chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

যৌতুকের টাকা না পেয়ে অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধকে পিঠিয়ে হত্যা

চন্দনাইশে যৌতুকের টাকা না পেয়ে মুক্তা আক্তার (২৬) নামের এক অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। বেধম মারধরের পর ওষুধ খাইয়ে তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ ভিকটিম মুক্তার পরিবারের।

রবিবার রাতে উপজেলার সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের পলিয়ার পাড়ার নদ্দিয়ার বাড়ি এলাকা থেকে ওই গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

এ ঘটনায় অভিযুক্তরা হলেন- নিহতের গৃহবধূর স্বামী মো. পারভেজ (৩৬) ও শাশুড়ি জাহানারা খাতুন (৫৪)।

নিহত গৃহবধূ মুক্তা আক্তার উপজেলার হাশিমপুর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ হাশিমপুর গ্রামের ভান্ডারী পাড়ার নাছির উদ্দিনের কন্যা।

এর আগে, রবিবার বিকেল ৪টার দিকে নিহত গৃহবধূ মুক্তা আক্তার অসুস্থ জানিয়ে তার পরিবারকে খবর দেওয়া হয়। এরপর তার পরিবারের সদস্যরা এসে মুক্তা আক্তারকে দোহাজারী ৩১ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে যান। তখন তার শারীরিক অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠান।

পরবর্তীতে ওই গৃহবধূকে নিয়ে তার পরিবারের সদস্যরা চট্টগ্রাম নগরীতে অবস্থিত চমেক হাসপাতালের যাওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

নিহত গৃহবধূর চাচাতো ভাই সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘২০১৯ সালে আমার চাচাতো বোনের সঙ্গে প্রবাসী মো. পারভেজের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। তাদের ঘরে আড়াই বছরের একটি সন্তান রয়েছে। এ ছাড়াও বর্তমানে আমার চাচাতো বোন তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা। গত তিন মাস আগে আমার দুলাভাই মধ্যপ্রাচ্যের দেশ ওমান থেকে দেশে আসেন। তিনি প্রায় সময় প্রবাসে কষ্টে আছেন দাবি করে আমার চাচার থেকে পর্যায়ক্রমে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা যৌতুক নিয়েছেন। সম্প্রতি তিনি আমার চাচাতো বোনকে তার বাবার থেকে আরও ৫ লাখ টাকা এনে দিতে বলেন। এতে সে অস্বীকৃতি জানালে তার স্বামী ও শাশুড়ি মিলে তাকে অমানুষিক নির্যাতন করেন। তার পুরো শরীরে এখনো পর্যন্ত আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। আমরা এই হত্যাকাণ্ডের সঠিক বিচার চাই।’

নিহত গৃহবধূর পিতা নাছির উদ্দিন বলেন, ‘আমার মেয়ের স্বামী ও শাশুড়ি মিলে যৌতুকের জন্য প্রায় সময় তাকে নির্যাতন করত। সে তাদের নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে অনেকবার আমার বাড়িতে চলে আসতে চেয়েছিল। তার একটি আড়াই বছরের সন্তানের কথা চিন্তা করে আমি তাকে প্রতিনিয়ত সান্ত্বনা দিয়েছি। অবশেষে তারা আমার মেয়েকে বেধড়ক মারধর করে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত সকলের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’

চন্দনাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম সরোয়ার বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়াও ঘটনাটি তদন্তপূর্বক জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হবে।’

তাসু/চখ

এই বিভাগের আরও খবর