চট্টগ্রামে রমজানের দুই সপ্তাহ আগেই বেড়েছে ইফতার সামগ্রীর দাম
ইফতেখার নিলয় : রমজান শুরু হতে বাকি আর মোটে দুই সপ্তাহ। দুই সপ্তাহ আগে থেকেই চট্টগ্রামের বাজারগুলোতে ইফতারে ব্যবহারযোগ্য পণ্যসামগ্রীর দাম বাড়তি লক্ষ্য করা গেছে।
বৃহস্পতিবার (১ এপ্রিল) সকালে নগরীর চকবাজারের পাইকারি দোকানগুলো ঘুরে দেখা গেছে চিনি, আদা, রসুন, মসুর ডাল, ছোলা, চিড়াসহ ইফতারে অন্যান্য পণ্যের দাম রমজানের দুই সপ্তাহ পূর্বেই বাড়তি রয়েছে।
এদেশের ঘরে ঘরে ইফতারে মুখরোচক খাবার গ্রহণের প্রবণতা বেশি। যুগ যুগ ধরে চলে আসছে এ সংস্কৃতি। বিশেষ করে ভাজা-পোড়া জাতীয় মুখরোচক খাবার গ্রহণ করা হয় বেশি।
তাই রমজান আসলেই বেড়ে যায় ছোলা, মসুর ডাল, আদা, আলু ও রসুনের দাম।
সারাদিনের ক্লান্তি দূর করতে রোজাদাররা সূর্যাস্তের পর রোযা ভঙ্গ করেন শরবত পান করে।
এ শরবত তৈরিতে মুখ্য উপাদান চিনি, আর বর্তমানে বাজারে চিনির দাম চলছে কেজিপ্রতি ৬৫-৬৮ টাকা। বাজারে চিড়া ও চিনির দামের মাঝে কোনো পার্থক্য নজরে আসেনি।
বিভিন্ন ধাঁচের ছোলা কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৯০ টাকা পর্যন্ত। একইসাথে কয়েক রকমের মসুর ডাল ৭০ টাকা থেকে শুরু করে ১১০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।
কয়েক রকমের মসুর ডাল বিক্রি হলেও ক্রেতাদের চাহিদার শীর্ষে থাকা মসুর ডাল ১১০ টাকায় বিক্রি হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন তারা। ছোলার ক্ষেত্রেও একই সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন ক্রেতারা।
অন্যান্য পণ্যের মত বাজারে রসুন ও আদা বিক্রি হচ্ছে চওড়া দামে। রসুনের কেজি ১১০ টাকা ও আদার কেজি ৮০ টাকা।
বাবুল স্টোরের সত্ত্বাধিকারী বাবুল চট্টলার খবরকে বলেন, ‘ব্যবসায়ী পরিচয়ের আগে আমরাও ক্রেতা। এক্ষেত্রে আমাদেরও ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে সব পণ্য। রমজানে ক্রেতাদের চাহিদা বাড়লেও দাম বেশি থাকায় ক্রেতারাও পর্যান্ত পণ্য ক্রয় করতে পারছেনা।’
তবে ইফতারে আলুর চপ, বেগুণী তৈরিতে ব্যবহৃত জিনিসপত্রের দাম কিছুটা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আলুর কেজি ২০ টাকা এবং বেগুণ বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়।
ইফতারে মুখরোচক খাবারের সাথে সালাদ একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। বাজারে সালাদ তৈরির সামগ্রী শসা, গাজর ও টমেটুর দামও রয়েছে নিয়ন্ত্রণে। শসা, গাজর ২০ টাকা ও টমেটু বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়।
বাজারের নিয়মিত ক্রেতা শরীফ চট্টলার খবরকে বলেন, ‘করোনার প্রকোপ নতুন করে বেড়েছে, এতে করে জনজীবনে স্থবিরতা নেমে এসেছে। রমজান সন্নিকটে এ অবস্থায় দাম বেড়ে যাওয়া মানে আমাদের মত নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারদের বিপদ বেড়ে যাওয়া।’
এ ব্যাপারে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন চট্টলার খবরকে বলেন, ‘এটা প্রতিবছরের চিত্র, রমজান আসলেই তারা দাম বৃদ্ধি করে ফেলে। যদিও এবার দু-তিন মাস আগেই বাড়ানো হয়েছে দাম। ব্যবসায়ীরা বিভিন্ন সময় আন্তর্জাতিক বাজারের দোহাই দেয়। এগুলো তাদের সাজানো কিছু বুলি। তারা প্রতিবছর এগুলো বোলে বেড়ায়।’
বাজারে একেক দোকানে একেক রকম দাম চাওয়ার অভিযোগও উঠেছে ক্রেতাদের কাছ থেকে। বাজারে সমন্বয়হীনতার অভাব বলে মনে করছেন তারা। রমজানের আগ মূহুর্তে আকস্মিক এমন মূল্যবৃদ্ধিতে হতাশা প্রকাশ করেছেন তারা।
ইনি/এএমএস/চখ