কুমিরায় রেলের জায়গা ‘সাইনবোর্ড লাগিয়ে’ প্রভাবশালীদের দখল
সাইনবোর্ড লাগিয়ে কুমিরা রেলস্টেশনের পাশ ঘেষে প্রায় আট একর জায়গা দখলে নিয়ে নিচ্ছে একটি প্রভাবশালী মহল।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় এমএএস এগ্রিকালচার সাইনবোর্ড দিয়ে কুমিরা রেলওয়ে স্টেশন এলাকার বিশাল একটি অংশ দখল করে রাখা হয়েছে। বাদ যায়নি রেলওয়ে স্টাফদের জন্য বরাদ্দকৃত গ্যাং কোয়ার্টার গুলো।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পুরো জায়গা দখলের জন্য এই কোয়াটার গুলো আস্তে আস্তে ভেঙে ফেলা হচ্ছে। দখলের সুবিধার্থে ড্রেনেজ ব্যবস্থা বন্ধ করে দেওয়ায় বর্ষার মৌসুমে কুমিরা স্টেশন এলাকার রেলপথ পানিতে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। কর্ণফুলী স্টিল মিলের পাশেই রেলের জায়গায় মাঠে ফেলে ভরাট করা হচ্ছে। মাটি দিয়ে বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে গ্যাং কোয়াটারের গেট গুলো। তবে এত বিশাল দখলের কিছুই জানেনা বলে দাবি রেল কর্মকর্তাদের।
এক বছরের অধিক সময় ধরে দখল করার চেষ্টার কথা রেলকর্মচারীরাই জানায় কর্তৃপক্ষকে। তবে আশানুরূপ কোন ব্যবস্থা লক্ষ্য করা যায়নি। গত বছরের ৮ জুলাই ঊর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী বিভাগ-১’ কে লিখিত ভাবে জানায় কুমিরা স্টেশনে দায়িত্বরত স্টেশন মাস্টার। অভিযোগে মহসিন নামের এক ব্যক্তিকে দায়ী করা হয়। অভিযুক্ত সেই মহসিন এই এমএএস এগ্রিকালচারের মালিক।
এ বিষয়ে মহসিনের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তিনি মুঠোফোনে অসুস্থ বলে লাইন কেটে দেন।
অপরদিকে কুমিরা স্টেশনের এলাকায় ড্রেনেজ ব্যবস্থা সক্রিয় ও মালামাল রাখার গোডাউন সংরক্ষণের বিষয়ে ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী (পথ) বরাবর চিঠি প্রদান করে সেখানে দায়িত্বরত রেল কর্মচারীরা। সেই অভিযোগে উল্লেখ করা হয় কুমিরা ৮ নং গ্যাং এলাকায় ২৩/৩-৫ কিলোমিটারে সঠিক ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় বর্ষাকালে পানি জমে লাইনসহ মেইন
লাইনে পানি উঠে ডুবে গিয়ে ট্রেন চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। বর্তমানে গ্যাং হাট এলাকায় স্থানীয় প্রভাবশালী দ্বারা মাটি ভরাট করে সম্পূর্ণরূপে পানি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে সুষ্ঠু ট্রেন চলাচল মারাত্মকভাবে ব্যহত হবে। রেলওয়ে কলোনীতে গ্যাং নং-চট্টঃ/৮ ও চট্টঃ/৯ এর গুরুত্বপূর্ণ মালামালের দুটি গোডাউন রয়েছে। যাতে রেলওয়ের বিভিন্ন মালামাল রক্ষিত রয়েছে। কিন্তু স্থানীয় প্রভাবশালী মহল দ্বারা রেলওয়ের সকল বাসা উচ্ছেদের প্রক্রিয়া বিরাজমান। রাতে উক্ত কলোনীতে অবস্থানরত রেলওয়ে কর্মচারীগণকে ভয় ভীতি প্রদর্শন করে আসছে।
গ্যাং কোয়াটার দখল ও সাধারণ স্টাফদের উপর প্রভাবশালী মহলের হুমকির বিষয় নিশ্চিত করে ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী (পথ) গোলাম সরোয়ার বলেন,আমাদের কুমিরা এলাকায় গ্যাং কোয়াটারে যে সকল স্টাফ থাকে তাদেরকে প্রতিনিয়ত হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আমাদের গোডাউন দখলে নিয়ে নিচ্ছে এমনকি পাহাড় থেকে আসা পানি ও বৃষ্টির পানি যাওয়ার যে ড্রেনেজ ব্যবস্থা ছিল তাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এই ড্রেনেজ ব্যবস্থা গুলো যদি চালু না করা যায় তাহলে বর্ষার মৌসুমে ঢাকা চট্টগ্রামে রেল চলাচলের বিঘ্ন ঘটবে। এ বিষয় নিয়ে বাধা দিতে গেলে আমাকেও হুমকি প্রদান করা হয়। সকল বিষয়গুলো কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। আশা করি খুব দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
রেলের জায়গা দখল ও গ্যাং কোয়াটার ভেঙে ফেলার বিষয়ে প্রকৌশলী (১) এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, রেলের জায়গায় উদ্ধারে কাজ করে ভূ সম্পত্তি বিভাগ, যদি কেউ বাসা ভাঙ্গে অবশ্যই আমরা এজাহার দায়ের করবো।
এই সংশ্লিষ্ট বিষয়ে রেলের বিভাগীয় ব্যবস্থাপক সাইফুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমরা জানতাম না, স্টেশনের এলাকা দখল করার চেষ্টা করেও লাভ নেই কারন সকল স্টেশন বর্ধিত করা হবে। সেখানে লোক পাঠাবো, তদন্ত সাপেক্ষে অবশ্যই দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
- ফখ|চখ