chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

চট্টগ্রামে অস্বস্তি কাটলো নতুন পেঁয়াজে

ভারত সরকার সম্প্রতি পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করেছে। এ খবর পাওয়া মাত্রই পেঁয়াজের বাজার অস্থির করে তোলে দেশের অসাধু ও মুনাফাখোর ব্যবসায়ীরা। গত কয়েক দিন বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ২২০ থেকে ২৪০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। তবে চার-পাঁচ দিনের অস্থিরতার পর চাক্তাই খাতুনগঞ্জের বাজারে নতুন মুড়িকাটা পেঁয়াজ এসেছে। এতে স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে পেঁয়াজের বাজারে।

গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে চট্টগ্রাম নগরের চাক্তাই, খাতুনগঞ্জ, আগ্রাবাদ, কাজীর দেউরি, বহদ্দারহাট, পাহাড়তলীসহ আরও কয়েকটি কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, দেশি মুড়িকাটা পেঁয়াজ প্রতি কেজি ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া ভ্যানগাড়িতে বিভিন্ন মহল্লার অলি-গলিতে ফেরি করে এ পেঁয়াজ বিক্রি হতে দেখা গেছে। এসব ভ্রাম্যমাণ মানুষ নতুন পেঁয়াজ কিনছেন। দাম বেড়ে যাওয়ায় নতুন পেঁয়াজে বাজার ছেয়ে গেছে। আমদানি বাড়লে সামনে পেঁয়াজের দাম আরও কমবে।

দীর্ঘদিন ধরে চকবাজারের একটি মেসে থাকেন সেলসম্যান জাহিদ আল আমিন । তাদের প্রতিদিনের বাজার প্রতিদিনই করতে হয়। জাহিদ বলেন, ‘প্রতিদিন সকালে আমাদের মেসের কেউ না কেউ বাজার করতে আসে। আমরা অল্প আয়ের মানুষ, যেখানে কম দামে পাই সেখান থেকে বাজার করি। বাজারে এখন মুড়িকাটা পেঁয়াজের দাম কম। হাফ কেজি নিয়েছি ৪৫ টাকায়।

বাকলিয়ার বউ বাজারে শুক্রবাদ নিয়মিত বাজার করেন একটি বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা সজল দাশ। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম এভাবে বেড়ে যাওয়া নতুন কিছু নয়। তবে হঠাৎ একটা পণ্যের দাম বেড়ে দিগুণ হয়ে যাওয়া অস্বাভাবিক। আজ বাজারে নতুন পেঁয়াজটাই কম মনে হচ্ছে। দেশি পেঁয়াজ নিয়েছি ১৩০ টাকা করে। দেশি একদম নতুন পেঁয়াজ আরও কম দামে পাওয়া যাচ্ছে।’

দোকানে ধরনভেদে মুড়িকাটা পেঁয়াজ ১০০ থেকে ৭০
টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। পাতাসহ এ পণ্যের দাম
নেমেছে ৬০ টাকা কেজিতে। দেশি পুরাতন পেঁয়াজ পাইকারি ১৩০ টাকা দরে আর খুচরা বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা করে। ভারতীয় পেঁয়াজ প্রকারভেদে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০৫ থেকে ১১০ টাকা দরে।

চান্দগাঁও থানার বহদ্দারহাট কাঁচাবাজারের পেঁয়াজ ব্যবসায়ী জলিল উদ্দিন বলেন, ‘পুরাতন পেঁয়াজ বাজারে নেই বলেই চলে। বাজারে এখন নতুন পেঁয়াজের অভাব নেই। দামও তুলনামূলক কম।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি
অর্থবছরের রবি মৌসুমে মোট দুই লাখ ৬০ হাজার হেক্টর
জমিতে ৩৬ লাখ ৭৩ হাজার টন পেঁয়াজ উৎপাদনের
লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৫৬ হাজার হেক্টরে এ
বছর আবাদ করা হয়েছে মুড়িকাটা পেঁয়াজ। উৎপাদন
লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় আট লাখ টন। দুই-তিন মাস দেশের বাজারে এ পেঁয়াজ থাকে। মার্চে হালি পেঁয়াজ আসা শুরু হবে। এর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা প্রায় ২৮ লাখ টন। দেশে পেঁয়াজের চাহিদা প্রায় ৩০ লাখ টন। সর্বশেষ অর্থবছরে ৩৪ লাখ টনের বেশি পেঁয়াজ উৎপাদন হয়। হঠাৎ পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ায় মাঠ পর্যায়ে নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দেয় সরকার। সারা দেশে প্রায় তিন শতাধিক প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।

ভারতের রপ্তানি বন্ধের ঘোষণার পর দেশের বাজারে একরাতের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম দ্বিগুণ হয়ে যায়।
যদিও দেশি বা বিদেশি পেঁয়াজের সংকট নেই বাজারে। কিন্তু অস্বাভাবিক দাম বাড়ার কারণ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
চাক্তাই খাতুনগঞ্জের পেঁয়াজের আড়তদাররা জানান,
ভারতের ঘোষণার পরপরই ওই দেশের রপ্তানিকারকরা জানিয়ে দেন হিলি, বেনাপোল ও ভোমরার আমদানিকারকদের। এসএমএসে জানান, দাম বাড়িয়ে
দিতে। এরপর আমদানিকারকরা সে বার্তা ছড়িয়ে দেন নিজস্ব এজেন্টদের কাছে। সবাই একযোগে বাড়িয়ে দেয় পেঁয়াজের দাম।

ফখ|চখ

এই বিভাগের আরও খবর