chattolarkhabor
চট্টলার খবর - খবরের সাথে সারাক্ষণ

পশ্চিমবঙ্গে বাড়ছে ডেঙ্গু সংক্রমণ, সব জেলায় সতর্কতা

কলকাতাসহ পুরো পশ্চিমবঙ্গেই ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। একই সঙ্গে বাড়ছে মৃত্যুও। সবচেয়ে বেশি উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে গ্রামাঞ্চলে। ইতোমধ্যে কয়েকটি জেলার বেশ কিছু এলাকাকে ডেঙ্গুর ‘হটস্পট’ ঘোষণা করেছে প্রশাসন। ডেঙ্গু থাবা বসিয়েছে উত্তরেও। মালদহেও ডেঙ্গুর সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী।

মশাবাহিত এই রোগের সংক্রমণ কমিয়ে আনতে তাই কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে প্রশাসন। বেশির ভাগ নতুন করে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। যদিও স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রশাসনের গাফিলতির কারণেই ডেঙ্গুর প্রভাব এত বাড়ছে।

শহরের হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর ভিড় বাড়ছে। জেলা হাসপাতালেও একই চিত্র লক্ষ্য করা যাচ্ছে। পরিস্থিতি আরও জটিল করেছে, জেলার হাসপাতালগুলোতে আসা রোগীকে বিভিন্ন শহরে ‘রেফার’ করার প্রবণতা। অনেক সময়ই জেলার হাসপাতাল দায় নিতে চাইছে না। তারা রোগীদের পাঠিয়ে দিচ্ছেন শহরে। কিছু সময় তা এতটাই দেরিতে হচ্ছে, যে শহরে এসে ভর্তি হতে হতে রোগীর মৃত্যু হচ্ছে।

এই পরিস্থিতিতে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য ভবন। তাদের সঙ্গে অনলাইন মাধ্যমে যোগাযোগ করে পরামর্শ নিতে পারবেন জেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা। জেলাতেই যেন ডেঙ্গুর চিকিৎসা করানো যায়, রোগীকে শহরে পাঠানোর প্রবণতা যেন কমে, তা নিশ্চিত করতে চাইছেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা

জেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা ডেঙ্গু সংক্রান্ত যে কোনো প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন এবং তার পরামর্শে ‘রেফার’ করবেন। কোনো কোনো জেলার সঙ্গে একাধিক বিশেষজ্ঞকেও যুক্ত করা হতে পারে।

জেলা হাসপাতালগুলোর ‘রেফার’-এর প্রবণতার পাশাপাশি প্রশাসনের উদ্বেগ বাড়িয়েছে গ্রামাঞ্চলে ডেঙ্গুর প্রসার। দফায় দফায় বৃষ্টি হচ্ছে। ফলে রাস্তায় পানি জমে থাকছে। সেখান থেকে এডিস মশার জন্ম হচ্ছে। সে কারণে গ্রামেও ছড়িয়ে পড়ছে ডেঙ্গু। সেখানে চিকিৎসা পরিষেবার অভাবের কারণে পরিস্থিতি আরও জটিল হচ্ছে। বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা।

হুগলি জেলার গ্রামাঞ্চলে ডেঙ্গুর প্রকোপ এতটাই বেড়েছে যে, সেখানকার বলাগড়, পাণ্ডুয়া, চণ্ডীতলাকে ‘রেড জোন’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর আগে নদিয়া, মুর্শিদাবাদ, উত্তর ২৪ পরগনায় আটটি ‘হটস্পট’ চিহ্নিত করা হয়। মুর্শিদাবাদের সুতি, লালগোলা, ভগবানগোলা ব্লক, নদিয়ার রানাঘাট, হরিণঘাটা ব্লক এবং উত্তর ২৪ পরগনার দক্ষিণ দমদম, বনগাঁ এবং বিধাননগরে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা তুলনামূলক অনেক বেশি। এই তিন জেলার পর চিন্তা বাড়িয়েছে উত্তরের জেলা মালদহ।

জানুয়ারি মাস থেকে এখন পর্যন্ত ওই জেলায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় এক হাজার ৩২ জন। গত এক মাসে মালদহে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ১৮৭। নজরদারি বাড়িয়েছে প্রশাসন। যদিও বাসিন্দাদের অভিযোগ, যতটা প্রয়োজন আদৌ ততটা তৎপর নয় প্রশাসন। বাড়ি বাড়ি ঘুরে সতর্কতার কাজেও রয়েছে ঢিলেমি। সে কারণেই ছড়াচ্ছে ডেঙ্গু।

জেলার পাশাপাশি কলকাতাতেও ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় আরও তৎপর পৌরসভা। শহরে ডেঙ্গু সংক্রমণ বাড়ায় কলকাতা পৌরসভার সব স্বাস্থ্যকেন্দ্র রাত পর্যন্ত খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শনিবার এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। সপ্তাহে তিন দিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত খোলা থাকবে পৌরসভার স্বাস্থ্যকেন্দ্র। আর সপ্তাহে দুদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত খোলা রাখা হবে।

মআ/চখ

এই বিভাগের আরও খবর