chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

চন্দনাইশে বাড়ছে করোনার সংক্রমণ

নিজস্ব প্রতিবেদক : চন্দনাইশ উপজেলায় করোনা ভাইরাস শনাক্তের হার ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধির কারণে প্রশাসনসহ সকল স্তরের মানুষ উদ্বিগ্ন।

চন্দনাইশে হঠাৎ করে গত ১ সপ্তাহ ধরে করোনা শনাক্তের সংখ্যা আশংকাজনক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রশাসনসহ সচেতন মহল উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে। প্রতিদিন আংশকাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে করোনা শনাক্তের হার।

গত ১ জুলাই থেকে ১ম ডোজের ভ্যাকসিন গ্রহন শুরু হয়েছে। সোমবার (২৬ জুলাই) ৯৬৯ জনসহ মোট ৩ হাজার ৭২৪ জন ২য় দফায় ভ্যাকসিন নিয়েছেন। ১ম পর্যায়ে ৮ হাজার বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষ ভ্যাকসিন গ্রহন করার পাশাপাশি ৬ হাজার মানুষ ২ ডোজ নিয়ে ছিলেন। ফলে চন্দনাইশে ২ লক্ষাধিক মানুষের মধ্যে সোমবার পর্যন্ত প্রায় ১২ হাজার মানুষ ভ্যাকসিন নিয়েছেন।

এদিকে সোমবার চন্দনাইশ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১ হাজার ব্যক্তিকে টিকা নেয়ার এসএমএস দেয়ার কারণে হাসপাতালে সকাল থেকে মানুষের ভিড় জমতে দেখা যায়। দুপুর ২টা পর্যন্ত টিকা নিতে আসা লোকজনকে সামাল দিতে হিমশিম খেতে হয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। লাইনে কোন ধরণের স্বাস্থ্যবিধি বালাই ছিল না। পুরুষ মহিলা ২ পাশে গাদাগাদি করে দাঁড়িয়ে টিকা নেয়ার জন্য অপেক্ষা করতে দেখা যায়।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিন সংগ্রহকৃত নমুনার মধ্যে শিশু, কিশোর, বয়স্ক পুরুষ-মহিলা, স্বাস্থ্যকর্মী, রাজনৈতিক নেতা, প্রশাসনের পদস্থত কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন স্তরের মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। এসকল রোগীদের সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

এ ব্যাপারে স্থানীয় সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, সারাদেশের ন্যায় চন্দনাইশে করোনা শনাক্তের হার বৃদ্ধি পেয়েছে। সাধারণ মানুষকে সচেতনতার সাথে মাস্ক ব্যবহার, ঘন ঘন হাত ধোয়া, অপ্রয়োজনে ঘর থেকে বের না হওয়ার আহবান জানান।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিয়া ইসলাম বলেন, সাধারণ মানুষকে সচেতন করতে প্রয়োজনে কঠোর হতে হয়েছে। মাস্ক ব্যবহার, অপ্রয়োজনে ঘর থেকে বের না হওয়ার জন্য মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জরিমানা করা হয়েছে। সরকারের বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে তিনি প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেছেন। অবশেষে তিনি নিজেও করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তাই প্রত্যেকে নিজের প্রয়োজনে মাস্ক ব্যবহারের উপর গুরুত্বারোপ করেছেন।

চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, ঈদের পরবর্তী ২ সপ্তাহ শনাক্তের সংখ্যা বাড়তে থাকবে। বয়স্ক, শ্বাসকষ্ট জনিত ব্যক্তিদের সর্তক থাকার পাশাপাশি চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার অনুরোধ জানান। তবে সাধারণ মানুষকে আরো সচেতন হয়ে মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে হবে। গ্রামপর্যায়ে কল সিস্টেম চালু থাকতে পারে। ওয়ার্ড পর্যায়ে মনিটরিং বোর্ড করে মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক করতে হবে।

কারো করোনা উপসর্গ দেখা গেলে সাথে সাথে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার পাশাপাশি সরকারি বিধিনিষেধ মেনে চলার আহবান জানান। সে সাথে ভ্যাকসিন নিয়ে নিজে নিরাপদ থাকার পাশাপাশি পরিবারও আশ-পাশের লোকজনদের নিরাপদে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প. কর্মকর্তা ডা. শাহীন হোসাইন চৌধুরী বলেন, কোরবানির ঈদের পূর্ব থেকে করোনা রোগীর শনাক্তের হার আশংকাজনক হারে চন্দনাইশে বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে স্বাস্থ্য বিভাগের চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, করোনার কাজে সংশ্লিষ্ট অফিসে কর্মরতরা দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছে।

প্রতিদিন চন্দনাইশ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নমুনা সংগ্রহের পর ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ নমুনা পজিটিভ পাওয়া যাচ্ছে। যাদের নমুনা পজিটিভ পাওয়া যাচ্ছে তাদেরকে ১৪ দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থেকে পরবর্তী সময়ে কোনরকম পরীক্ষা ছাড়াই স্বাভাবিকভাবে চলাচল করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

এসএএস/এমআই

এই বিভাগের আরও খবর