chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

বকশিশের নাম নিয়ে যাকাত দেওয়া যাবে কিনা?

শরিয়তের পরিভাষায় ইসলামি বিধান অনুযায়ী যাদের যাকাত দেয়া যায়, তাদের বলা হয় মাসারিফ। যাকাতের মাসারিফ অর্থাৎ কোন কোন খাতে যাকাতের অর্থ ব্যয় করতে হবে আল্লাহ তায়ালা স্বয়ং তা নির্ধারণ করে দিয়েছে। নির্ধারিত এ খাত হলো আটটি। এই আটটি খাতে যাকাত দেওয়া সামর্থ্যবান মুসলমানদের জন্য আবশ্যক। সেই খাতগুলোর মানুষ যাকাত পাওয়ার অধিকারী।

ফকীর- নিঃসম্বল ভিক্ষাপ্রার্থী। যাকে আল্লাহ তায়ালা যাকাতের ৮টি খাতের প্রথমেই উল্লেখ করেছেন।

মিসকীন- দ্বিতীয় খাত হিসাবে আল্লাহ তায়ালা মিসকীনকে উল্লেখ করেছেন। মিসকীন হল ঐ ব্যক্তি যে নিজের প্রয়োজন মিটাতেও পারে না, মুখ ফুটে চাইতেও পারে না। বাহ্যিকভাবে তাকে সচ্ছল বলেই মনে হয়।

যাকাত আদায়কারী ও হেফাযতকারী- তৃতীয় খাত হিসাবে ঐ ব্যক্তিকে উল্লেখ করেছেন, যে ব্যক্তি যাকাত আদায়, হেফাযত ও বণ্টনের কাজে নিয়োজিত। অতএব উক্ত ব্যক্তি সম্পদশালী হলেও সে চাইলে যাকাতের অংশ গ্রহণ করতে পারবে

ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট করার জন্য কোন অমুসলিমকে যাকাত প্রদান করা- ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে অথবা কোন অনিষ্ট বা কাফেরের ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়ার লক্ষ্যে কোন অমুসলিমকে যাকাতের অর্থ প্রদান করা যাবে।

দাস মুক্তির জন্য- যারা লিখিত কোন চুক্তির বিনিময়ে দাসে পরিণত হয়েছে। তাদেরকে মালিকের নিকট থেকে ক্রয়ের মাধ্যমে মুক্ত করার লক্ষ্যে যাকাতের অর্থ প্রদান করা যায়। অনুরূপভাবে বর্তমানে কোন মুসলিম ব্যক্তি অমুসলিমদের হাতে বন্দি হলে সে ব্যক্তিও এই খাতের অন্তর্ভুক্ত হবে।

ঋণগ্রস্ত ব্যক্তি- ঋণগ্রস্ত ব্যক্তিকে তার ঋণ থেকে মুক্ত করার লক্ষ্যে যাকাত প্রদান করা যাবে।

আল্লাহর রাস্তায়- আল্লাহর দ্বীনকে সমুন্নত করার লক্ষ্যে যে কোন ধরনের প্রচেষ্টা ‘ফী সাবীলিল্লাহ’ বা আল্লাহর রাস্তার অন্তর্ভুক্ত।

মুসাফির- সফরে গিয়ে যার পাথেয় শেষ হয়ে গেছে সে ব্যক্তিকে যাকাতের অর্থ প্রদান করে বাড়ী পর্যন্ত পৌঁছানোর ব্যবস্থা করতে যাকাতের অর্থ দান করা যাবে। এক্ষেত্রে উক্ত মুসাফির সম্পদশালী হলেও তাকে যাকাত প্রদান করা যাবে।

অফিসের অধীনস্ত কর্মীদের জাকাতের টাকা বকশিশ হিসেবে কিংবা উপহার হিসেবে দেওয়া যাবে কিনা? বিষয়টি নিয়ে অনেকে সংশয়ে থাকেন। অনেকে নিজের কর্মচারী বা পরিচিতজনদের ঈদ সালামি বা উপহার সামগ্রী দিয়ে যাকাত দিতে চান। কিন্তু সরাসরি তাদের বলতে পারেনা যে এটি যাকাতের টাকা। এর উত্তর হলো- হ্যাঁ, এভাবে দিলেও যাকাত আদায় হবে। কেননা যাকাত দেওয়ার সময় এটা বলে দেওয়া জরুরি নয় যে, তোমাকে এটা যাকাত দিলাম বা দিচ্ছি।

যাকাত আদায় হওয়ার জন্য যাকাতদাতার নিয়ত জরুরি, যাকাত গ্রহণকারীর জানা জরুরি নয় যে তাকে যাকাত দেওয়া হচ্ছে। তাই হাদিয়া, ঈদ উপহার ইত্যাদি যে কোনো কিছু বলে যাকাত গ্রহণের উপযুক্ত ব্যক্তির কাছে যাকাতের সম্পদ পৌঁছে দিলে যাকাত আদায় হয়ে যাবে। (রদ্দুল মুহতার: ২/২৬৮)

একইভাবে যদি উপযুক্ত ব্যক্তির অপ্রাপ্তবয়স্ক সন্তানদেরও ঈদের সালামি হিসেবে যাকাত দেওয়া হয় তবে যাকাত আদায় হয়ে যাবে যদি ওই টাকা ওই ব্যক্তির কাছে পৌঁছবে তা নিশ্চিত থাকে এবং অনর্থক কাজে নষ্ট হওয়ার ভয় না থাকে।

 

মুন/চখ

এই বিভাগের আরও খবর