chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

চট্টগ্রামে অধিকাংশ সড়কের বেহাল দশা

নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রাম নগরীর অধিকাংশ সড়কেরই বেহাল দশা। সড়কগুলো ছোটবড় খানাখন্দে ভরা। সাম্প্রতিক বৃষ্টিপাতে রাস্তার আরো ক্ষতি হয়েছে।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের তথ্য অনুযায়ী, নগরীর প্রায় ১৫০ কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কর্পোরেশন ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তা সাময়িকভাবে মেরামত করলেও বৃষ্টির কারণে আবার তা ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে যাচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলোর মধ্যে বারিক বিল্ডিং থেকে সদরঘাট পর্যন্ত স্ট্র্যান্ড রোড এবং অলংকার মোড় থেকে বন্দরের নিমতলা পর্যন্ত পোর্ট কানেকটিং রোডের (পিসি রোড) অবস্থা খুবই ভয়াবহ। এছাড়া লালখানবাজার থেকে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত সড়কের অবস্থা বারিক বিল্ডিংয়ের পর থেকে খুবই জরাজীর্ণ। সামান্য বৃষ্টি হলেই ইপিজেড এলাকার কয়েকটি স্থানে রাস্তায় হাঁটু সমান পানি জমে যায়। তখন পানি সরে যাওয়ার জন্য গাড়িগুলোকে ঠাঁয় দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। ভাঙাচোরা সড়কে চলাচল করতে গিয়ে যাত্রীদেরকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। ভাঙা রাস্তায় ধীরগতির কারণে প্রায়ই যানজট সৃষ্টি হয়। এ কারণে বিমানবন্দরগামী যাত্রীরা ফ্লাইট মিস করেন। বন্দর কেন্দ্রীক পণ্যবাহী ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান সময়মত গন্তব্যে পৌঁছাতে পারে না।

গতকাল শুক্রবার সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, বারিক বিল্ডিং থেকে সদরঘাট পর্যন্ত স্ট্র্যান্ড রোডের বিভিন্ন স্থানে বড়বড় গর্ত হয়েছে আর কাদা জমে আছে। এই সড়কে প্রায়ই ট্রাক, কাভার্ড ভ্যানসহ বিভিন্ন যানবাহন উল্টে যায়। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের কর্মীরা রাস্তায় ইট বিছিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত অংশ সাময়িকভাবে মেরামত করছেন। তবে এই মেরামতের স্থায়ী সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। গত কয়েকদিন ধরে নগরীতে প্রায় প্রতিদিনই বৃষ্টি হয়েছে। এতে বিটুমিন উঠে গিয়ে রাস্তায় আবার গর্ত সৃষ্টি হয়েছে।

একই অবস্থা পিসি রোডেরও। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পণ্য নিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার ট্রাক এই রাস্তা দিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে আসাযাওয়া করে। ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে গুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তাটি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান চালক ও হেলপাররা জানান, ভাঙা সড়ক দিয়ে চলাচল করার কারণে প্রায়ই গাড়ি গর্তে পড়ে উল্টে যায়। গর্তে পড়লেই স্প্রিং ভাঙে, চাকা যায়। একটা স্প্রিং লাগাতে লাগে এক হাজার টাকা। একটা চাকা পাল্টাতে লাগে ২৫ হাজার টাকা।
এ দুটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ছাড়াও নগরীর সিমেন্ট ক্রসিং মোড় সংলগ্ন অংশে চলছে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ। বারিক বিল্ডিং মোড় থেকে ফকিরহাট পর্যন্ত সড়কের বন্দর সংলগ্ন অংশে ওয়াসার রোড কাটিং শেষে এখন চলছে মেরামতের কাজ।

আরাকান সড়কের বহদ্দারহাট মোড় থেকে বাস টার্মিনাল হয়ে চান্দগাঁও পর্যন্ত সড়কের একপাশ, অনন্যা আবাসিক এলাকার মূল সড়ক, ফিরিঙ্গিবাজার কাজী নজরুল ইসলাম সড়ক, জাকির হোসেন রোড, মুরাদপুর ও অক্সিজেন এলাকার সড়কও বেহাল। পাশাপাশি ষোলশহর দুই নম্বর গেট, কাপ্তাই রাস্তার মোড় এলাকার সড়ক খানাখন্দে ভরা। রাইফেল ক্লাব মোড় থেকে বোস ব্রাদার্স হয়ে আর নন্দনকানন সড়কটিও বিটুমিন উঠে ইট বের হয়ে আছে।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন সাংবাদিকদের বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তার মধ্যে স্ট্র্যান্ড রোড ও পিসি রোডের অবস্থা বেশি খারাপ। এর মধ্যে পিসি রোডের সংস্কার কাজ ৭০ ভাগ শেষ হয়েছে। বাকি কাজও জরুরি ভিত্তিতে শেষ করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। স্ট্র্যান্ড রোডের সংস্কার কাজ শেষ হবে তিনটি পর্যায়ে। এ দুটি সড়ক ছাড়া বাকিগুলোর অবস্থা ভালো উল্লেখ করে সুজন বলেন, বিমানবন্দর সড়কে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের কাজ চলছে। সেটা শেষ না হওয়া পর্যন্ত নগরবাসীকে কিছুটা কষ্ট সহ্য করতেই হবে। উন্নয়ন কাজের জন্য আমাদেরকে কিছুদিন ধৈর্য ধারণ করতেই হবে। এছাড়া কিছু রাস্তার কাজ বাকি আছে যেগুলো চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের অধীনে চলমান জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের আওতাধীন। সব মিলিয়ে খুব বেশিদিন নগরবাসীকে অপেক্ষা করতে হবে না। অচিরেই আমরা একটি সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন শহর উপহার দিতে পারবো।

 

এই বিভাগের আরও খবর