chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

আমন চাষে বাম্পার ফলন, চকরিয়ায় কৃষকের মুখে হাসি

কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ১৮ ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা এলাকায় ৪৮ হাজার ১৬৫ একর জমিতে চলতি মৌসুমে আমন চাষে বাম্পার ফলন হয়েছে, ফলে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার নেওয়া পরিকল্পনা মোতাবেক মাঠপর্যায়ে নিয়োজিত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের সঠিক নির্দেশনার আলোকে রোগবালাই সহনশীল জাতের ধান রোপণের ফলে আমন চাষে পোকামাকড়ের আক্রমণ থেকে রক্ষা পেয়েছে ফসলের ক্ষেত। তাতে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে চলতি মৌসুমে ধানের ফলন হয়েছে আশানুরূপ। এতে করে এবার আমনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের মাধ্যমে কৃষকরা কমপক্ষে ২০০ কোটি টাকার ধান (খাদ্যশস্য) উৎপাদনের নতুন সম্ভাবনা তৈরি করেছেন।

জানা গেছে, চলতি বছরের জুলাই-আগস্ট মাসে আমন চাষ শুরু করেন কৃষকরা। বর্তমানে উপজেলার দিগন্তজুড়ে সোনালি ধান কাটায় পুরোদমে সময় ব্যয় করছেন তারা। ইতোমধ্যে ধান মাড়াই ও শুকানোর জন্য মাঠ তৈরির কাজও শুরু করেছেন। ডিসেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহের মধ্যেই কৃষকেরা জমি থেকে সব ধান ঘরে তুলতে পারবেন বলে আশা করেছেন উপজেলা কৃষি বিভাগ।

এ দিকে এবার আমনের বাম্পার ফলনে উপজেলার সর্বত্র প্রান্তিক কৃষকের মুখে ফুটেছে হাসি। আর শীতের আগমনে নবান্নের উৎসব ঘিরে কৃষকের ঘরে ঘরে চলছে পিঠা-পুলি তৈরির আগাম প্রস্তুতি।

চকরিয়া উপজেলা কৃষি বিভাগের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা (নিরীক্ষা) রাজীব দে বলেন, চলতি মৌসুমে ৪০ হাজার ৩৯৫ একর জমিতে উফশী জাতের এবং ৭ হাজার ২৮৫ একর জমিতে হাইব্রিড জাতের ধান চাষ করেন কৃষকরা। উফশী জাতের ধানের মধ্যে বিধান তেত্রিশ, উনচলিস্নশ, উনপঞ্চাশ, তিয়াত্তর, পঁচাত্তর ও সাতাশি রয়েছে। এরমধ্যে বেশি আবাদ এবং বাম্পার ফলন হয়েছে বিধান পঁচাত্তর জাতের ধান চাষে। এছাড়া হাইব্রিড ধানের মধ্যে চাষ হয়েছে ধানীগোল্ড, সেরা ও ৭০০৬ জাতের। রোপণের চারমাস পর চলতি নভেম্বর মাস থেকে উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে শুরু হয়েছে আমন ধান কাটার উৎসব। ইতোমধ্যে উপজেলার ৬০ ভাগ জমি থেকে ধান কাটা হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, ডিসেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহের মধ্যে আমন কাটা শেষ হবে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ  অধিদপ্তরের উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন বলেন, বীজতলা তৈরি এবং চারা রোপণ পরবর্তী সময়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এসএম নাছিম হোসেনের পরিকল্পনা মোতাবেক মাঠপর্যায়ে কর্মরত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের মনিটরিং ও সঠিক নির্দেশনায় কৃষকরা জমিতে পরিমাণ মতো সার ও কীটনাশক প্রয়োগ করে নিবিড় পরিচর্যা করেছেন। এছাড়া পোকামাকড় দমনে পাচিং পদ্ধতি, আলোকফাঁদসহ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে, সেই কারণে এ বছর আমনে বাম্পার ফলন হয়েছে। চলতি মৌসুমে প্রাকৃতিক পরিবেশ ছিল অনুকূলে। বড় ধরনের দুর্যোগ বা বৈরী পরিস্থিতি না থাকায় উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সক্ষম হয়েছেন কৃষকরা।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ এসএম নাছিম হোসেন বলেন, আমন চাষের শুরু থেকে কাটার আগমুহূর্ত পর্যন্ত মাঠপর্যায়ে কর্মরত উপসহকারী কর্মকর্তারা চাষের ক্ষেতে সংশ্লিষ্ট কৃষককে বিভিন্নভাবে সঠিক দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। মূলত সবার দায়িত্বশীল ভূমিকার কারণে এ বছর আমনে আশাতীত সাফল্য অর্জন হয়েছে। বর্তমানে প্রতিটন ধান সরকারি মূল্যে ৩২ থেকে ৩৩ হাজার টাকা করে বিক্রি হচ্ছে, সেই হিসেবে উৎপাদিত ধানের মূল্য দাঁড়াবে ২০০ কোটি টাকার মতো।

-চখ/আরএ

এই বিভাগের আরও খবর