chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

বৃদ্ধা মাকে নিজ ঘর থেকে বিতাড়িত করল ছেলে ও বউ, ফিরিয়ে দিলেন ইউএনও

নিজস্ব প্রতিনিধি : নিজস্ব প্লট এবং নিজের গড়া একটি সুন্দর সেমিপাকা ঘর থাকার পরও দীর্ঘ দিন ধরেই রত্নগর্ভা মায়ের ঠাঁই হয়েছে রান্নাঘরের পাশে একটি জরাজীর্ণ রুমে।

তাতেও বিন্দুমাত্র দুঃখ বা আক্ষেপ ছিলোনা ষাট বছর বয়সী বৃদ্ধা মা আকলিমা বেগম (৬০)র। নিজের সব কিছু সন্তানকে উজাড় করে দিয়েও সন্তুষ্ট মনে জীবন পার করছিলেন এই মা

তবে তার শেষ সান্তনাটাও শেষ হয়ে যায় যখন ছেলে আবুল কালাম এবং তার বউ মিলে নিজের সাজানো ঘর থেকে তাকে বিতাড়িত করে। জীবনের শেষ বয়সে পৌছে যার থাকার জায়গা হয়নি নিজেরই ঘরে।

বুধবার (১৪ অক্টোবর) চট্টগ্রামের হাটহাজারী পৌরসভার আদর্শগ্রামের দক্ষিণ পাহাড়ের মাছুম ফকিরের বাড়িতে এই হৃদয় বিদারক ঘটনাটি ঘটে।

জানা যায়, পারিবারিক কলহের জের ধরে মায়ের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে জীবনের শেষ আশ্রয়স্থল সেই জরাজীর্ণ ঘর থেকেও মাকে বের করে দেয় তার ছেলে ও তার বউ।

তবে কথায় আছে রাখে আল্লা মারে কে? ভাগ্যক্রমে সেই দুঃখিনী মায়ের পাশে দাড়ায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুহুল আমিন। উপজেলা পরিষদে ইউএনওকে অশ্রুসিক্ত নয়নে সকল দুঃখের কাহিনী খুলে বলেন বৃদ্ধা অসহায় মা আকলিমা।

অভিযোগ শুনে মুহুর্তেই ঘটনাস্থলে গিয়ে ঘটনার সত্যতা পান উপজেলা নির্বাহী অফিসার। নিজের ঘর থেকে বিতাড়িত আকলিমা বেগমকে নিজের ঘর ফিরিয়ে দিয়ে পার্শ্ববর্তী সকলের সহযোগীতা কামনা করেন।

উপজেলা প্রশাসন ওই ঘরে থাকা পুত্র ও তার পরিবারকে বের করে দিয়ে প্লটের মূল মালিক ষাটোর্ধ মহিলা আকলিমাকে বুঝিয়ে দিয়েছেন।

বৃদ্ধা আকলিমা বেগম জানান, আমি অসহায় দরিদ্র। আমার নিজস্ব জায়গা আছে, ছেলে মেয়ে থাকার পরেও বিগত ৬/৭ বছর ধরে জরাজীর্ণ রান্না ঘরের এক কোনে আমার বসবাসের স্থান হয়। এর পরেও আমি সন্তুষ্ট ছিলাম।

কিন্তু আজ বুধবার সকালে ছেলের সাথে ঝগড়া হওয়াতে আমার সকল জিনিসপত্র বাইরে ফেলে দিয়ে সেই রান্না ঘর থেকেও আমাকে বের করে দেয়া হয়। ইউএনও স্যারকে পুরো ঘটনা খুলে বললে তিনি আমার ঘর আমাকে ফিরিয়ে দেন।

এ বিষয়ে হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মাদ রুহুল আমিন জানান, ষাটোর্ধ এক মহিলা অভিযোগ করেন তার পুত্র তাকে নিজের ঘর থেকে বের করে দিয়েছে। যিনি জায়গার মূল মালিক তিনিই উচ্ছেদ এমন দুঃখজনক কথাগুলো শুনে দ্রুত ওই এলাকায় গিয়ে সত্যতা পায়।

অসহায় বৃদ্ধ মাকে তার ঘর বুঝিয়ে দিয়ে তার ছেলে ও পরিবারকে বুঝানো হয়। জায়গার মুল মালিককে সন্তুষ্ট রেখে যদি থাকতে পারে তবে ভাল অন্যথায় কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা বলে ছেলে ও তার পরিবারকে সতর্ক করা হয়।

চখ/রাজীব

এই বিভাগের আরও খবর