chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

চট্টগ্রামে ৪টি পানি সরবরাহ প্রকল্পে উৎপাদন কমেছে দৈনিক ৫ কোটি লিটার

বৃষ্টির দীর্ঘ অনুপস্থিতি আর প্রাকৃতিক ভারসাম্যহীনতায় হালদা ও কর্ণফুলী নদীতে বাড়ছে লবণের পরিমাণ। ফলে চট্টগ্রাম মহানগরীর গুরুত্বপূর্ণ চারটি পানি সরবরাহ প্রকল্পে উৎপাদন কমে গেছে দৈনিক ৫ থেকে ৬ কোটি লিটার। সরবরাহ সংকটে পড়েছে ওয়াসার কয়েক লাখ গ্রাহক।

গত তিন মাস ধরেই চলছে এই সংকট, যার অন্যতম কারণ হিসেবে উঠে আসছে কাপ্তাই লেকে পানির পরিমাণ কমে যাওয়া এবং সাগরের লবণ পানির আগ্রাসন।

ওয়াসা সূত্র জানায়, অমাবস্যা ও পূর্ণিমার প্রভাবে নদীতে লবণাক্ততা বাড়ে। এমন পরিস্থিতিতে মোহরা, মদুনাঘাট, পোমরা এবং কর্ণফুলী প্রকল্প-১ ও ২-এ উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। কাপ্তাই লেকে বর্তমানে পানির স্তর যেখানে স্বাভাবিক সময় ১০৯ এমএসএল থাকার কথা, সেখানে রয়েছে মাত্র ৮৭.৭৭ এমএসএল। এতে কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৫টির মধ্যে চালু রয়েছে কেবল একটি ইউনিট। সেখান থেকেই বঙ্গোপসাগরের লবণ পানি হালদা পর্যন্ত ঢুকে পড়ছে জোয়ারের সময়।

চট্টগ্রাম ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী মাকসুদ আলম বলেন, “নদীর পানিতে লবণের মাত্রা যখন ২১০০ থেকে ২৩০০ মিলিগ্রাম প্রতি লিটার ছাড়িয়ে যায়, তখন পানি উত্তোলন বন্ধ রাখতে হয়। এতে প্রকল্পভেদে দৈনিক উৎপাদন কমে যাচ্ছে দুই থেকে তিন কোটি লিটার পর্যন্ত। স্বাভাবিক সময়ে যে উৎপাদন হতো ৪৬ কোটি লিটার, তা কমে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৪০ কোটি লিটারে।”

গত ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া লবণাক্ততা জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। এবারের ঈদের সময় হালদায় রেকর্ড ২৩০০ মিলিগ্রাম লবণ প্রতি লিটারে পাওয়া যায়। তবে অমাবস্যা কেটে যাওয়ায় পরিস্থিতি কিছুটা স্থিতিশীল হলেও টেকসই সমাধান নির্ভর করছে বৃষ্টির ওপর।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, উজানে পানির স্বল্পতা, কাপ্তাই লেকে পানি কমে যাওয়া এবং উপকূলীয় সাগরীয় জোয়ারের প্রকোপ—সব মিলিয়ে চট্টগ্রামে পানির সরবরাহ পড়েছে হুমকিতে। এখন শুধু নগরবাসী নয়, ওয়াসাও তাকিয়ে আছে একটানা কয়েকদিনের বৃষ্টির দিকে—যা ফিরিয়ে দিতে পারে নদীর ভারসাম্য, কমাতে পারে লবণাক্ততা, বাড়াতে পারে বিশুদ্ধ পানির উৎপাদন।

ফখ|চখ

এই বিভাগের আরও খবর