এসআরভি রেলওয়ে স্টেশন যেন ট্রাক টার্মিনাল
আরএনবি সদস্য নরেশের কোটি টাকার বাণিজ্য
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বাংলাবাজার এলাকায় এসআরভি রেলওয়ে স্টেশন পুরোটাই এখন দখলদারদের কবলে।স্টেশনটি চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে মাদারবাড়ী মুখে রেললাইন হালিশহর সিজিপিওয়াই ইয়ার্ডে যুক্ত রয়েছে। বন্দরের মালামাল, মালবাহী গাড়ি চলাচল করতো এই লাইন দিয়ে। বেশ কয়েকবার অবৈধ দখল উচ্ছেদের কথা থাকলেও কোন এক অজানা কারণে থমকে যায় উচ্ছেদ অভিযান।
অভিযোগ রয়েছে, রেলের নিরাপত্তা বাহিনী সদস্য নরেশের সহযোগিতায় গড়ে উঠেছে ট্রাক স্ট্যান্ড ও গ্যারেজ।
পরিত্যক্ত গাড়ি ডাম্পিং করতে গিয়ে বিপাকে পড়ল স্বয়ং ঊর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী গোলাম সরোয়ার। গত ২৭ জানুয়ারি গাড়ি ডাম্পিং করতে গিয়ে রেললাইনের উপর গড়ে ওঠা স্ক্রাব ব্যবসায়ীদের মালামাল থাকায় আটকে যায় ট্রেন।পরে তা সরিয়ে ডাম্পিং করা হয়। রেল লাইনের উপরে থাকা অবৈধ মালামাল সরাতে গেলে অবৈধ দখলদারদের বাধার মুখে পড়ে রেল কর্মচারীরা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঊর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী গোলাম সারোয়ার জেটিআই পোর্ট এনামুল হক, হেড টিএক্সার আজাদ, রেলওয়ের বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি বিভাগের কানুঙ্গ আব্দুস সালাম।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এসআরভি রেলস্টেশন এলাকায় প্লাটফর্মে ট্রেনের পরিবর্তে জায়গা করে নিয়েছে সারি সারি ট্রাক। বাইরে থেকে কেউ এসে দেখলে বুঝার উপায় নেই এটি রেলস্টেশন। স্টেশনে রেল লাইন ঘেঁষে গড়ে তোলা হয়েছে ৩০টির বেশি গ্যারেজ। পোড়া তেলের ডিপো, স্ক্রাবের দোকান সহ অসংখ্য স্থাপনা। সক্রিয় একটি সিন্ডিকেট দ্বারা নিয়ন্ত্রিত এই স্টেশনটিতে মাসে অর্ধ কোটি টাকার বেশি বাণিজ্য চলে।স্টেশন সংরক্ষণের একটি গেট থাকলে সেটিও ভেঙে ফেলা হয়েছে। দেখে বুঝে ওঠার উপায় নেই এটি স্টেশন নাকি বাণিজ্যিক এলাকা।
রেলে সংরক্ষিত এলাকায় এমন কর্মকাণ্ডে হতবাক স্থানীয়রা।স্থানীয়দের অভিযোগ মাসে কোটি টাকার বাণিজ্য চলে এই এসআরভি স্টেশনকে ঘিরে।
পরিচয় গোপন করে কথা হয় স্টেশনে গড়ে উঠা বেশ কয়েকটি গ্যারেজ মালিকের সঙ্গে। এই আলাপকালে উঠে আসে এসআরভি স্টেশন কেন্দ্রিক আরএনবি সদস্য নরেশ ও স্থানীয় নেতাদের মাসে লাখ টাকার চাঁদাবাজির চাঞ্চল্যকর তথ্য। গ্যারেজ মালিক আলমগীর বলেন, এ গ্যারেজগুলোতে ট্রাক কাভার্ড ভ্যান পার্কিং এবং মেরামত করার জন্য ভাড়া দেওয়া হয়। কিছু দেওয়া হয় স্থানীয় নেতা বা পার্শ্ববর্তী বাড়ির মালিকদের। আরএনবির হাবিলদার নরেশ বাবুকে দিতে হয় ১৫শ টাকা করে। কেউ দেয় ২০০০ আবার কেউ ৩০০০। যার এরিয়ায় গাড়িবেশি সে টাকাদেয় বেশি। তবে বিষয়টি অস্বীকার করে হাবিলদার নরেশ।
শুধু গ্যারেজে নয় সেখানে কবির, মহিউদ্দিন, কামাল, হোসেন, রাজীব, জিসান, মাহবুদ, কালামের রয়েছে পোড়া তেলের বিশাল বড় সিন্ডিকেট।
এ বিষের হলে নিরাপত্তা বাহিনীর চীফ কমান্ডেন্ট জহিরুল ইসলামের সাথে বেশ কয়েকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে পাওয়া যায়নি।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী গোলাম সারোয়ার জানায়, আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়গুলো অবহিত করব। সীমানা প্রাচীর নির্মাণ ও ট্রাক চলাচলের রাস্তা বন্ধ ও স্টেশন এলাকায় বহিরাগতদের প্রবেশ বন্ধ করতে পারলে সকল কিছুই নিয়ন্ত্রণ হবে। তাছাড়া এসআরভি স্টেশন কে ঘিরে আমাদের ভিন্ন পরিকল্পনাও রয়েছে।
রেলের ভূ-সম্পত্তির বিভাগের কানুঙ্গ সালাম বলেন, স্থাপনা গুলো উচ্ছেদের ব্যাপারে আমি কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলবো। আশাকরি দ্রুত অবৈধস্থাপনা উচ্ছেদ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
- ফখ|চখ