চট্টগ্রামে স্যুয়ারেজ উন্নয়নে বড় পদক্ষেপ

◑হালিশহরে ৩টি ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট

◑ ওয়াসা সাশ্রয় ৪২০০ কোটি টাকা

চট্টগ্রাম ওয়াসার বহুল আলোচিত স্যুয়ারেজ প্রকল্পে বড় ধরনের অগ্রগতি ঘটেছে। প্রকল্পের আওতায় হালিশহর এলাকায় এখন একটি নয়, মোট তিনটি ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট নির্মিত হচ্ছে, যার ফলে ওয়াসা সাশ্রয় করতে পারছে প্রায় ৪২০০ কোটি টাকা। জমি অধিগ্রহণের অতিরিক্ত ব্যয় এড়াতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পতেঙ্গা ও কাট্টলী ক্যাচমেন্টের ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্টও হালিশহরেই স্থাপন করা হচ্ছে।

প্রকল্পের ইতিহাস ঘেঁটে দেখা যায়, এটি একনেকে অনুমোদিত হয় ২০১৮ সালের ৭ নভেম্বর। পরের বছর নিয়োগ দেওয়া হয় প্রকল্প পরিচালক ও কারিগরি পরামর্শক কমিটি। তবে ২০২০ সালে করোনা মহামারির কারণে বিদেশি পরামর্শকরা নিজ দেশে আটকা পড়ায় কার্যক্রমে বিলম্ব ঘটে। অবশেষে ২০২২ সালের জানুয়ারিতে কাজ শুরু হয়।

বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়নে প্রকল্পের মূল ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩৮০৮ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। বর্তমানে প্রকল্পের ৬৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। ২০০ কিলোমিটার দীর্ঘ পাইপলাইন বসানো হচ্ছে, যার মধ্যে ৯০ কিলোমিটার ইতোমধ্যে বসানো সম্পন্ন হয়েছে। পাইপলাইন বসানো হচ্ছে ২ থেকে ১৪ মিটার গভীরতায়। পাশাপাশি হালিশহরে চলছে পয়োশোধনাগার ও ফিক্যাল স্লাজ ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট নির্মাণ, যা প্রায় ৬৫ শতাংশ সম্পন্ন।

চলতি বছরের (২০২৫) জুনে প্রকল্প শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখনও বাকি রয়েছে ৩৫ শতাংশ কাজ। ফলে প্রকল্পে সময় ও ব্যয় বৃদ্ধির প্রস্তাব নিয়ে তৈরি করা হয় একটি সংশোধিত পরিকল্পনা, যা আজ ২০ এপ্রিল একনেক সভায় অনুমোদিত হয়েছে। সংশোধিত প্রস্তাবে ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে অতিরিক্ত ১৪১০ কোটি টাকা। এই ব্যয় বৃদ্ধির কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছে—ডলারের মূল্যবৃদ্ধি, ২০১৪ সালের রেট সিডিউল থেকে ২০১৮ সালের রেট কার্যকর হওয়া, এবং আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় বাজারে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি।

চট্টগ্রাম স্যুয়ারেজ প্রকল্পের পরিচালক ও চট্টগ্রাম ওয়াসার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম জানিয়েছেন, তিনটি প্ল্যান্ট এক জায়গায় স্থাপন করায় প্রায় ৪২০০ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে, যা মূলত জমি অধিগ্রহণের ব্যয় হতো অন্য এলাকায় প্ল্যান্ট নির্মাণ করলে।

প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিষ্ঠান তায়ং ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড। এটি সম্পন্ন হলে চট্টগ্রাম নগরের প্রায় ২০ লাখ মানুষ আধুনিক স্যুয়ারেজ সুবিধার আওতায় আসবে। এখন পর্যন্ত ১০ হাজার গ্রাহককে সংযোগ দেওয়া হয়েছে, যা প্রকল্প শেষে ২৮ হাজারে উন্নীত হবে।

◑ ফখ|চখ