গুমাই বিলে ঝাঁকে ঝাঁকে টিয়া পাখি আসছে, কিন্তু কেন?
ঝকঝকে নীল আকাশে তারা ঝাঁকবেঁধে উড়ে বেড়াচ্ছে আপন খেয়ালে। দূর থেকে দেখে মনে হবে যেন, নীলাকাশে এক টুকরো সবুজের আভা। উড়তে উড়তে কখনও বাঁ দিক, তো আবার কখনও ডান দিকে বাঁক নিচ্ছে তারা। উপরে নীলাকাশ, আর নীচে পাকা ধানের সোনালি আভা। এমন আবহে ওরা যেন আনন্দে আত্মহারা।
খাবারের খোঁজে ছুটে চলছে বিলের একপ্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে। তাদের কলকাকলিতে মুখরিত বিল। চট্টগ্রামের রাউজানের গুমাই বিলে এ দৃশ্য এখন প্রতিদিনের।
তবে যাদের আনন্দে কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে কৃষকদের, তারা হল হাজার হাজার টিয়া পাখি।
চট্টগ্রামের গুমাই বিল শস্যভান্ডার নামে পরিচিত। বলা হয়, ওই বিলে উৎপাদিত ফসল দেশের মানুষের তিন দিনের অন্ন জোগান দিতে পারে। ফলে টিয়া পাখির হাত থেকে কী ভাবে নিজেদের ফসল বাঁচাবেন, এখন তা নিয়েই শশব্যস্ত হয়ে পড়েছেন কৃষকরা।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দুই সপ্তাহ ধরে গুমাই বিলে টিয়া পাখিরা আসছে।
স্থানীয় লোকজন ও চাষীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অনেক বছর ধরে এই এলাকার গুমাই বিলে ধান পাকলে টিয়া পাখি আসছে। শীত মৌসুমে শুরুতেই এখানে পাখির মেলা বসে যায়। শীতে ধান যত পাকে, পাখির আনাগোনাও তত বাড়ে। ধান কেটে ফেললে সঙ্গে সঙ্গে তারাও চলে যায়।
গুমাই বিলকে পাখির অভয়াশ্রমও বলা যায়। এলাকাবাসীর প্রতিরোধের কারণে এই বিলে পাখি শিকারিদের উৎপাত নেই।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, বিলে শত শত শ্রমিক ধান কাটছেন। তাঁদের কাছাকাছি নির্ভয়ে ধান খাচ্ছে পাখির ঝাঁক। মূলত বিলের ধান, পোকা মাকড় ও উদ্ভিদ এসব পাখির খাবার।
গুমাই বিলের পাশের রাস্তায় প্রতিদিন টেম্পু চালান জাহেদ মিয়া। তিনি বলেন, প্রতিদিন যাত্রী নিয়ে বিলের পাশ দিয়ে টেম্পু চলে যায়। গাড়ির ফাঁক দিয়ে ঝুঁকে মুগ্ধ হয়ে যাত্রীরা পাখি দেখে। অনেকে ছবিও তোলেন। এই বিলে পাখিরা নিরাপদ হলেও মাঝেমধ্যে পাখি শিতারীদের হাতে কিছু পাখি মারা পড়ে বলে জানান তিনি।
চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, ‘গুমাই বিলসহ আশপাশের বিলগুলোতে এখন অনেক টিয়া ও অতিথি পাখির আগমন ঘটেছে। পাখি শিকার না করার জন্য আমাদের পক্ষ থেকে এলাকাবাসীর মধ্যে প্রচারণা চালানো হয়েছে। এ ছাড়া আমরা সকাল-বিকেল টহল দিচ্ছি।’
ফখ|চখ