চট্টগ্রামে পাহাড় খুঁড়তেই বেরিয়ে এলো ১২০০ বছরের প্রত্নতাত্ত্বিক নির্দশন
চট্টগ্রামে পাহাড় খুঁড়তেই বেরিয়ে এলো প্রায় ১২০০ বছরের প্রত্নতাত্ত্বিক নির্দশন।প্রত্নতাত্ত্বিক খননে আসতে শুরু করেছে সফলতা, বেরিয়ে আসছে ধ্বংসপ্রাপ্ত পুরাকীর্তির নিদর্শন।
এই নিদর্শন অনুসন্ধানে গত ১৬ সেপ্টেম্বর,আনোয়ারা কর্ণফুলীর বড়উঠানে সম্ভাব্য স্থানে প্রত্নতাত্ত্বিক খনন কাজ শুরু হয়।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মহাস্থানগড় থেকে ডেকেও আনা অভিজ্ঞ শ্রমিকরা মাটি খুঁড়ছিলেন। এতে প্রথমে বেরিয়ে আসে বিশালাকৃতির ইটের দেয়াল। ফুটে উঠছে মেঝের অবয়ব। স্পষ্ট ধ্বংসপ্রাপ্ত ভবনের কাঠামো। জনবসতির মাঝখানে জঙ্গলে ঢাকা পাহাড়টি খননেই জনসম্মুখে ওঠে আসে ১২০০ বছর আগের চাপা পড়া স্থাপত্যের নিদর্শন ও ইতিহাস।
এদিকে স্থানীয়দের কাছে দেয়াঙ পাহাড়টি ছিল অন্য পাঁচটি পাহাড়ের মতোই। এতো গুরুত্বপূর্ণ প্রাচীন ইতিহাস লুকিয়ে ছিল জানা ছিল না। তবে তারা শুনে আসছেন, এখানে রাজার বাড়ি ছিল। বিজ্ঞান চর্চার কেন্দ্র ছিল ও প্রাচিন পন্ডিত_বিহার_বিশ্ববিদ্যালয়ের ছিল বলে ধারণা । তারা এই স্থাপত্যের নিদর্শন খনন কাজ দেখে খুশি হয়েছেন।
তবে ধ্বংসপ্রাপ্ত এই পুরাকীর্তি অনুসন্ধান এতোটা সহজ কাজ ছিল না,পন্ডিত বিহার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রত্যয়ে পথচলার পথ পরিক্রমায় বর্ণিত স্থানে প্রত্নতাত্ত্বিক খননের প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব উপলদ্ধি করে পন্ডিত বিহার বিশ্ববিদ্যালয় পুনঃপ্রতিষ্ঠার স্বপ্নদ্রষ্টা ‘জ্ঞানতাপস’ ড. জিনবোধি ভিক্ষু প্রধানমন্ত্রী বরাবরে পত্র প্রেরণের প্রেক্ষিতে ২০১৬ সালে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে প্রত্নতাত্ত্বিক অধিদপ্তরের তত্বাবধানে সর্বপ্রথম সরকারিভাবে খননের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল।
জ্ঞানতাপস’ ড. জিনবোধি ভিক্ষু বলেন, নানান জটিলতার পর সেটি গত ১৬ সেপ্টেম্বর আলোর মুখ দেখে।এক্ষেত্রে যারা অবদান রেখেছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা।প্রাচীন এই ধ্বংসাবশেষ পুনরুদ্ধারের প্রয়োজনীয়তা,এ সম্বন্ধে পর্যাপ্ত জ্ঞান ও ধারণা সামগ্রিক ভাবে মানুষের কাছে পৌছে দিতে পটিয়ার কৃতি সন্তান প্রয়াত নাট্যকার আহমেদ কবির নানা গবেষণা করে প্রাপ্ত বাস্তব তথ্যের আলোকে রচনা করেন নাটক “পন্ডিত বিহার বিশ্ববিদ্যালয়”, আর সেটি মঞ্চস্থ করে সৃষ্টি হউক সচেতন মানুষ এই স্লোগানে কাজ করা নাট্যসংগঠন “নাট্যাধার”।এই নাটকটি শুধু মাত্র চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমি নয় বর্তমান শিক্ষামন্ত্রী ড.দিপু মনি, এম পি মহোদয়ের শহর চাঁদপুরেও মঞ্চায়ন করে পন্ডিত বিহার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় জনমত গড়ে তুলে।আমার কাছে গর্বের বিষয় আমি নিজেও সেই নাটকে অনেকগুলো চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগের পাশাপাশি কয়েকবার প্রস্তাবিত পন্ডিত বিহার বিশ্ববিদ্যালয়ের বরাদ্দকৃত স্থান সহ খনন শুরু হওয়া জায়গা পরিদর্শন করার। এ পুরাকীর্তি পুন:রুদ্ধার করা হলে আনোয়ারা উপজেলাসহ গৌরবময় চট্টগ্রামের সুনাম, সুখ্যাতি বাংলাদেশসহ দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় আরেকটি মাইলফলক ঘটনার জন্ম দেবে।
তিনি আরো বলেন, এ প্রাচীন পন্ডিত বিহারের ধ্বংসপ্রাপ্ত পুরাকীর্তি পুন:রুদ্ধার হলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার প্রতিশ্রতি অনুসারে আন্তর্জাতিক পন্ডিত বিহার বিশ্ববিদ্যালয়টি নবরূপে প্রতিষ্ঠিত হলে আন্তর্জাতির বৌদ্ধ বিশ্বের সাথে অতীতের ন্যায় বাংলাদেশের সৌভ্রাতৃত্বের সেতুবন্ধন আরো সুদৃঢ় হবে এবং শিক্ষা-সংস্কৃতি, কৃষ্টি, সভ্যতা, শিল্প, ভাস্কর্যে সমৃদ্ধ হবে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস।
চখ/জুইম