজখবর নিয়ে জানান গ্রুপের সাথে সম্পৃক্ত একজন এডমিন তার থানার বর্ডারের কাছাকাছি রামপুরা থানা এলাকায় থাকে। পরে বিষয়টি নিয়ে রামপুরা থানার ওসি আব্দুল কুদ্দুস ফকিরকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেয় মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং।
গত ৬ আগস্ট রামপুরার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে এই গ্রুপটি পরিচালনার সাথে যুক্ত দুই জনকেকে আটক করে পুলিশ। আটককৃত দু’জনই অপ্রাপ্তবয়ষ্ক কিশোর। গ্রুপ মেম্বারদের একটি বড় অংশই সচ্ছল পরিবারের বখে যাওয়া ছেলেমেয়ে বলে জানায় পুলিশ।
পরে পেজটির বিপুল সংখ্যক সদস্য ও তার সম্ভাবনার কথা বিবেচনা করে মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং এর পরামর্শে এটি বিলুপ্ত না করে সংশ্লিষ্ট সবাইকে সাথে নিয়ে জনকল্যাণ ও দেশ গঠনমূলক কাজে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে এটি সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন এলাকার জনপ্রতিনিধি ও কিশোরদের অভিভাবকগণ।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সন্তানদের পরিবর্তে সংশ্লিষ্ট অভিভাবকগণ পেজটির ব্যবস্থাপনার সাথে যুক্ত থাকবেন। জাতি গঠনমূলক ইতিবাচক কাজে পেজটি ব্যবহারের উদ্দেশ্যে মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহযোগিতা প্রদান করবে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং এর পরামর্শে পেজের সাথে সংশ্লিষ্টগণ এখন থেকে দেশপ্রেম, আইনের প্রতি শ্রদ্ধা, মানবিক ও সামাজিক মূল্যবোধ, পরিবেশ রক্ষা, নারী ও শিশুর অধিকারের প্রতি সম্মান ইত্যাদি ক্ষেত্রে সচেতনতা তৈরিতে কাজ করবে। পাশে থাকবে বাংলাদেশ পুলিশের মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং।
প্রাপ্ত বয়ষ্ক হলে এবং নিজ নিজ ক্ষেত্রে নিজেদেরকে ইতিবাচকভাবে তৈরি করতে পারলে পেজটির ব্যবস্থাপনায় পুরোদমে সম্পৃক্ত হতে পারবে কিশোরগণ। তবে বর্তমানে ইতিবাচক বিষয়ে আইডিয়া তৈরি ও তার প্রচারের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কিশোরদেরকে এমনভাবে সম্পৃক্ত করা যাবে যাতে তাদের লেখাপড়ায় কোনো ব্যাঘাত না ঘটে।
রোববার (৮ আগস্ট) কিশোর ও তাদের অভিভাবকদের সাথে সরাসরি আলোচনায় বসে তাদেরকে প্রয়োজনীয় কাউন্সেলিং করেছে মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং। জানানো হয়েছে, কিশোরদের পথচলায় এবং দেশগঠনমূলক যে কোনো কাজে পাশে থাকবে পুলিশ।
উল্লেখ্য, সুনির্দিষ্ট কোনো অপরাধের তথ্যসহ থানায় কেউ অভিযোগ করতে আগ্রহী না হওয়ায় মুচলেকা নিয়ে অভিভাবক ও এলাকার জনপ্রতিনিধির নিকট উক্ত কিশোরদেরকে হস্তান্তর করা হয়েছে।
কিশোরদের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রেখে সমন্বয় করেছেন রামপুরা থানার এসআই মোহাম্মদ মমিনুর রহমান। সার্বিক বিষয়ে সহযোগিতা করেছেন রামপুরা থানার ওসি আব্দুল কুদ্দুস ফকির এবং সংশ্লিষ্ট ওসিগণ।
-প্রেস বিজ্ঞপ্তি
এমআই/চখ