chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

‘হাওয়াই-মিঠাইয়ের প্রলোভন না দেখিয়ে বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ নিশ্চিত করুন’

নিজস্ব প্রতিবেদক: নগরবাসীকে হাওয়াই-মিঠাইয়ের প্রলোভন না দেখিয়ে বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট আহ্বান জানিয়েছেন নাগরিক উদ্যোগের প্রধান উপদেষ্টা ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খোরশেদ আলম সুজন।

শনিবার (২৪ এপ্রিল) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তিনি এ আহ্বান জানান।

খোরশেদ আলম সুজন বলেন, দেশব্যাপী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মাত্রাতিরিক্ত হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। সংক্রমণ রোধে সরকার নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো জনগণকে ঘরে রাখা। এজন্য সরকার দ্বিতীয় দফায় লকডাউন ঘোষণা করেছে।

‘লকডাউনকালীন ঘরে থাকার সময় জনগণের অপরিহার্য উপাদানগুলোর সরবরাহ নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় নির্দেশনাও প্রদান করা হয়েছে। আমরা নাগরিক উদ্যোগের পক্ষ থেকেও সেবা সংস্থাসমূহকে লকডাউন এবং রমজানকালীন সময়ে বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে বারবার আহ্বান জানিয়েছিলাম।’

তিনি বলেন, সেবা সংস্থার প্রধানরা নগরবাসীকে আশ্বাস দিয়েও প্রতিশ্রুতি পূরণে সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ হয়েছেন। নগরীর আসকার দিঘীর পাড়, ঈশান মহাজন রোড, হালিশহর, শরীফ কলোনীসহ বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুতের ভেলকিবাজি চলছে।

‘লকডাউন ও রমজান ছাড়া ছুটির দিনেও নগরীর বিভিন্ন স্থানে কোন প্রকার পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হচ্ছে যা নগরবাসীর সাথে প্রতারণার সামিল। আমরা বিভিন্ন সূত্রে জানতে পেরেছি বর্তমানে বিদ্যুতের কোন ঘাটতি নেই। তারপরও কি কারণে নগরবাসী বিদ্যুৎ প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হবে তা আমাদের বোধগম্য নয়।’

সাবেক চসিক প্রশাসক বলেন, একে তো লকডাউন তার ওপর ভ্যাপসা গরম, এরকম পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ নাই ভেবে দেখুন তো কী অবস্থা হচ্ছে ঐসব গ্রাহকদের? আমরা সুস্পষ্টভাবে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড এর প্রধান প্রকৌশলীকে জানাতে চাই আপনি খবর নিয়ে দেখুন, আপনার দপ্তরে শস্যের ভিতর কোন ভূত লুকিয়ে আছে কি-না?

‘কী কারণে বিদ্যুৎ খাতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হাজার হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন ভেস্তে যাবে তা অবশ্যই আমাদের খতিয়ে দেখতে হবে।’

তিনি কালবিলম্ব না করে নগরবাসীকে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রদানের সবিনয় অনুরোধ জানান।

সুজন বলেন, চট্টগ্রামের নগরবাসীর সুপেয় পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে একের পর এক বৃহৎ বৃহৎ প্রকল্পের অনুমোদন এবং অর্থের সংস্থান করে যাচ্ছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। ওয়াসা কর্তৃপক্ষ প্রতিদিনই নগরবাসীর কাছে নিত্য নতুন গল্প উপস্থাপন করে কিন্তু বাস্তব অবস্থা হচ্ছে নগরীর অনেকগুলো এলাকা এখনো ওয়াসার সুপেয় পানি প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত।

‘বিশেষ করে যে এলাকা থেকে ওয়াসার পানি প্রকল্পের শুরু সে এলাকা অর্থাৎ মোহরা ওয়ার্ডটিতে এখনো ওয়াসার পানির লাইন নেই বললেই চলে। তাছাড়া বাকলিয়া, খাজা রোড, রঙ্গীপাড়া, উত্তর কাট্টলী এবং পতেঙ্গা এলাকায় ওয়াসার পানি পাওয়া যেন আকাশের চাঁদ হাতে পাওয়ার মতো। কেন কী কারণে এসব এলাকায় পানি সরবরাহ নাই তার কোন সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা কর্তৃপক্ষের কাছে নেই।’

তিনি বলেন, শুধু দেখছি, এই হচ্ছে, এই হবে বলে আশ্বাসেই পরিসমাপ্তি। বৃহত্তর বাকলিয়া একটি বিশাল ঘনবসতিপূর্ণ এলাকা। এই রমজান মাসে সেখানে সরবরাহ করা হচ্ছে আয়রন মিশ্রিত পানি। যা খাওয়ার অযোগ্য তো বটেই ব্যবহারেরও অনুপযোগী। এ ছাড়া অন্য এলাকাগুলিতেও ওয়াসার ইচ্ছে হলে পানি সরবরাহ হয় আর ইচ্ছে না হলে হয় না।

‘বারবার ওয়াসা কর্তৃপক্ষকে আবেদন নিবেদন জানালেও কার্যত এর কোন সঠিক সমাধান তাদের কাছে আছে কিনা তা আমার জানা নেই। বৃহৎ প্রকল্পের কারণে ওয়াসার পানির উৎপাদন ক্ষমতা বেড়েছে কিন্তু বিতরণ ব্যবস্থার অদক্ষতার কারণে নগরবাসী তার কাঙ্ক্ষিত সুফল পাচ্ছে না। আমরা ওয়াসার কাছে আশ্বাস নয়, মাঠে আশ্বাসের সঠিক বাস্তবায়ন চাই।’

সুজন বলেন, ওয়াসা এমডি বারবার নগরবাসীকে আশ্বাস দিয়েছেন কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি যে তারা সুপেয় পানি সরবরাহ দিতে ব্যর্থ হয়েছেন। ওয়াসার অভ্যন্তরে লুকিয়ে থাকা সরকার বিরোধী কেউ সরকারের সুফলগুলো জনগণকে ভোগ করতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে কিনা তাও খতিয়ে দেখার আহবান জানান সুজন।

এমআই/চখ

এই বিভাগের আরও খবর