chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

চট্টগ্রামে স্কুল ছাত্রী মাহির মৃত্যু নিয়ে ধ্রুমজাল!

চট্টগ্রাম নগরের পাহাড়তলীর এয়াকুব আলী কিন্ডারগাডেন্ট স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্রী সিদরাতুল মুনতাহা মাহীর (৯) মৃত্যু নিয়ে ধ্রুমজাল সৃষ্টি হয়েছে।

মাহীর মা শামীমা আকতারের অভিযোগ , তার মেয়ে দূর্ঘটনায় আক্রান্ত হলে চাচি বিষয়টি দামাচাপা দিতে গিয়ে বিনা চিকিৎসায় মেয়েকে মেরে ফেলে। অপরদিকে মেয়েটির চাচির পরিবারের দাবি, বাসার থাই গ্লাস ভেঙে মাহীর উপর পড়লে ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়। মারা যাওয়ার দীর্ঘ ২ মাস পর গত বৃহস্পতিবার কবর থেকে তার লাশ তুলে ময়নাতদন্ত করা হয়েছে।

গত (১১ সেপ্টেম্বর) সিদরাতুল মুনতাহা মাহীর মৃত্যু হয়। সে পাহাড়তলী থানার পশ্চিম নাসিরাবাদ আব্দুল লতিফ সড়ক এলাকার গনি সর্দার বাড়ির আব্দুল মালেকের মেয়ে।

মেয়ের মৃত্যুর ঘটনায় মাহীর মা বাদি হয়ে পাহাড়তলী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। এতে মর্জিনা আক্তার জুলি (২৮) ও রাশেদা বেগমকে (৩৫) আসামি করা হয়।

এদিকে ৯ নভেম্বর দাফনের দুইমাস পর কবর থেকে শিশু সিদরাতুল মুনতাহা মাহীর লাশ উত্তোলন করেছে পুলিশ। আদালতের নির্দেশে নগরীর পাহাড়তলী থানার পশ্চিম নাসিরাবাদ আব্দুল লতিফ সড়ক এলাকার কবরস্থান থেকে লাশটি উত্তোলন করা হয়। লাশ উত্তোলনের পর ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। তবে ময়নাতদন্তে রিপোর্টের ব্যাপারে কিছু জানা যায়নি।

পাহাড়তলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহির উদ্দিন বলেন, ‘শিশুটি মারা যাওয়ায় পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ ছিল না। তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত করা হয়নি। একমাস আগে শিশুটির মা থানায় অভিযোগ করেছেন তার মেয়ে চিকিৎসা অবহেলায় মারা গেছেন। তাই আদালতে শিশুটির লাশ উত্তোলনের জন্য আবেদন করা হয়। আদালতের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে লাশ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। রিপোর্ট হাতে পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।

এদিকে শামীমা আক্তারের দায়ের করা মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, ১১ অক্টোবর দুপুর পৌণে ১ টার দিকে তার ভাসুর আবুল বশরের ৪র্থ তলা বিল্ডিং এর ৩য় তলায় হাশেমের রুমের ভেতর রাশেদা বেগম এর মেয়ে মেহেরুন্নেছার (১১) সাথে খেলাধুলা করার একপর্যায়ে সিদরাতুল মুনতাহা মাহী পা পিচলে বাসার বটি দা উপরে অনাকাঙ্খিতভাবে পড়ে যায়। এতে মাহীর কানের নিচে লাগিয়া গুরুতর রক্তাক্ত কাটা জখম হয়। ওই ঘটনাকে আড়াল করার জন্য রাশেদা বেগম বটি দা দিয়ে বাসার ভেতরে থাকা কাঁচের গ্লাসের স্লাইটিং দরজা ভাঙ্গে ফেলে। এবং মর্জিনা আক্তার জুলি অজ্ঞাতনামা ২/৩ জনের সহায়তায় মাহীকে টেনে হেঁচড়ে ৩য় তলা বাসার নিচে নিয়ে যায়। তাকে টেনে হেঁচড়ে নিচে নামানোর কারনে স্লাইটিং দরজার গ্লাস ডাঙ্গা দিয়ে মাহির ঠোঁটের বাম পাশে, ডান হাতের তালুর পিছনে, বাম পায়ের বৃদ্ধা আঙ্গুলে লেগে গুরুতর জখম হয়। কিন্তু মর্জিনা আক্তার জুলি ও রাশেদা বেগম মাহীকে তাৎক্ষনিক কোন চিকিৎসার ব্যবস্থা না করে এবং মাহির পরিবারকে কোন প্রকার সংবাদ না দিয়ে ঘরের মেঝেতে থাকা রক্ত মুছতে থাকে। মাহির চিকিৎসা কাজে অবহেলা করে। তাদের এই অবহেলায় মাহির অতিরিক্ত রক্তক্ষরনের কারনে মৃত্যু হয়।

শামীমা আক্তার চট্টলার খবরকে বলেন, আমার মেয়েকে সঠিক সময়ে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গেলে সে বেঁচে যেত। আমি মেয়েকে পরিকল্পিত হত্যার বিচার চাই।

এদিকে এয়াকুব আলী কিন্ডারগাডেন্ট স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা মহি হত্যার বিচারের দাবিতে স্কুলের সামনে মানববন্ধন করে। তারা অবহেলার মাধ্যমে হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।

চখ/ফখ

এই বিভাগের আরও খবর