chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

চট্টগ্রামে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের আট মামলায় লাখেরও বেশি আসামি

 ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর চট্টগ্রামে বিভিন্ন থানায় হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ৮  মামলায় আসামির সংখ্যা এক লাখ ছাড়িয়েছে। নগরীর কোতোয়ালি, আকবরশাহ, ইপিজেড, পতেঙ্গা, সদরঘাট, পাহাড়তলী হালিশহর ও ডবলমুরিং থানায় পুলিশের পক্ষ থেকে এসব মামলা করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (জনসংযোগ) কাজী মো. তারেক আজিজ  বুধবার(২৮ আগস্ট) সন্ধ্যায় চট্টলার খবরকে  বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ‘থানায় হামলার পাশাপাশি বিভিন্ন পুলিশি স্থাপনায় হামলার ঘটনায় মামলা করা হয়েছে। বিভিন্ন ফাঁড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগেও মামলা হয়েছে। সর্বশেষ মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) রাত সাড়ে ৯টায়  ডবলমুরিং থানায় হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা হয় । এছাড়া হালিশহর ইপিজেড, কোতোয়ালি, পতেঙ্গা, পাহাড়তলী, আকবরশাহ এবং সদরঘাট থানায় পৃথক  পৃথক মামলা হয়েছে। সবমিলিয়ে ৮ মামলায় আসামির সংখ্যা এক লাখ ছাড়িয়েছে।’

পুলিশ সূত্র জানায়, পুলিশ বাদী হয়ে করা কোতোয়ালি থানার মামলায় ৩০ থেকে ৪০ হাজার, পতেঙ্গা থানার মামলায় ২০ থেকে ২৫ হাজার, পাহাড়তলী থানার ১৪ থেকে ১৫ হাজার, আকবর শাহ থানার ৪ থেকে ৫ হাজার, সদরঘাট থানার মামলায় ৩০০ থেকে ৪০০ জন এবং হালিশহর থানার মামলায় ১৫-১৬ হাজার, ডবলমুরিং থানায় হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা, আসামি ১০-১২ হাজার জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।

জানা যায় সর্বশেষ মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট)  রাত সাড়ে ৯টায়  চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) ডবলমুরিং থানায় বে-আইনি জনতা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ১০ থেকে ১২ হাজার ব্যক্তিকে আসামি করে  মামলা করেছে পুালশ।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফজলুল কাদের পাটোয়ারী।

এই মামলায় বাদী হয়েছেন সংশ্লিষ্ট থানার এসআই মো. ইমাম হোসেন। যার থানা মামলা নম্বর-১২/১৬২।

এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ৫ আগস্ট বিকেলে ৩টা ২৫ মিনিটের সময় ডবলমুরিং থানায় ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ এবং লুটপাটের ঘটনায় ১৯৭৪ সনের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫(৩)/২৫-ডি ধারা ও প্যানেল কোড ধারায় মামলাটি হয়েছে।

আরও বলা হয়, গত ৫ আগস্ট বিকেলে অজ্ঞাতনামা ১০ হাজার থেকে ১২ হাজার উচ্ছৃঙ্খল জনতা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে দাঙ্গা-হাঙ্গামা সৃষ্টি করে অবৈধভাবে থানায় অনধিকার প্রবেশ করে।

তারা জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করে অগ্নিসংযোগ করে থানা ভবন, থানায় থাকা যানবাহনের কার্যক্ষমতা ব্যাহত করে সরকারি কর্মচারিকে আক্রমণ, কর্তব্য পালনে বাধা দান, করে বলপ্রয়োগের মাধ্যমে অস্ত্র-গুলি লুটপাট, সরকারি ও ব্যক্তিগত মালামাল ও যানবাহন চুরি করে। এতে সর্বমোট ১ কোটি ১৫ লাখ ১০ হাজার টাকার ক্ষয় ক্ষতি হয় বলে জানানো হয়।

এ সময় থানায় দায়িত্বরত একাধিক পুলিশ কর্মকর্তাদের ওপর হামলা চালিয়ে তাঁদের গুরুতর আহত করে আসামিরা। এছাড়াও আসামিরা থানা ভাঙচুর করে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র অগ্নিসংযোগ করে জ্বালিয়ে ক্ষতিসাধন করেন।

প্রসঙ্গত, ৫ আগস্ট বিকালে  ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মুখে শেষ পর্যন্ত ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হয় শেখ হাসিনার সরকার। সরকারের পতনের পর হাজার হাজার বিক্ষুব্ধ জনতা থানাগুলোতে হামলা করে। হামলাকারীদের ভয়ে পুলিশ সদস্যরা আত্মরক্ষার্থে থানা ছেড়ে পালিয়ে যান। এ সময় দুর্বৃত্তরা ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে অস্ত্র ও মালামাল লুট করে। এছাড়া বিক্ষুব্ধদের দেওয়া আগুনে থানার রেজিস্ট্রারপত্র, সরকারি ও বেসরকারি গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র এবং মালামাল পুড়ে যায়। এসব ঘটনায় অনেক পুলিশ সদস্যও আহত হন। ১৮৬০ সালের পেনাল কোড আইনের বিভিন্ন ধারায়, বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলাগুলো দায়ের করা হয়েছে। তবে এসব মামলায় কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি।

চখ/ বিদ্যুৎ

এই বিভাগের আরও খবর