বিদেশে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার, ডিজিটাল ডিভাইসসহ গ্রেপ্তার ১
সিএমপি’র কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের সাইবার ইউনিটের অভিযানে বিদেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তিচ্ছু বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো চক্রের এক সদস্য গ্রেপ্তার হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) বগুড়া সদর থানা পুলিশের সহায়তায় বেলা ১১টার দিকে বগুড়া সদর থানাধীন ঠনঠনিয়া এলাকা হতে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
অভিযুক্তের নাম আব্দুল্লাহ আল জুনায়েদ (২১)। তার কাছ থেকে একটি ল্যাপটপ ও একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে, যা অপরাধে ব্যবহার করা হয় বলে জানায় পুলিশ।
সিএমপি জানায়, গ্রেপ্তার জুনায়েদ “ড্রেক ফর রিজন” নামের একটি ফেসবুক পেজ পরিচালনার মাধ্যমে ভুয়া ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়িয়ে বিদেশে স্কলারশিপ পাওয়া শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাতেন। তার এই কর্মকাণ্ডের ফলে ইতোমধ্যে একাধিক শিক্ষার্থীর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির বিষয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে।
একজন শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রে দেখা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের একটি কলেজে স্কলারশিপসহ ভর্তির সুযোগ পাওয়ার পর, গত ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখে ওই ফেসবুক পেজে তার বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন পোস্ট দেওয়া হয়। এতে বলা হয়, তিনি ভুয়া সুপারিশপত্রের মাধ্যমে ভর্তি হওয়ার চেষ্টা করছেন। পরদিন, সংশ্লিষ্ট কলেজ কর্তৃপক্ষ অভিযোগ পায় এবং তার ভর্তির প্রক্রিয়া স্থগিত করা হয়।
সাইবার ইউনিট জানায়, অভিযুক্ত ব্যক্তি ভিকটিমের ল্যাপটপ থেকে বেআইনিভাবে তথ্য চুরি করে, তার রচনাসমূহের অংশ কেটে তা ভুয়া বলে দাবি করে। এমনকি অনুমতি ছাড়া তার ছবি প্রকাশ করে ফেসবুক পোস্টে ভিকটিমকে যোগাযোগ করার আহ্বান জানায়, যা মূলত ব্ল্যাকমেইল বা আর্থিক লাভের উদ্দেশ্যে করা হয়েছে।
আরও ভয়াবহ তথ্য উঠে এসেছে তদন্তে,অভিযুক্তদের হাতে প্রায় ৩০০-৪০০ জন বিদেশে চান্স পাওয়া ছাত্রছাত্রীর তথ্য রয়েছে এবং তারা তাদের বিরুদ্ধেও অপপ্রচারে লিপ্ত। এমনকি দূতাবাসগুলোতেও অভিযোগ করার হুমকি দেওয়া হয়েছে।
এই ঘটনায় ভিকটিম ও অন্যান্য ছাত্রছাত্রীরা চরম মানসিক হয়রানি, উৎকণ্ঠা ও ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। মামলা হয়েছে সাইবার নিরাপত্তা আইন ২০২৩ এর ধারাসমূহ ১৯/২৩/২৫/৩২/৩৩/৩৬ অনুযায়ী, খুলশী থানায় গত ফেব্রুয়ারি মাসের ২ তারিখ চতুর্থ মামলাটি করা হয়।
সিএমপি জানিয়েছে, গ্রেপ্তারের সময় অভিযুক্ত তার অপরাধে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। তার এই কাজকে মেধাবী শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ ধ্বংস করার পরিকল্পিত প্রচেষ্টা বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
সিএমপি’র কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগ জানিয়েছে, সাইবার অপরাধ ও অনলাইন অপপ্রচারের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করা হচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও এ ধরনের অভিযান চলবে।