সর্দি-জ্বর-কাশিতে কাহিল চট্টগ্রামের মানুষ
গত ১ সপ্তাহ ধরে রেলের স্টাফ মঞ্জুর মোরশেদ রণি জ্বর ও কাশিতে ভোগছেন। সাথে যোগ হয়েছে শ্বাস কষ্টও। তার পরিবারের দুই শিশুও একই রোগে আক্রান্ত হয় ১০দিন আগে। তারা সুস্থ হলেও মঞ্জুর মোরশেদ রণির অবস্থা কাহিল। তার সর্দি ও জ্বর সারলেও কিছুতেই কাশি যাচ্ছে না। প্রচণ্ড কাশির কারণে তিনি রাতে ঘুমাতে পারেন না। রুচি নষ্ট হয়ে গেছে। খেতেও পারছেন না।
একই অবস্থা নগরের সদরঘাট এলাকার শফিউল আলমের। তিনি ও তাঁর পরিবারের ৮ সদস্য গত ৫দিন ধরে সর্দি-জ্বর-কাশিতে ভোগছেন। তিনি জানালেন দুই দফা চিকিৎসক দেখিয়ে ও ওষুধ পরিবর্তন করেও কোনো সমাধান মিলছে না। চিকিৎসকরাও সঠিক কিছু বলতে পারছেন না।
চট্টগ্রাম নগর ও জেলার ১৬ উপজেলায় ঘরে ঘরে সর্দি-জ্বর-কাশিতে ভোগছে লোকজন। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বাড়ছে এ রোগের রোগীর চাপ। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, সাধারণত ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের কারণে সর্দি-জ্বর দেখা দেয়। এ ধরনের সর্দি-জ্বর তিন-চার দিন পর এমনিতেই ভালো হয়ে যায়। কিন্তু এবার এর সঙ্গে কাশির তীব্রতা বেড়েছে। কোনোভাবেই কাশি কমাতে পারছে না।
চিকিৎসকরা এ বছরের সর্দি-জ্বর-কাশির জন্য ইনফ্লুয়েঞ্জার ধরন বদলে যেতে পারে বলে মনে করছেন। এমনকি এই সর্দি-জ্বর-কাশির উপসর্গের সঙ্গে করোনার উপসর্গেরও মিল পাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন। তারা এই ইনফ্লুয়েঞ্জার ধরন জানতে এ ভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্সের পরামর্শ দিয়েছেন।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে খবর নিয়ে জানা গেছে, শীতের তুলনায় সর্দি-জ্বর-কাশির উপসর্গের এখন রোগী ২০ শতাংশের মতো বেড়েছে। এছাড়া নিউমোনিয়া রোগীর সংখ্যাও একটু বেড়েছে।
এসব সর্দি-জ্বরের লক্ষণগুলো আরেকটু বেশি, অর্থাৎ তীব্রতর। প্রচন্ড কাশি হচ্ছে। শরীরব্যথা অনেক। দুই-তিন দিনে ভালো না হয়ে কারও কারও চার-পাঁচ দিন লেগে যাচ্ছে। ভালো হওয়ার পরও তারা শরীরে ভীষণ দুর্বলতা ও ক্লান্তি বোধ করছেন। রুচি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সব মিলে মনে হচ্ছে ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের যে ধরন দিয়ে এটি হচ্ছে, সেটি অন্য বছরের তুলনায় একটু বেশি শক্তিশালী ও মারাত্মক। মানুষের শরীরে দীর্ঘমেয়াদি ছাপ তৈরি করছে।
চিকিৎসকদের পরামর্শ
পটিয়ার জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক পরিচালক ডা: এমদাদুল হাসান ঘরে ঘরে দেখা দেওয়া সর্দি-জ্বর-কাশি থেকে রক্ষা পেতে মানুষকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। এই জাতীয় সর্দি-জ্বরে যারা আক্রান্ত হবে, তাদের পযাপ্ত পরিমাণ বিশ্রাম নিতে হবে। পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি ও তরল জাতীয় খাবার খেতে হবে। তাজা ফলমূল শাকসবজি অত্যন্ত উপকারী। যদি তীব্র শরীর ও মাথাব্যথা হয়, তাহলে শুধু প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ খাবে। চিকিৎসককের পরামর্শ ছাড়া কোনোভাবেই অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া যাবে না।
- ফখ|চখ