chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

কি আছে এ স্বপ্নের বঙ্গবন্ধু টানেলে?

কর্ণফুলীর বুক চিড়ে বাংলাদেশ নির্মাণ করেছে ভূগর্ভস্থ সুড়ঙ্গপথ। দক্ষিণ এশিয়ায় নদীর তলদেশে সুড়ঙ্গপথ বা টানেল নির্মাণের ইতিহাস এটাই প্রথম।

২০১৭ সালে টানেল প্রকল্পের প্রাথমিক কাজ শুরু হয়। ২০১৬ সালের ১৪ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং যৌথভাবে বঙ্গবন্ধু টানেলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রথম টানেল টিউব নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন।  ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর টানেলটির উদ্বোধন। ২৯ অক্টোরব যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হবে। নির্মাণ কাজ করেছে চীনা কোম্পানি ‘চায়না কমিউনিকেশন কনস্ট্রাকশন লিমিটেড’।

চট্টগ্রাম নগরীর পতেঙ্গায় নেভাল একাডেমির পাশ থেকে ১৮ থেকে ৩১ মিটার গভীরতায় নেমে যাওয়া এই টানেল কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ-পূর্বে আনোয়ারায় সিইউএফএল ও কাফকোর মাঝামাঝি এলাকা দিয়ে স্থলপথে বের হবে। ৩৫ ফুট প্রশস্ত ও ১৬ ফুট উচ্চতার টানেলে দুটি টিউব দিয়ে যানবাহন চলাচল করবে। টানেলের উত্তরে নগরীর দিকে আউটার রিং রোড, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, কাটগড় সড়ক, বিমানবন্দর সড়ক এবং পতেঙ্গা বিচ সড়ক দিয়ে টানেলে প্রবেশ করা যাবে। এই টানেল দিয়ে যানবাহন ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার বেগে চলবে।

টানেল নির্মাণে মোট ব্যয় হয়েছে ১০ হাজার ৬৮৯ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ও চীন সরকারের যৌথ অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হয়েছে।  প্রকল্প ব্যয়ের মধ্যে চীনের এক্সিম ব্যাংক দুই শতাংশ হারে সুদে ৫ হাজার ৯১৩ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে। বাকি অর্থায়ন করেছে বাংলাদেশ সরকার।

৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই টানেলে প্রতিটি টিউব বা সুড়ঙ্গের দৈর্ঘ্য ২ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার। একটির সঙ্গে অপর টিউবের দূরত্ব ১২ মিটারের মত। প্রতিটি টিউবে দুটি করে মোট চারটি লেইন তৈরি করা হয়েছে। টানেলের পূর্ব ও পশ্চিম ও প্রান্তে থাকছে ৫ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক। এ ছাড়া ৭২৭ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি ওভারব্রিজ রয়েছে আনোয়ারা প্রান্তে।
এ টানেলটি তিন থেকে সাড়ে ৩ মিনিট সময়ের মধ্যে পার হয়ে যেতে পারবে। টানেলে  ১০০ সিসি ক্যামেরা লাগানো আছে।
প্রকল্প পরিচালক হারুনুর রশীদ জানিয়েছেন, বঙ্গবন্ধু টানেলের  লাইফটাইমের গ্যারান্টি  ১০০ বছর।
ভূমিকম্প ও জলোচ্ছ্বাসে টানেলে কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়বে কিনা জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক বলেন, দুটো ফ্লাডগেট আছে, গত সাইক্লোনে ট্রায়াল করে দেখা হয়েছে। পর্যালোচনা করে দেখা হয়েছে জলোচ্ছ্বাসে কোন সমস্যা হবে না। তাছাড়া টানেলটি নদীর পৃষ্ট থেকে ১৮ হতে ৩১ মিটার গভীরে স্থাপন করা। এখানে ভূমিকম্পের প্রভাব পড়বে না। ভূমিকম্পে টানেল নিরাপদ থাকবে। কর্ণফুলী নদীর তলদেশে ১৮ মিটার থেকে ৩১ মিটার নিচ দিয়ে এ টানেল গেছে।

চখ/ফখ

এই বিভাগের আরও খবর