বাঁশখালীতে শিমের দারুণ ফলনে কৃষকের মুখে হাসি
গুনি রঙের ফুলে ভরে উঠছে শিমখেত। চাষিরা স্বপ্ন বুনছেন। ইতিমধ্যে খেত থেকে শিম উঠতে শুরু হয়েছে। দামও বেশ পাচ্ছেন। এতে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। বাঁশখালীদে শীতকালীন সবজির মধ্যে অন্যতম হলো শিম। প্রতিবছরই উপজেলার উঁচু এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে চাষ হয়ে আসছে শিম। কম খরচে অধিক লাভ হওয়ায় দিন দিন শীতের সবজি শিম আবাদে ঝুঁকছেন চাষিরা।
উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে মাঠের পর মাঠজুড়ে শিমখেত। এবার শিম চাষ করে ভালো ফলনের সম্ভাবনাও দেখছেন এখানকার কৃষকেরা। এ উপজেলার শীতকালীন সবজির মধ্যে অন্যতম শিম। প্রতিবছরই বিভিন্ন এলাকায় বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে শিম। অন্যান্য ফসলের তুলনায় কম খরচে অধিক লাভ হওয়ায় দিন দিন এই আবাদে ঝুঁকছেন চাষিরা।
বাঁশখালীতে এবার ৪ হাজার ২শত হেক্টর সবজি চাষাবাদ হয়েছে বলে উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানা যায়। শীতের সবজিতে ভরপুর বাঁশখালীর হাঁটবাজার গুলো। ভোর হতেই চট্টগ্রাম শহর থেকে শুরু করে বিভিন্ন এলাকার সবজি পাইকারের ভীড় জমাতে দেখা যায় শীতকালীন সবজির বাজারগুলোতে। বর্তমানে বাঁশখালীর প্রতিটি হাঁট-বাজারে শীতের সবজি প্রচুর পরিমাণে পাওয়া গেলেও এবার কিন্তু সবজির দাম চড়া হওয়ায় আগের মত সহজে সকল ধরনের সবজি কিনতে পারছেনা সাধারণ ক্রেতারা। ৩৭০ হেক্টর জমিতে শীতকালীন শিমের চাষ হওয়া শিম বাজারে আসায় ভোক্তাদের মধ্যে বেশ চাহিদাও রয়েছে বেশ।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার বিভিন্ন উঁচু এলাকায় শিমের চাষাবাদ হয়ে থাকে। উপজেলার পুঁইছড়ি, নাপোড়া, চাম্বলের পাহাড়ি জমি, শীলকূপের পাহাড়ী ও আবাদী জমি, জঙ্গল জলদী, পুকুরিয়া, সাধনপুর, কালীপুর, বৈলছড়ি, সরল, খানখানাবাদ ও গন্ডামারা এলাকায় প্রচুর পরিমাণ শিম উৎপাদিত হয়েছে। কেউ কেউ শখের বসে বাড়ির আগ্নিনায়ও ক্ষুদ্র পরিসরে শিমের চাষ করেছে। এতে করে নিজেদের চাহিদা মিটাচ্ছে তারা। পাশাপাশি প্রতিদিন চাষীরা ক্ষেত থেকে শিমগুলো তুলে এনে বিভিন্ন স্থানীয় বাজারে পাইকারী দরে বিক্রি করছেন। উপজেলার শিলকুপ, পুঁইছড়ি, জঙ্গল চাম্বল, জঙ্গল জলদী, কালীপুর এলাকায় এই শিমের আবাদ হয়েছে দেখার মতো। দেশের বিভিন্ন এলাকার পাইকারী ব্যবসায়ীরা বাঁশখালীর বিভিন্ন হাট বাজারগুলোতে ভীড় করছে ফ্রেশ সবজির জন্য। পাইকাররা এই সকল শিম বিভিন্ন দামে কিনে নিয়ে যাচ্ছে চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন এলাকায়।
শীলকূপের মনকিচর গ্রামের শিম চাষী নুরুল আলম জানান, একেবারে শুরুরর দিকে শিমের দাম একটু বেশি থাকলে ও বর্তমানে পাইকারিভাবে আমাদের থেকে পাইকারেরা কেজিপ্রতি ৩০/৩৫ টাকা কিনলেও তা বাজারে প্রায় ৫০/৬০ টাকা ধরে কেজি বিক্রি করছে বলে জানান।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আবু সালেক বলেন, বাঁশখালী একটি উর্বর এলাকা। এবার এখানে প্রায় ৩৭০ শত হেক্টর জমিতে শিম সহ প্রায় ৪ হাজার ২শত হেক্টর জমিতে শীত কালীন সবজির চাষ হয়েছে এবং হচ্ছে। এখানে সকল ধরনের সবজি প্রচুর পরিমান উৎপাদিত হয়ে থাকে। তাছাড়া চট্টগ্রামের অধিকাংশ সবজির জোগানদাতা বাঁশখালীর চাষীরা। কৃষি অধিদপ্তর থেকে কৃষকদের সকল প্রকার প্রশিক্ষণ এবং সার ও উন্নত বীজ দিয়ে সব সময় সহযোগিতা করা হয় বলে জানান তিনি। তাছাড়া এলাকাভিত্তিক উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে কৃষকদের মনিটরিং সহ চাষাবাদে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদান করে বলেও জানান তিনি।
ফখ/বাঁশখালী প্রতিনিধি/চখ