করোনার দ্বিতীয় জোয়ার ও আমাদের সতর্কতা
আসিফ মোহাম্মদ সজীব : বিশ্বব্যাপী ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে করোনাভাইরাস। আসন্ন শীতে করোনার সেকেন্ড ওয়েভ বা দ্বিতীয় জোয়ার আসতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ইতোমধ্যে ইউরোপের কয়েকটি দেশে করোনার হার উর্ধ্বমুখী হতে শুরু করেছে। যাদের ফুসফুস এর সমস্যা (সিওপিডি) এবং অ্যালার্জি রয়েছে, আসছে শীতে তাদের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে করোনাভাইরাস। ফলে বিশ্বব্যাপী করোনা সংক্রমণের হার বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়তে পারে।
অন্যান্য দেশের মত বাংলাদেশেও শীতে করোনার দ্বিতীয় ধাক্কা আসতে পারে সতর্ক করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি এই ধাক্কা মোকাবেলায় প্রস্তুত থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশ দিয়েছেন।
এই মহামারির প্রকোপ বাড়তে পারে সেটা মাথায় রেখে জেলা হাসপাতালগুলো প্রস্তুত করছেন। প্রত্যেকটা জেলা হাসপাতালে আইসিইউ নির্মাণ থেকে শুরু করে অক্সিজেনের ব্যবস্থাসহ সব ধরনের চিকিৎসাসেবার ব্যবস্থা করে দিচ্ছি বলে জানিয়েছেন।
সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো খুলে দেয়ার আগে ৯টি নির্দেশনা প্রতিপালন করতে মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে।
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, সারা বিশ্বে এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন প্রায় সাড়ে ১০ লাখ। আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা সাড়ে তিন কোটি ছাড়িয়েছে। বাংলাদেশে করোনায় মারা গেছে ৫ হাজার ৩৭৫ জন। শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৩ লাখ ৭০ হাজার ১৩২ জন।
বাংলাদেশে করোনা প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার প্রবণতা খুবই হতাশাদায়ক।অফিস-আদালত, ব্যাংক, গণপরিবহণ, বাজার, শপিং মলসহ সর্বত্রই মানুষের অবাধ বিচরণ। সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার বালাই নেই বললেই চলে।
কাউকে হাত ধোয়া কিংবা মাস্ক পরিধান করার অনুরোধ করা হলে নানা ধরনের অপমানসূচক কথাবার্তা শুনতে হচ্ছে। করোনা নিয়ে আগে সাধারণ মানুষের মধ্যে যে ভয়ভীতি কাজ করতো তা আর নেই। জনগণ যদি স্বাস্থ্য নির্দেশিকাগুলো উপেক্ষা করে তবে সংক্রমণ ভয়াবহভাবে বাড়তে পারে বলে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা আশংকা করছে।
বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস নিয়ে দেশে–বিদেশে উদ্বেগ বাড়ছে। কিন্তু নিজেকে আর নিজের পরিবার, স্বজনদের রক্ষা করতে একজন সচেতন নাগরিকের ভূমিকা কী হওয়া উচিত এ বিষয়ে মানুষকে সচেতন করতে কিছু উপদেশ দিচ্ছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট।
শীতকালে বিয়ে ও পিকনিকসহ নানা অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। এসব অনুষ্ঠান এড়িয়ে চলাই ভালো।
বারবার হাত ধোয়া,সর্দি–কাশি, জ্বর বা অসুস্থ ব্যক্তির কাছ থেকে অন্তত এক মিটার বা ৩ ফুট দূরত্ব বজায় রাখা, অসুস্থ পশুপাখি থেকে দূরে থাকা, অপরিষ্কার হাত দিয়ে কখনো নাক–মুখ–চোখ স্পর্শ না করা, কাশির আদবকেতা মেনে চলা, কাশি বা হাঁচি দেওয়ার সময় নাক, মুখ রুমাল বা টিস্যু, কনুই দিয়ে ঢাকা, নাক-মুখ ঢাকার জন্য মাস্ক ব্যবহার করা, কাঁচা মাছ–মাংস ভালো করে সেদ্ধ করে রান্না করা, ভ্রমণে সতর্ক থাকা,জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বিদেশভ্রমণ করা থেকে বিরত থাকা ইত্যাদি।
চখ/এম.ফ.এ