চট্টগ্রামে টানেলের দু’ প্রান্তে ঘটবে সুষম অর্থনৈতিক উন্নয়ন
অনেক জল্পনা কল্পনার পর নদীর তলদেশে নির্মিত বঙ্গবন্ধু টানেল এখন মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে গেছে কর্ণফুলী নদীর বুক চিরে। স্বপ্ন এখন আর স্বপ্ন নয়, বাস্তবে রূপ নিয়েছে।
আমদানি-রফতানি বাণিজ্য, অভ্যন্তরীণ পণ্য পরিবহন এবং মানুষের যাতায়াত দ্রুত করতে সমৃদ্ধ যোগাযোগ ব্যবস্থার কোনো বিকল্প নেই। কর্ণফুলী টানেল দেশের অর্থনীতির জন্য সেই উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার দ্বার খুলে দিচ্ছে।
চট্টগ্রাম নগর ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা, কক্সবাজার ও বান্দরবান জেলাসহ পুরো দেশের অর্থনীতিকে গতিশীল করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বঙ্গবন্ধু টানেল। এই টানেল নির্মাণের কারণে দেশের অর্থনীতির সম্ভাবনার দুয়ার খুলছে।
এই টানেলের কল্যাণে সম্ভাবনার দুয়ার খুলছে চট্টগ্রামে দক্ষিণাঞ্চলে। উদ্যোক্তারা এ অঞ্চলে বিনিয়োগের ডালা খুলে বসছেন। নেওয়া হচ্ছে অসংখ্য মেগা প্রকল্প। আনোয়ারা, পটিয়া, চন্দনাইশ, বাঁশখালী, চকরিয়া, মহেশখালী ও কক্সবাজারে চলছে বিশাল কর্মযজ্ঞ। দক্ষিণ চট্টগ্রামের জেলা ও উপজেলাগুলোতে অর্থনীতির পুনর্জাগরণ ঘটাবে এই টানেল। অবকাঠামো, কৃষি ও স্বাস্থ্য খাতের ব্যাপক উন্নয়ন ঘটবে। দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর চট্টগ্রাম বন্দরের গতিশীলতা বৃদ্ধি পাবে। কর্মসংস্থান হবে বেকার যুবকের। পিছিয়ে পড়া মানুষগুলোর জীবনে পরিবর্তন আসবে।
দক্ষিণ চট্টগ্রামে আবাসন শিল্প, পর্যটন শিল্প, মৎস্য, লবনসহ নানা শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে টানেলটি কেন্দ্র করে। অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, কর্ণফুলী নদীতে টানেল নির্মানের সঙ্গে বদলে যাবে ওই এলাকার অবকাঠামো, কৃষি, স্বাস্থ্য এবং যোগাযোগ প্রযুক্তির ধারা। একই সঙ্গে এই টানেল ভারত, মিয়ানমার, থাইল্যান্ড ও চীনের মধ্যে যোগাযোগ, বাণিজ্য বৃদ্ধি পাবে।
টানেলটির কল্যাণে ওইসব এলাকায় ব্যাপক আকারে শিল্পায়ন হবে, লাখ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হবে। মানুষের আয় বাড়বে জীবনে পরিবর্তন আসবে। ইতোমধ্যে এই টানেল ও চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইন ঘিরে উদ্যোক্তারা নানা ধরনের ব্যবসা-বাণিজ্য শুরু করে দিয়েছেন। মহেশখালীর মাতারবাড়িতে গভীর সমুদ্র বন্দর হচ্ছে, সামনে আরও নদী-বন্দর, সমুদ্রবন্দর চালু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরেরও প্রসার ঘটছে। আনোয়ারায় চিনের ইকোনমিক জোনও হচ্ছে। সব মিলিয়ে ওই সব এলাকায় একটা অর্থনৈতিক অগ্রগতির বিস্তার ঘটবে।
টানেলের কারণে আনোয়ারা, পটিয়া, বাঁশথালীতে জমির বেচাকেনা চলছে ব্যাপক হারে। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে বড় বড় শিল্প উদ্যোক্তারা কারখানা গড়তে জমির জন্য ঘুরছেন ওই সব এলাকায়। এতে তাদের জমির মূল্য বেড়ে গেছে কয়েকগুণ। কৃষি জমিগুলো এখন হয়ে উঠেছে অনেক মূল্যবান। এলাকায় বিনিয়োগের এখনই শ্রেষ্ঠ সময়।
লেখক : মোহাম্মদ ইব্রাহিম মুরাদ, নির্বাহী সম্পাদক চট্টলার খবর।
চখ/ফখ