chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

গুমাইবিলে ফলন বাড়ছে ১০০০ মেট্রিক টন

এ বছর হেক্টর প্রতি গড় উৎপাদন .২ মেট্রিক টন বেড়েছে : উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা

শীতের সকালের মিঠে-কড়া রোদে ভাসছে জনপদ। হেমন্তের হালকা হিমেল হাওয়া হাওয়ায় দুলছে সোনালি ধান । বিস্তীর্ণ মাঠে ক্ষেতের আল ধরে আটিবাঁধা ধান নিয়ে দলে দলে কৃষকেরা ছুটছেন । সারাদিনেও ফুরসত নেই জিরানোর। তবু তৃপ্তির হাসি তাঁদের চোখে-মুখে।

গতকাল এ দৃশ্য চোখে পড়ে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার গুমাই বিলে। উপজেলার চারটি ইউনিয়ন ও পৌরসভার একাংশজুড়ে বিশাল এ বিল । কথিত আছে চট্টগ্রামের গুমাই বিলে সারা দেশের মানুষের আড়াই দিনের খাবার (চাল) মজুত আছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ক্ষেতের আল ধরে কৃষকেরা মাঠ থেকে ধানের ভার (ধানের আটি) নিয়ে আসছেন। কেউ কেউ ধানগাছ থেকে ধান আলাদা করছেন রাস্তার ধারে। আবার কেউ সেই ধানগুলো বস্তায় ভরছেন। বিলের ধারে রাস্তার উপরই দর কষাকষি করে বেপরীরা ধানগুলো কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।

 

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরুল কায়েস বলেন, এ বছর আবহাওয়া ভাল থাকায় গুমাই বিলে ভাল ফলন পাওয়া যাবে বলে আশা করছি।

তিনি জানান, “এ বছর গুমাই বিলে ৩২০০ হেক্টর জমিতে আমন চাষ করা হয়েছে। যেখান থেকে প্রায় ১৬ হাজার ৫৬০ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এ বছর হেক্টর প্রতি গড় উৎপাদন .২ মেট্রিক টন বেড়ে ৫.৩ হবে। গত বছর যা ছিলো ৫.১ মেট্রিক টন। ফলে এ বছর গুমাই বিলে মোট ১৬ হাজার ৫৬০ মেট্রিক টন ধান উৎপন্ন হবে। এটি গত বছরের চেয়ে এক হাজার মেট্রিক টন বেশি। কৃষক তাদের ক্ষেতের ৮৫ শতাংশের মত ফসল ঘরে তুলেছেন, মাঠে রয়েছে বাকি ১৫ শতাংশ ধান। ”

রাঙ্গুনিয়ার নজরের টিলা এলাকার কৃষক মো. হেলাল জানান, “এবার ২০-৩০ কানি জমিতে আমনের চাষাবাদ করেছি। প্রতি কানি জমিতে ২৫ মণ (১০০ আরি) ধান উৎপাদন হওয়ার আশা করছি। ”

এবার বাজারে ধানের দাম কেমন পাচ্ছেন জানতে চাইলে তিনি জানান, “এবারে প্রতি আরি (১০ কেজি) ধানের দাম পাওয়া যাচ্ছে ৩১০ টাকা। গতবারও এ দামেই বিক্রি হয়েছে।”

এছাড়াও এলাকার কৃষক ফরিদ, নুরুদ্দিন, সিরাজ ও মোকাররম অভিযোগ করেন, “বাজারে চালের দাম বাড়লেও ধানের দাম কিন্তু বাড়েনি। এখানে সিন্ডিকেট করে বেপারীরা কম দামে ধান কিনে নিয়ে যান। আবার অন্যদিকে সরকারি গুদামে ধান দিতে গেলে জায়গায় জায়গায় টাকা দেওয়া লাগে, পাশাপাশি ধানও বেশি দেওয়া লাগে। ”

গুমাইবিলের কৃষকরা বাম্পার ফলনে খুশি হলেও তাদের কিছু সমস্যাও তুলে ধরেছেন এগুলো হলো, ধানের ন্যায্যমূল্য পাওয়ার ব্যবস্থা করা, কম দামে সার পাওয়ার ব্যবস্থা করা, বিলের অবকাঠামো তথা রাস্তাঘাটের উন্নয়ন ও পাকা সেচ নালার ব্যবস্থা করা।

 

 

এই বিভাগের আরও খবর