মিয়ানমারের মংডুতে মুহুর্মুহু বিস্ফোরণে এপারে আতঙ্ক
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু শহর থেকে ফের মুহুর্মুহু বিস্ফোরণের শব্দ ভেসে আসছে এপারের সাবরাং, নয়া পাড়া ও শাহ পরীর দ্বীপের বিভিন্ন এলাকায়। বিস্ফোরণের বিকট শব্দে আতঙ্কে রয়েছেন টেকনাফ সীমান্তবর্তী এসব এলাকার বাসিন্দারা।
আজ সকালে সাবরাং ইউনিয়নের ৫ ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবুল ফয়েজ জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকে শুরু হয়ে সারা রাত মংডু থেকে বিস্ফোরণের শব্দ ভেসে আসতে থাকে। এর আগে সর্বশেষ ২৮ নভেম্বর ওই এলাকায় বিস্ফোরণের শব্দ শুনা গিয়েছিল।
সাবরাং ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য রেজাউল করিম রেজু বলেন, কিছুদিন পরপরই গোলাগুলির পাশাপাশি মংডু শহর থেকে বিস্ফোরণের শব্দ ভেসে আসছে। বিকট শব্দে বাসিন্দাদের ঘরবাড়ি কেঁপে উঠছে। লোকজন শান্তিতে ঘুমাতে পারছে না।
শাহপরীর দ্বীপ সীমান্তের বাজার পাড়ার বাসিন্দা আবু তালেব বলেন, রাখাইন রাজ্যে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির চলমান যুদ্ধ পুনরায় তুমুল হওয়ায় ভয়াবহ শব্দ ভেসে আসছে। এসব শব্দ মর্টার শেল ও বোমা বিস্ফোরণের হতে পারে। গত রাতে (বৃহস্পতিবার) ঘুমাতেও কষ্ট হয়েছে।
দ্বীপের জালিয়া পাড়ার বাসিন্দা কালা মিয়া বলেন, “এশা নামাজের সময় বোমার শব্দে থর থর করে কেঁপে উঠে পুরো মসজিদ। এই পর্যন্ত এমন গোলাগুলির শব্দ আর কোনো সময় শোনা যায়নি।”
“সবমিলিয়ে সীমান্তের মানুষগুলো ভালো নেই। সবসময় আতঙ্কের মধ্যে জীবন-যাপন করতে হচ্ছে। বিশেষ করে, শিশু ও বয়স্কদের নিয়ে খুবই বিপাকে পড়তে হচ্ছে।”
শাহপরীর দ্বীপ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক এনাম উল্লাহ বলেন, মিয়ানমারের সমস্যার কারণে এপারের বাসিন্দারা সবসময় আতঙ্কের মধ্যে বসবাস করতে হচ্ছে। দিনের বেলা তো যেমন-তেমন, রাত হলেই বাড়ে দুশ্চিন্তা।
যুদ্ধ বিমান থেকে বোমা নিক্ষেপ করছে এমন মনে হয়। তবে তারা আমাদের আকাশ সীমানা অতিক্রম করছে কিনা সে প্রশ্নও দেখা দিয়েছে।
সীমান্তের বাসিন্দা ও রোহিঙ্গাদের অনেক স্বজন মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রয়েছেন। মাঝে মাঝে তাদের কাছ থেকে যুদ্ধের তথ্য পান এপারের বাসিন্দারা।
সেসব তথ্যের ভিত্তিতেই টেকনাফ রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বসবাসকারী আবদুল আমিন জানান, নয় মাসের বেশি সময় রাখাইন রাজ্যে মিয়ানমারের জান্তা বাহিনীর সঙ্গে লড়ছে আরাকান আর্মি। এরমধ্যে আরকান আর্মি মংডু টাউনশিপের আশপাশের দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি)র বেশ কিছু সীমান্তচৌকি দখলে নিয়েছে।
বর্তমানে সেই সীমান্তচৌকিগুলো পুনরায় উদ্ধার করে দখলের চেষ্টা চালাচ্ছেন দেশটির সেনাবাহিনী ও বিজিপি।
-চখ/আরএ