chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

২০ সংযোগ সড়ক সংযুক্ত, উচ্ছ্বসিত বাকলিয়াবাসী

বাকলিয়া এক্সসেস রোড

আজ ১৪ নভেম্বরে উদ্বোধন হচ্ছে বহুল প্রতীক্ষিত বাকলিয়া এক্সসেস রোড। কোতোয়ালি থানার সিরাজদ্দৌলা রোড হতে বাকলিয়ার শাহ আমানত ব্রিজ পর্যন্ত সংযোগ সড়ক নির্মাণ (বাকলিয়া এক্সেস) প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হয়েছে দক্ষিণ চট্টগ্রামের সঙ্গে মূল শহরের যোগাযোগ স্থাপনের জন্য বিকল্প রাস্তা হিসেবে। নতুন এ সড়কটি নগরের যাতায়াত ব্যবস্থা আরো গতিশীল হবে।

শাহ আমানত সেতু সংযোগ সড়কের কালামিঞা বাজারের উত্তরপাশ থেকে নবাব সিরাজুদ্দৌলা রোডের চন্দনপুরা মসজিদ পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ ফুটপাত কাম সড়কটি নির্মাণ করেছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। ২২০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৬০ ফুট প্রশস্তের সড়কটি চার লেনে নির্মিত হয়েছে। সড়কের দু’পাশে ড্রোন কাম ফুটপাত রয়েছে। উভয় পাশের ২০টি সংযোগ সড়কের সঙ্গে রাস্তাটিকে সংযুক্ত করা হয়েছে। ফলে বহু বছর ধরে বাকলিয়া ও চন্দনপুরার যে লক্ষাধিক মানুষকে জলাবদ্ধতা ও যানজটে শহরের একপ্রান্ত ঘুরে অন্যপ্রান্তে যেতে হতো, তাদের যাতায়াত সমস্যা লাঘব হচ্ছে। তারা সড়কটি নির্মাণের ফলে উচ্ছ্বাসিত।

এ প্রকল্পের অধীনে সড়কটি মূল জমি থেকে ৩ ফুট উঁচু করা হয়েছে রোড। বেশ কয়েকটি কালভার্টের মাধ্যমে পানি চলাচলে যাতে বাধা না আসে এ ব্যবস্থাও করে দেওয়া হয়েছে।

চউকের প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস বলেন,
বাকলিয়া এক্সেস রোডে ৩৫ মি. পিসি ব্রিজ ও ১টি ১৪ মিটারের আরসিসি ব্রিজ করা হয়েছে। রয়েছে আর.সি.সি. বক্স কালভার্ট, ক্রস কালভার্ট ও ফুটপাত কাম ড্রেন এবং রিটেইনিং ওয়াল ও ডিভাইডার।
প্রকল্পটির কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে। সড়কটি নির্মাণের ফলে দক্ষিণ চট্টগ্রাম থেকে চকবাজার, আন্দরকিল্লা, জামালখান, আদালতপাড়ায় খুব সল্প সময়ে আসা যাওয়া করতে পারবে।
এছাড়া বাকলিয়া এক্সেস রোড নির্মাণের ফলে বহদ্দারহাট কর্ণফুলী সংযোগ সড়কের সুফল বাকলিয়াসহ সন্নিহিত অঞ্চলের মানুষ পাবে।

১৯৯৫ সালের মাস্টারপ্ল্যানের প্রস্তাবনা অনুসারে বাকলিয়া এক্সেস রোডের প্রকল্প নেয়া হয়েছিল। ২০১৮ সালের নভেম্বর মাসে সড়কটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়।
তখন ২০২০ সালের জুন মাসে রাস্তাটি যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু বাকলিয়া ডিসি রোডে মৌসুমী আবাসিক এলাকায় সিডিএ’র অনুমোদন নিয়ে গড়ে ওঠা ১০ তলা ভবনের কারণে নির্ধারিত সময়ে এটির কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি। সড়কটির দুই দিকের কাজ প্রায় সম্পন্ন হলেও মাঝখানে ওই ১০ তলা ভবনে রাস্তাটি আটকে যায়। সিডিএ’র অনুমোদিত ভবনটি নিয়ে বেকায়দায় পড়ে কর্তৃপক্ষ। অনুমোদিত ভবনটি ভাঙতে হলে সিডিএকে ভবনের ক্ষতিপূরণ বাবদ ১১ কোটি টাকা এবং ভবনটি সরাতে আরো অন্তত ৪ কোটি টাকা মিলে ১৫ কোটি টাকার চাপে পড়ে। বেকায়দায় পড়ে সিডিএ প্রকল্প ব্যয় ১৫ কোটি টাকা বাড়াতে মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন চায়। অবশ্য ওই সময় মন্ত্রণালয় বাড়তি ব্যয় অনুমোদন না দিয়ে বিকল্প বের করার পরামর্শ দেয়। একই সাথে মন্ত্রণালয় থেকে একটি কমিটিও গঠন করে দেয়া হয়। ওই কমিটির সুপারিশে গঠন করা হয় একটি টেকনিক্যাল কমিটি। টেকনিক্যাল কমিটি ভবনটি না ভেঙে সড়কের নকশা পরিবর্তনের পরামর্শ দেয়। নানা প্রক্রিয়া এবং আনুষ্ঠানিকতা শেষে একনেক-এর সভায় ভবনটি মাঝখানে রেখে রাস্তাটির অ্যালাইনমেন্ট পরিবর্তনের নকশা অনুমোদন করা হয়। এতে প্রকল্প ব্যয়ও প্রায় ১২ কোটি টাকা বৃদ্ধি পায়। একনেক বাড়তি ব্যয়ও অনুমোদন করে। ফলে অ্যালাইনমেন্ট পরিবর্তনের মাধ্যমে সড়কের বাধা কাটে।

বাকলিয়া এক্সেস রোডের প্রকল্প পরিচালক কাজী কাদের নেওয়াজ বলেন, সড়কটি আজ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হলে বাকলিয়া-শাহ আমানত সেতুর সঙ্গে যোগাযোগ আরও সহজ হবে।

চখ/ফখ

এই বিভাগের আরও খবর