chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

বিশ্বে প্রথম বার মৃগী রোগীর মাথায় ডিভাইস স্থাপন

গুরুতর মৃগী রোগে আক্রান্ত রোগীদের খিঁচুনি নিয়ন্ত্রণের জন্য বিশ্বে প্রথমবারের মত একজন মৃগী রোগীর মাথায় ডিভাইস বসানো হয়েছে। এর মাধ্যমে বহুকাংশে খিঁচুনি নিয়ন্ত্রণ সম্ভব বলছে সংশ্লিষ্টরা।

গতকাল সোমবার (২৪ জুন) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায় ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি।

বিবিসি জানায়, গত বছর ওরান নোলসন নামের ১৩ বছর বয়সী এক কিশোরের মাথার খুলিতে পরীক্ষামূলকভাবে বসানো হয়েছিল নিউরোস্টিমুলেটর ডিভাইসটি। এই ডিভাইস থেকে মস্তিস্কে বৈদ্যুতিক সংকেত পাঠানো হচ্ছে। ফলে দিনের বেলায় তার খিঁচুনি কমে গেছে ৮০ শতাংশ।

বিবিসি আরও জানায়, ডিভাইসটি হলো নিউরোস্টিমুলেটর। এটি যুক্তরাজ্যের কোম্পানি অ্যাম্বার থেরাপিউটিকসের তৈরি। এটির মাধ্যমে মস্তিষ্কের গভীরে বৈদ্যুতিক সংকেত পাঠানো হচ্ছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, লন্ডনের গ্রেট অরমন্ড স্ট্রিট হাসপাতালে গত অক্টোবরে অস্ত্রোপচার করে ডিভাইসটি স্থাপন করা হয়েছিল। তখন ওরানের বয়স ১২ বছর ছিল।

ওরানের মা জাস্টিন নোলসন বিবিসিকে বলেছেন, যন্ত্র স্থাপনের পর ওরান আগের চেয়ে হাসি-খুশি সময় পার করছে। তার জীবন আগের চেয়ে অনেক ভালো কাটছে।

যুক্তরাজ্যের সমারসেটের বাসিন্দা ওরানের লেনক্স-গ্যাস্টট সিনড্রোম রয়েছে। এটি মৃগীরোগের একটি মারাত্মক পর্যায়, যা শিশুদের স্নায়ুকে শৈশব থেকেই ক্ষতিগ্রস্ত করে। তিন বছর বয়সে ওরানের এই রোগ হয়। তখন থেকে ওরানের দুর্বিষহ ভোগান্তির শুরু। দিনে দুই ডজন থেকে শতাধিকবার পর্যন্ত তার খিঁচুনি হত।

গত বছর অস্ত্রোপচারের আগে বিবিসির সাথে কথা বলেন ওরানের মা। কিভাবে ওরানের মৃগী রোগ তার জীবনে আধিপত্য বিস্তার করেছিল। ওরানের শৈশবকে কেড়ে নিয়েছিল তা জানান তিনি।

তিনি আরও জানান, ওরানের বিভিন্ন ধরণের খিঁচুনি হত। সে মাটিতে পড়ে যায়। প্রচণ্ডভাবে কাঁপে। জ্ঞান হারায়।

জাস্টিন আরও বলেছিলেন, মাঝেমধ্যে তাঁর ছেলের শ্বাস বন্ধ হয়ে যেত। তখন তাকে বাঁচাতে জরুরি ওষুধের প্রয়োজন হতো।

পরীক্ষামূলক এই প্রচেষ্টায় যৌথভাবে কাজ করছে, গ্রেট অরমন্ড স্ট্রিট হাসপাতাল, ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন, কিংস কলেজ হাসপাতাল এবং অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসকরা।

মৃগী একটি নিউরোলজিক্যাল বা স্নায়ুবিক রোগ। এই রোগা আক্রান্তদের খিঁচুনি হয়। রোগটির প্রকৃত কারণ জানা না গেলেও মস্তিষ্কে আঘাত, স্ট্রোক, মস্তিষ্কে টিউমার বা সংক্রমণ, জন্মগত ত্রুটিসহ নানা সম্ভাব্য কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। জিনগত মিউটেশন কিছুকিছু ক্ষেত্রে এই রোগের জন্য দায়ী বলেও মনে করা হয়।

 

তাসু/চখ