chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

চসিকের মশক নিধন, ফগার মেশিনের চেয়ে স্প্রেতে ভালো ফল

নিজস্ব প্রতিবেদক:  চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) ফগার মেশিন দিয়ে মশা নিধনে যে ওষুধ ব্যবহার করছে, তার কার্যকারিতা মাত্র ২০ শতাংশ। তবে ফগার মেশিনের চেয়ে স্প্রে করে ওষুধ ছেটানোতে ভালো ফলাফল পাওয়া গেছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) কয়েকজন গবেষক মশা মারার ওষুধের কার্যকারিতা পরীক্ষা করে এ তথ্য জানিয়েছেন।চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরীর অনুরোধে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এই গবেষণা করে।

মঙ্গলবার (০৩ আগস্ট) চবি উপাচার্য ড. শিরীন আখতারের উপস্থিতিতে মেয়রের কাছে গবেষণা কমিটির প্রতিবেদন হস্তান্তর করা হয়।
গবেষক দলের আহ্বায়ক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মালিকুলার বায়োলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. রবিউল হাসান বলেন, সিটি করপোরেশন থেকে আমাদের পাঁচটি নমুনা দেওয়া হয়েছিল। যার মধ্যে দুইটি তারা বর্তমানে ব্যবহার করছে। সিটি করপোরেশন বর্তমানে যে দুটি ওষুধ ব্যবহার করে, সেগুলোর কার্যকারিতা কম পাওয়া গেছে।

সেগুলোর কার্যকারিতা স্প্রে মেশিনের মাধ্যমেও নেই, ফগার মেশিনের মাধ্যমেও নেই। এছাড়া তারা আরও নতুন তিনটি নমুনা আমাদের দিয়েছিল।

তিনি আরও বলেন, পরীক্ষা করে দেখেছি চসিকের সরবরাহ করা হারবাল জাতীয় লার্ভিসাইড ও এডাল্টিসাইড স্প্রে মেশিনের মাধ্যমে ব্যবহার করে শতভাগ কার্যকারিতা পাওয়া গেছে। এই ওষুধটিতে ভালো কার্যকর হয়েছে। বাকি চারটিতে তেমন কোনো কার্যকারিতা পরিলক্ষিত হয়নি।

তিনি আরও বলেন, এই পাঁচটি ওষুধের কোনটিই ফগার মেশিনে কার্যকর না। আমরা শুধু স্প্রের মাধ্যমেই শতভাগ কার্যকারিতা পেয়েছি। এতে লার্ভা ও মশা মরা যাচ্ছে।
তিনি বলেন, সিটি করপোরেশন যে ওষুধ ব্যবহার করছে, কোম্পানির নিয়ম অনুযায়ী ব্যবহার করে দেখেছি মশার মৃত্যুহার ২০ শতাংশের নিচে। তবে ১০০ গুণ ডোজ বাড়িয়ে দেখেছি ৮০ ভাগের মতো মশা মরে। কিন্তু এত পরিমাণ রাসায়নিক ব্যবহার পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর।

গবেষক দলের তথ্য অনুযায়ী, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন চারটি অ্যাডাল্টিসাইড ও একটি লার্ভিসাইডের নমুনা দেয় চবির গবেষক দলকে। সিটি করপোরেশন বর্তমানে এর দুটি ওষুধ ব্যবহার করছে। যার মধ্যে একটি অ্যাডাল্টিসাইড-লাইট ডিজেল অয়েল যা কালো তেল নামে পরিচিত এবং লার্ভিসাইডটি বর্তমানে সিটি করপোরেশন মশা নিধনে ব্যবহার করছে। অন্য তিনটি অ্যাডাল্টিসাইড পরীক্ষামূলক নমুনা হিসেবে গবেষক দলকে দেয় চসিক। যার মধ্যে একটি ভেষজ কীটনাশক।

গবেষণা দলের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, সিটি করপোরেশনের ব্যবহৃত অ্যাডাল্টিসাইড ও লার্ভিসাইডের সঙ্গে কেরোসিন মিশিয়ে (প্রতি লিটারে ১৬ দশমিক ৯ মিলিলিটার) ফগার মেশিনের মাধ্যমে প্রয়োগের দুই ঘণ্টা পর দেখা গেছে, মশার মৃত্যুহার মাত্র ১৪ শতাংশ। সরাসরি অ্যাডাল্টিসাইড প্রয়োগ করেও মশার মৃত্যুহার ২০ শতাংশ পর্যন্ত পাওয়া গেছে।
আর চসিক ব্যবহৃত লার্ভিসাইডের ক্ষেত্রে দেখা গেছে মশার মৃত্যুর হার ১৬ শতাংশ। আর ১০ গুণ বেশি মাত্রায় রাসায়নিক ব্যবহার করেও লার্ভার মৃত্যুহার হয়েছে ৮৪ শতাংশ।
তবে স্প্রে মেশিনের মাধ্যমে হারবাল জাতীয় লার্ভিসাইড কেরোসিনের সঙ্গে মিশিয়ে (প্রতি লিটারে ১৬ দশমিক ৯ মিলিলিটার) মশার ওপর ছিটানোর পর দেখা গেছে, শতভাগ মশার মৃত্যু হয়েছে। একই প্রক্রিয়ায় হারবাল জাতীয় এডাল্টিসাইড কেরোসিনের সঙ্গে মিশিয়ে (প্রতি লিটারে ১৬ দশমিক ৯ মিলিলিটার) প্রয়োগের দুই ঘণ্টা পর শতভাগ মশার মৃত্যু পাওয়া যায়।

এসএএস/নচ

এই বিভাগের আরও খবর