chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

হুমায়ূন আহমেদ ছাড়া ৯ বছর

ডেস্ক নিউজ: নন্দিত কথাশিল্পী ও নির্মাতা হ‌ুমায়ূন আহমেদের নবম মৃত্যুবার্ষিকী আজ (১৯ জুলাই)। ২০১২ সালের এই দিনে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান হিমু-মিসির আলি-রূপার মতো অসংখ্য জনপ্রিয় চরিত্র তৈরির এই কারিগর।

হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যবার্ষিকী উপলক্ষ্যে সীমিত পরিসরে গাজীপুরের নুহাশপল্লীতে কিছু আয়োজন থাকছে আজ। নুহাশ পল্লীর ম্যানেজার সাইফুল ইসলাম বুলবুল জানান, আজ সকালে নুহাশপল্লীতে কুরআন খতমের আয়োজন করা হয়েছে। এরপর হুমায়ূন আহমেদের মাজারে ফুল দেওয়া হবে। প্রতিবছর এতিম বাচ্চাদের খাওয়ানোর যে আয়োজন হয় তা এ বছর হচ্ছে না। এই বাবদ যে টাকা খরচ হয় তা এবার গরিব মানুষদের মধ্যে বিতরণ করা হবে। ঈদের আগেই সেই টাকা বিতরণ হবে। হুমায়ূন আহমেদের স্ত্রী অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওন সকালে নুহাশপল্লীতে যাবেন বলেও জানা গেছে।

হুমায়ূন আহমেদের স্মরণে শহিদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠ, হুমায়ূন আহমেদ স্মৃতি সংসদ ও ঝংকার শিল্পী গোষ্ঠী করোনার কারণে সীমিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। তার মধ্যে আলোচনা সভা, দোয়া মাহফিল ও ঝংকার শিল্পী গোষ্ঠী হুমায়ূন আহমেদের লেখা গান পরিবেশন করবে।

হুমায়ূন আহমেদ ১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার কুতুবপুরে জন্ম নেন। তার ডাকনাম কাজল। বাবা একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে শহীদ পুলিশ কর্মকর্তা ফয়জুর রহমান আহমেদ ও মা আয়েশা ফয়েজের প্রথম সন্তান তিনি। তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়। খ্যাতিমান লেখক অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল তার ছোট ভাই। সবার ছোট ভাই আহসান হাবীব নামকরা কার্টুনিস্ট ও রম্য লেখক।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় নাতিদীর্ঘ উপন্যাস ‘নন্দিত নরকে’ লেখার মধ্য দিয়ে হুমায়ূনের সাহিত্যজীবনের শুরু। এর পর নাটক, শিশুসাহিত্য, বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী লেখা এবং চলচ্চিত্র পরিচালনা থেকে শুরু করে শিল্প-সাহিত্যের প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই তিনি রেখেছেন প্রতিভা ও সাফল্যের স্বাক্ষর।

১৯৭২ সালে প্রথম উপন্যাস ‘নন্দিত নরকে’ প্রকাশের পরপরই হুমায়ূন আহমেদের খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। তার লেখা উল্লেখযোগ্য উপন্যাসের মধ্যে রয়েছে- শঙ্খনীল কারাগার, শ্রাবণ মেঘের দিন, জোছনা ও জননীর গল্প, কবি, লীলাবতী, গৌরীপুর জংশন, এইসব দিনরাত্রি ইত্যাদি। হুমায়ূন আহমেদ পরিচালিত চলচ্চিত্রের মধ্যে ‘আগুনের পরশমণি’, ‘শ্যামল ছায়া’, ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’, ‘ঘেটুপুত্র কমলা’ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। টিভি নাট্যকার হিসেবেও তিনি ছিলেন জনপ্রিয়। আশির দশকের মাঝামাঝি তার রচিত প্রথম ধারাবাহিক টিভি নাটক ‘এইসব দিনরাত্রি’ তাকে এনে দেয় ব্যাপক জনপ্রিয়তা।

১৯৭৩ সালে গুলতেকিন খানকে বিয়ে করেন হুমায়ূন আহমেদ। এই দম্পতির চার ছেলেমেয়ে। তিন মেয়ে নোভা, শীলা ও বিপাশা আহমেদ এবং ছেলে নুহাশ হুমায়ূন। দীর্ঘ ৩০ বছরের দাম্পত্য জীবনের অবসান ঘটিয়ে ২০০৩ সালে তিনি অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওনকে বিয়ে করেন। এ দম্পতির দুই ছেলে নিষাদ হুমায়ূন ও নিনিত হুমায়ূন।

বাংলা সাহিত্যে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি একুশে পদক, বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, বাচসাস পুরস্কারসহ বহু পুরস্কার পেয়েছেন।

এই বিভাগের আরও খবর